শুনেছি বা দেখেছি পুরুষ বা নারী বিবাহের পর তাদের জীবনে শুধু সঙ্গী বা সঙ্গীনা নয় । অনুপ্রেরনা ও উৎসাহের একটা বড় জায়গা হয়। কিন্তু আমার বেলায় পুরোটাই উল্টো।
বিয়ের পর থেকে আমার জীবনে উন্নতির সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে বললে ভূল হবে। বন্ধ করে রাখা হয়েছে। সে আমার স্ত্রী নয় তো যেন আমার জীবনধ্বংস কারীনি।শুনতে খারাপ শোনা গেলেও এটাই সত্য।
আমার ইনকাম আমাকে খাওয়াতে কষ্ট হয়। আমার আয়ের ১০ টাকা থেকে ২ টাকা আমার বাবা মাকে দিলে ওর কলিজা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তাও প্রতিদিন বা প্রতিমাসে নয়, দেখা যায় ছয়মাস বা একবছরে একবার । যেমন আব্বা মারা যাবার পর পেনশনের টাকা পেতে দেরি হচ্ছে দেখে আম্মাকে ২০০০ টাকা দিয়েছিলাম। তার জন্য কতো কি শুনতে হলো। অথচ ঈদের দুই মাসে আগে থেকে প্লান করতে থাকে আমার ছোট ভাইকে এবার ১০০০ টাকা দিতে হবে। ও বড় হয়ে গেছে। এখন ৫০০ টাকা দিলে মানসম্মানে লাগে।
আমি কি কাজ করি , কখন বাসায় ফিরি সব কিছু জান্নাতের জানা। তারপরও প্রতিদিন রাত ৯টা বাজতেই কখন বাসায় আসবা। এখনো অফিসে কি করো। সপ্তাহে দুই একদিন একটু আগে আগে আসা যায় না। এই একই কথা প্রতিদিন শুনতে হয়।
আমি বুঝিয়েছি কয়েকশত বার যে, আমি তো পরের চাকরী করি। তারা ছুটি না দিলে কিভাবে আসবো। তুমি তো জানো।
আমি প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯ টায় অফিসে আসি। দুপুর ২ টা বা আড়াই টার দিকে বাসায় লাঞ্চ করতে যাই। কোন কোন দিন যেমন সপ্তাহে ১ দিন বা মাসে ৪/৫ দিন হঠাৎ জরুরী মিটিং বা কাজ থাকলে একবারে রাতে বাসায় ফিরি। কিন্তু প্রতিদিনের রুটিন হলো ২ টায় লাঞ্চ করতে যাওয়া, লাঞ্চ করে ৫ টা বা সাড়ে ৫টার মধ্যে আবার অফিসে ফিরে আসা। তারপর যতক্ষন বস অফিসে থাকে ততক্ষন অফিসে থাকতে হয় রাত ১০টা বা ১১ টা।
সকালে ৯ টা বা সাড়ে ৯ টার দিকে বাসা থেকে বের হলে অফিসে আসতে আসতে ১০ টা বেজে যায়। দুপুর ১২টার দিকে জান্নাত ফোন করবে। প্রতিদিন একই বুলি আমার ভালো লাগেছে না। মনটা খুব খারাপ লাগেছে। রাস্তা দিয়ে কতো মানুষ যাচ্ছে আমার ঘরের মধ্যে বন্দি থাকতে মন চাচ্ছে না। তুমি আমাকে একটুই সুখ দিতে পারলে না। সেই একমাস আগে একবার ঘুরতে বের হয়েছি আর এই একমাস ধরে ঘরের মধ্যে পচে মরছি। আরো কতো কি যা ভাষায় বলার মতো না।
তারপর দুপুরে লাঞ্চ সেরে অফিসে আসার পর ৬টা সাড়ে ৬ টার দিকে জান্নাত আবার ফোন দিবে। আমার ভালো লাগেছে না। মনটা খুব খারাপ লাগেছে। রাস্তা দিয়ে কতো মানুষ যাচ্ছে আমার ঘরের মধ্যে বন্দি থাকতে মন চাচ্ছে না। তুমি আমাকে একটুই সুখ দিতে পারলে না। সেই একমাস আগে একবার ঘুরতে বের হয়েছি আর এই একমাস ধরে ঘরের মধ্যে পচে মরছি। আরো কতো কি যা ভাষায় বলার মতো না।
