বহুদিন ধরে লেখা বন্ধ করে দিয়েছি কারন আর লিখতে মন চায় না। তারপর কিছু ঘটনা লিখে রাখছি কালের সাক্ষী করে। আমার এই সন্তান যেন একদিন বুঝতে পারে ওপর মুখোর দিকে চেয়ে আমি কতোটা কষ্ট, যন্ত্র্রনা সহ্য করেছি।
আজ ৪ নভেম্বর ২০২৫।
এক রোযার সময় ঢাকার বন্ধুদের ইফতার পার্টি দাওয়াতে আমি উপস্থিত হতে গিয়েছি। ইফতারের সামান্য আগে অর্নি আমাকে ফোন দেয়। ইপতারের আগে তাই আমি খুব কৌতুহলী হয়েই ফোন রিসিভ করি। ফোন রিসিভ করা মাত্র অর্নি গালিগালাজ শুরু। অতো মানুষের মাঝে আমি কোনো উত্তর দিতে না পেরে মানরক্ষার্তে, আচ্ছা, ঠিক আছে, পরে কলেজ দিচ্ছি ইত্যাদিবলে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করছিলাম, আর ফোনের ওপাশ থেকে একের পর এক গালি আসতে লাগলো। এ ঘটনার পর একজন মানুষের অবস্থা কি হতে পারে বুঝতে পারেন। বুঝতে পারেন এই নির্্যাতিত মানুষটির কষ্ট।
আমার অপরাধ ছিলো, আমি আমার মরা বাপের নামে ২০০০/- টাকা ইফতার বাবদ দান করেছি।
তারপর আমি আমার শ্বশুরকে ফোন দিয়ে সব ঘটনা বলি, রাগে, দুঃখে এটাও বলি যে, যে মেয়ে তার স্বামীর মৃতু বাবা সম্পর্কে এমন কথা বলতে পারে সে জারজ সন্তান ছাড়া মানুষের সন্তান হতেই পারে না।
আমার শ্বশুর এবং শাশুড়ী তাদের মেয়েকে শাসন করা বা বুঝানোর ধারে কাছে না গিয়ে উল্টো মেয়েকে নালিশ করেছে যে জামাই তোর নামে আজেবাজে কথা বলেছে।
এরপর ঈদের সময় অর্নিকে হাতে ধরেও বাড়ি নেয়া গেল না। বলে রাখা ভালো যে আমি বাড়ি যাই শুধু দুই ঈদে। তাও বন্ধ। আশায় ছিলাম কুরবানিতে বাড়ি যাবো। কিন্তু সে সময় ঘটালো আরো নিকৃষ্টতর ঘটনা।
আমার আম্মা হজ্জে যাবে তাই ভাবলাম আমার সামান্য আয় থেকে যদি আম্মাকে একটু সহযোগিতা করি তাহলে দোয়া পাবো, তাছাড়া আম্মাকে একটু সাহ্যয্যে করতে পারলে ভালো লাগবে। তাই অর্নিকে বললাম আম্মা আজ হজ্জে যাচ্ছে হাজার দেক টাকা দিয়ে সহযোগিতা করি। তারপর আর বলতে হবেনা হয়তো বুঝতেই পারছেন। সবথেকে নিকৃষ্ট কথা ছিলো হুবহু এমন- তুই আর ঘরে আসবি না। রাস্তায় গাড়ির তলে, ট্রেনের তলে মর।
আমি কষ্টে নরম সুরে বললাম তুমি কি বলো এগুলো।
অর্নি উত্তরে বললো, আজ থেকে তুই তোর মার সাথে শুবি, আমার ধারে আসবি না।
আমার মনে হয় সতি বা বৈধ মায়ের সন্তান কোনো মাকে নিয়ে এমন বলতে পারে না।
এতো বছর ধরে বিনা চাওয়ায় শুধু ওকে ক্ষমা করে যাচ্ছি। আমি ওকে যত ক্ষমা করি ওর অন্যায় ততই বেড়ে চলেছে। কিন্তু শুধু মেয়েটার জন্য বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারিনা।
তার কিছুদিন পর আমার আম্মার চোখে সমস্যা হলো, চোখে ঘোলা ঘোলা দেখছে। খুবই খারাপ অবস্থা। আমি বললাম ঢাকায় আমার কাছে আসেন ডাক্তার দেখাই। আম্মা বলল আমি ঠিক মতো দেখতে পাইনা, একা একা কিভাবে আসবো। পরে আমার মামার সাথে আম্মা ঢাকায় এলো। একদিন পর আমি আর অর্নি মেয়েকে নিয়ে স্কুলে গেলাম আম্মাকে একা বাসায় রেখে। স্কুল ছুটির পর আবার দুজন মেয়েকে নিয়ে বাসায় ফিরলাম, গেটের সামনে থেকে অর্নিকে বললাম তুমি বাসায় যাও, আমি কাচা বাজার করে নিয়ে আসি। ৩থেকে৪ পদের কাচা বাজার করে ফেরার পথে অর্নির ফোন। ফোন ধরা মাত্র বলছে তোমার মাকে এখনি বের করো, আমি ওনার সাথে থাকতে পারবো না। এমন বাজে নোংড়া মহিলার সাথে মানুষ থাকতে পারে।
ঘরে ডুকে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে। অর্নির উত্তর উনি কোরআন শরীফ পড়ে তাকে না রেখে ওয়্যারড্রপের উপর রেখেছে। এটা হলো আমার মায়ের মহা অপরাধ।
কোনোভাবেই আমার আম্মাকে আর থাকতে দিলো না। পরে আমার বড় ভাইয়ের বাসা টঙ্গি রেখে আসি আম্মাকে।
এতো নিকৃষ্ট অন্যায় অপরাধ করার পরেও ওপর ভিতর কনো অনুশোচনা নাই, উল্টো সব দোষ আমার আমি নাকি অযোগ্য স্বামী। অবশ্যই আমি অযোগ্য, কারন ওর সব অন্যায় সহ্য করতেছি।
No comments:
Post a Comment