আমার আত্মসম্মান মর্যাদা বলে তার কাছে কিছুই নাই। সে শুধু নিজেকে ছাড়া কিছুই বোঝে না। ও হ্যা বোঝে কিন্তু সেটা বলতে পারছি না এবং বলার মতোও না।
সকালে আমি না খেয়ে অফিসে চলে আসছি, তখনই বোঝা উচিত ছিলো যে অফিসে কেমন চাপ যাচ্ছে। আর চাপ যদি নাই যায় তবুও আমি পরের চাকরী করি সময় মতো তো হাজির হতেই হবে। বস যেখানে যখন যে অবস্থাতে আমাকে পাঠাক আমি তো যেতে বাধ্য। আমি খেয়েছি কি না খেয়েছি সেটা তো বসের দেখার বিষয় না। রক্ত পানি করে উপার্জন করে যাকে দিচ্ছি সেই বউই বোঝে না। বউ যেখানে দুপুরে ফোন করে জানতে চাইবে দুপুর হয়ে গেছে এখনো সকাললে নাস্তা করেছিলাম কিনা, দুপুরের খাবার খেয়েছি কিনা তাই নয় কি ? নাকি আমি ভূল বললাম ?
অথচ ফোন করেই জানতে চায় কোথায় আছো ??
উত্তর রাইরে মিটিং এ পাঠিয়েছে সেখানে ।
শুরু হয়ে যায় আজব গজব বাক্য । মনে হয় তখনই যদি মৃত্যু হয়ে যেতো হয়তো শান্তি পেতাম। মানুষের মাঝে না পারি কথার উত্তর দিতে না পারি কষ্ট গুলোকে হাসির মাঝে উড়িয়ে দিতে। চেহারায় একটা ফিকে ভাব থেকেই যায়। তারপর থেকে নিজের কাছে মনে হয়। সবাই মনে হয় আমাকে নিয়ে কানাঘসা করছে। আমার সম্পর্কে কি বিরুপ ভাবছে ইত্যাদি।
ভালোবেসে যাতে জান্নাত নাম দিয়েছিলাম সেই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় কষ্ট ও জাহান্নামের নাম। ওকে বোঝানোর অনেক চেষ্টা করেছি । গায়ে হাত তুলেছি, বিছানা আলাদা করে দিয়েছি, কোন প্রকার কথা না বলে চুপচাপ থেকেও দেখেছি। এমনকি কোন ফল হয়নি।
আজকের কথাই বলি দুুপুরের খাওয়া শেষ করে অফিসে এসেছি । অফিসে বেশ কয়েক জন মানুষও আছে। এমন সময় ফোন প্রথমবার রিসিভ করলাম না। মিনিট পার হতে না হতে আবার ফোন।
বুঝতে পারলাম রিসিভ না করা পর্যন্ত দিতেই থাকবে। আমি যে অফিসে রিজিকের সন্ধানে এসেছি এখানে কর্মব্যস্ততা থাকতে পারে সেই জ্ঞান, এই মানবীর ভিতর অনুপস্থিত। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই ফোন রিসিভ করলাম। আমি হ্যালো বলার সাথে সাথে ওপাশ থেকে ভেসে এলো এমন কথা “ আমি মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছি। আমার ঘরের ভিতর ভালো লাগছে না। যেদিকে দুচোখ যায় সেদিকে চলে যাবো।
আমি হেসে হেসে উত্তর দিলাম- মনে হয় তুমি পাগল হয়ে গেছো , এখন ফোন রাখো। মানুষের সামনে এর বেশি হয়তো আমার বলার কিছুই ছিলো না।
আমার উত্থান ও উন্নতির পথে একমাত্র বাধা এই মানবী। মানুষের স্ত্রী হয় উৎসাহ ও অনুপ্রেরনার দৃষ্টান্ত, আর আমার স্ত্রী আমাকে কিভাবে ধ্বংস করবে সেই ফন্দিই সারাদিন তার মাথায় ঘুরপাক খায়।
এই ব্যবহার একদিন, একমাস বা একবছরের নয়। প্রতি নিয়ত সপ্তাহকে সপ্তাহ আমি যেন পাগল হয়ে যাচ্ছি। মানসিক যন্ত্রনা ও কষ্টর এক মহাসাগর আমার ঘরে।