আবার রাত ৯ টা থেকে সাড়ে ৯ টা বাজলেই একই সুর-আমার ভালো লাগেছে না। মনটা খুব খারাপ লাগেছে। রাস্তা দিয়ে কতো মানুষ যাচ্ছে আমার ঘরের মধ্যে বন্দি থাকতে মন চাচ্ছে না। তুমি আমাকে একটুই সুখ দিতে পারলে না। সেই একমাস আগে একবার ঘুরতে বের হয়েছি আর এই একমাস ধরে ঘরের মধ্যে পচে মরছি। আরো কতো কি যা ভাষায় বলার মতো না।
আমার সামনে মানুষ বসা থাকে তাই কোন উত্তর দিতে পারিনা। কিন্তু কেমন নিজের অজান্তেই চোখ থেকে জল গড়িয়ে আসতে চায়। এ কি যন্ত্রনা। এটা মানুষ নাকি ..............................অন্য কিছু।
ঘরে ডুকলেই শুরু করবে টাকা পয়সা নাই। কিভাবে সংসার চলবে ? ভবিষ্যত কি ? ইত্যাদি
আবার আমি চাকরীর পাশাপাশি বাইরে কিছু করবো তারও উপায় নাই। একটা চাহিদা পুরন করলে আরেকটা এনে হাজির করে। ঘ্যান ঘ্যান করতেই থাকে। আমি ভালোবেসে ওকে জান্নাত নাম দিয়েছিলাম কিন্তু এই পাঁচ বছরে ওর এবং ওর পরিবারের অত্যাচারে আমি এতোটাই অতিষ্ট যে, জান্নাতকে ছুয়ে দেখতেও আমার ঘৃনা লাগে। ওর কাছে গেলে আমার কোন অনুভূতি জাগে না। মন থেকে ভালোবাসার কোন সায় পাই না। যা করতে হয় সংসারের শান্তির জন্য নিজের উপর জোর করে করতে হয়।
জান্নাতের ডায়াবেটিস আছে তাই যে কোন কারনেই শরীর খারাপ হতেই পারে। কোন রকম একটু খারাপ লাগলেই শুরু হয়ে যাবে- আমি তো মানুষ না । আমার কোন দাম নাই । গাধার মতো খাটতে খাটতে শেষ হয়ে যাচ্ছি। একটু ডাক্তারের কাছে নেয়ার ও প্রয়োজন মনে করোনা। আমাকে তুমি আসলে ভালোবাসোনা তোমার মনের মধ্যে অন্য কেউ। ইত্যাদি ইত্যাদি যা শুনলে কোন সুস্থ মানুষ স্থির থাকতে পারে না। কতোরাত চুপচাপ বিছানা ছেড়ে উঠে এসে পাশের ঘরে বসে বসে মশার কামড় খেয়েছি ,তবুও জান্নাতের পাশে ঘুমাতে যেতে ইচ্ছা করে না। সপ্তাহে দু একবার আরামের বিছানা ছেড়ে পাশের ঘরে ফ্লোরে এসে শুয়ে মাশার কামড়ে রাত কাটিয়েছি। সকালে উঠে না খেয়ে অফিসে চলে এসেছি।
এটা কি জীবন ?
আমার বাচ্চার মতো এমন শান্ত বাচ্চা আমার দেখা দ্বিতীয়টা নেই। তারপরও সপ্তাহে দুই একবার জান্নাতের কাছ থেকে আমার শুনতে হয় - তোমার মেয়ে চরম বেয়াদপ হয়েছে। আমাকে প্রচন্ড জ্বায়ায় মন চাচ্ছে গলাটিপে মেরে ফেলি। জান্নাত যখন এই ধরনের হাজার কথা বলে তখন আমার বুকের ভেতরটা কেপে ওঠে। কি যে করবো ভেবে পাইনা। কোন উত্তর দেবার ভাষা থাকে না। যে উত্তর দেয়া দরকার তা দিতে পারছি না। কারন মেয়েটা ছোট, মাত্র ২ বছর।
No comments:
Post a Comment