প্রতিদিনের একটা ঘটনা। সকালে মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার আগে একবার মায়ের হাতে মাইর খেতে ও গালি গালাজ শুনতে হবে। আর একবার সন্ধ্যার সময় পড়তে বসলে। মাত্র ৭ বছরের শিশু মেয়ে সে। সকালের কারন টা হলো মেয়েটা ঘুম থেকে দেরি করে ওঠে। তাই স্কুলে যেতে স্বাভাবিক দেরি হবে।
আমাদের মেয়েটা যখন কাজেকর্মে খুব স্লো তাই মেয়েকে আগে থেকে রেডি করাটা বু্দ্ধিমানের কাজ। আমি সকালে ৮টার দিকে মেয়েকে ডাকলে অর্নি আমাকে বলে ও ঘুম ভাঙ্গাচেছা কেন ? এখনো অনেক দেরী।
অর্নি মেয়েকে ঘুম থেকে ডাকা শুরু করবে। সকাল ৯টা থেকে। মেয়ে ঘুম থেকে উঠতে উঠতে সাড়ে নয়টা বেজে যায়। তারপর শুরু হয়ে যায় চিল্লাচিল্লি, গালিগালাজ। প্রতিদিন এই নিস্পাপ শিশুটিকে কাদতে কাদতে স্কুলে যেতে হয়ে। আমি অর্নিকে হাজার বার বুঝিয়েছি যে, মেয়েটির সাথে প্রতিনিয়ত এমন ব্যবহার করে না। ওর আমরা ছাড়া কে আছে ? কে শোনে কার কথা উল্টো আমাকে বলে তুমি মেয়েটা নষ্ট করে ফেলছো।
আমি আবার বলি শোনো তুমি ওর সাথে যেমন ব্যবহার করবা ও সেই রকম ব্যবহার শিখবে। তুমি মেয়ের সাথে যতটা নমনীয় ভালো ব্যবহার করবা ও তোমার আমার সাথেও তেমন ব্যবহার করবে কারন এখন ওর শিখার বয়স, অনুকরন করার বয়স।
মনে হয় আমার কথাগুলো ওর কানের পাশ থেকে গেছে, ভিতরে ঢোকেনি। পরের দিন সেই একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি। মেয়েটি অশ্রুভেজা চোখে আমার কাছে এসে বলছে, বাবা দেখেছো মা আমার সাথে প্রতিদিন কেমন করে ?
আমি বললাম বাবা তুমি আল্লাহকে বলো যে, আল্লাহ যেন ওকে বুঝ দান করে। আর এটা ওর বংশীয় স্বভাব, প্রতিদিন নিয়ম করে তোমাকে আমাকে নিযার্তন না করলে ওর পেটের ভাত হজম হয়না।
আমার ভালো কথা অর্নির কানে না গেলেও এই কথা ঠিকই বাতাসের আগেই পৌছে গেল তার কর্নগুহরে। ছুটে এসে অর্নি আমাকে বলছে , তোর মতো স্বামী আমার লাগবে না, তু্ই মরতে পারিস না। জানোয়ারের বাচ্চা।
আমি বললাম এই রকম রিএক্ট করার মতো কথা আমি তোমাকে বলিনি।
অর্নির উত্তর দিল তোকে তালাক দিলাম, তুই আমার কেউ না। এক তালাক, দুই তালাক, তিন......।
আমি তখন কাপড় আয়রন করছিলাম, রাগে ক্ষোভে ওকে ভয় দেখিয়ে বললাম, এই টা মুখে ঠেসে ধরলে মুখের ব্যবহার ঠিক হয়ে যাবে।
তারপর আমি আমার ছোট মামা শ্বশুরকে ফোন করে বললাম যে, আপনার ভাগ্নির ব্যবহারতো দিন কে দিন খারাপ হতে যাচ্ছে ওকে নিয়ে ঘর সংসার করা তো সম্ভব হচ্ছে না।
মামা বললো আমি সামনের সপ্তাহে ঢাকা আসছি তোমাদের ওখানে সেই পর্যন্ত একটু কষ্ট করো। মামা মনে হয় পরের দিন অর্নিকে ফোন করে বলেছে।
আমি বাসায় যাবার সাথে সাথে শুধু নালিশ করতে পারে, আর কোন মুরদ নাই। আমি দীর্ঘ কয়েক বছর ওর কথার তেমন কোন উত্তর দেই না। কারন এই ৮ টা বছর ওকে অনেক বুঝিয়েছি, বকেছি, গায়ে হাত তুলেছি, বিছানা আলাদা করে দিয়েছি। কোন কিছুতে কোন কাজ হয় না।
অর্নি এবং অর্নির পরিবার পরিজন আমাকে নিয়ে সমালোচনা করতে পারবে। যেমন খুশি তেমন গালিগালাজ করতে পারবে। কিন্ত অর্নি সম্পর্কে তাদের কিছু বললে , তাদের অগোচরে উত্তর জামাই ভালো না , নালিশ করে।