Monday, January 10, 2022

আর কতো (11.01.2022)

 

০৮ জানুয়ারী ২২, থেকে সকাল ৭ টায় অফিসে আসতে হচ্ছে। আমি তো চাকরী করি, তাই বসের হুকুম মানতে বাধ্য। কেনো এতো সকালে  অফিসে আসতে হবে তাতেও জান্নাতের আপত্তি। বাসায় গেলেই কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করতে থাকে। আমি কোন উত্তর দেই না। চুপ করে থাকি । 

জানি কুকুরের লেজ সোজা হতে পারে এই অজাত কোনদিন বুঝবে না। তাই চুপ করে থাকি। আমি সকালে নাস্তা ন করেই অফিসে চলে যাই। কারন এতো সকালে ওর নাস্তা তৈরি করতে সমস্যা হয় ।

আরেকটি কথা না বললেই না। এই কয়েকদিন বাদে প্রতিদিনই আমি অফিসে আসি সকাল ১০ টায়, দুপুরে বাসায় থেকে যাই ২টার দিকে, ৪টা বা সাড়ে ৪ টার দিকে আবার অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা করি। অফিস শেষ করে রাতে বাসায় ফিরতে ফিরতে সাড়ে ১০ টা ১১ টা  বা তার বেশিও বেজে যায়। যতটুকু সময় অফিসে থাকি তার মধ্যে কয়েকবার জান্নাত ফোন করে বলতে থাকে , আমার কিছু ভালো লাগছে না, আমার কিছু ভালো লাগছে না। 

প্রতিদিনের মতো ১১ জানুয়ারী ২২, সকালে অফিসে কাজ করছি। তখন ঘড়ির কাটায় ১১টা। জান্নাতের ফোন।ফোন কেটে দিয়ে আমি ব্যাক করে বললাম। কাজ করছি বলো কি বলবা, 

জান্নাত- ন্যাকামীর সুরে কথায় টান দিয়ে বললো, আমার কিছু ভালো লাগছে না। 

আমি বললাম তোমার ভালো লাগছে না, শুনলাম আমি কি করতে পারি বলো ? আমি তো অফিসে কাজ করছি তাই না।

জান্নাত- তুমি শুধু অফিস করো, আর কেউ অফিসে করেনা। শতশত পুরুষ মানুষ অফিসে করছে। সংসারও করছে।

আমি বললাম এটা কোন ধরনের কথা। তোমার সমস্যা কি ? এই এক কথা শুনতে শুনতে আমি অতিষ্ট। আর ভালো লাগে না। যদি শত শত পুরুষ মানুষ সম্পর্কে তোমার এতোই ধারনা থাকে তাহলে আমার সাথে সংসার করতে এসেছো কেন ? ফোন রাখো, তুমি তো একা ঘরে সবে যা খুশি বলতে পারো, আমি মানুষের মধ্যে থাকি। আমাকে আর কতো  নিচে নামাবে, আমার আত্মসম্মান আর কতো নষ্ট করবে তুমি ? আমাকে তো জীবন্ত লাশ বানিয়ে ফেলেছো। 

জান্নাত বলেলো একা একা আমার আর ভালো লাগে না, আমি বাইরে যাবো,  তুমি তো সারাদিন বাইরে থাকো তাই টের পাও না।

আমি বললাম- যখন মেয়েটা হয়নি, তখন বলতে একটা বাচ্চা হয়ে তাকে নিয়ে আমার সময় কাটবে, তোমাকে আর জ্বালাবো না। এখন মেয়েকে নিয়ে সময় কাটাতে তোমার ভালো লাগেনা ? আর এটা আমার চাকরী । আমাকে যদি বলে সারাদিন একা এক ঘরে বসে থাকতে , আমার তাই করতে হবে। যখন যেখানে পাঠায় , যা বলে তাই করতে হয়। তুমি তো আমার চাকরী সম্পর্কে, আমার সম্পর্কে সবই জানো । চাকরী মানে কেনা বাদীর মতো যখন যা বলবে তাই করতে হবে। আর বাইরে থাকার কথা বলছো তুমি- আমি বিনোদন করতে বাইরে থাকি না, বা বাইরে ফুর্তি করে বেড়াই না, পেটের ভাত যোগার করতে বাইরে থাকি। তোমাদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার জন্যই বাইরে থাকি। 

জান্নাত আমার কষ্টগুলো না বুঝে আবার বলতে শুরু করলো তোমার শুধু অজুহাত আর মানুষ চাকরী করে না ? আর পুরুষ মানুষ নাই জগতে যারা স্ত্রী সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেয়। 

আমি বললাম দেখো আমার সাথে মানুষ আছে তারা আমার একটু পিছনে, আমি রাস্তায় হাটছি । এসব কথা শুনতে কারো ভালো লাগে না । আমি মরে গেলেই তোমার শান্তি হবে। 

 জান্নাত বললো -আমাকে তুমি অনেক বেশি কথা বলে ফেললে, আমাকে তুমি আর কতো কষ্ট দেবে ? আমাকে ডিফোর্স দিয়ে দাও, তোমার সাথে সংসার করবো না।  

আমি আর কোন কথা না বাড়িয়ে ফোন কেটে দিলাম। 

No comments:

Post a Comment

শুধু সন্তানের জন্য

 আমি চরম অসহায়। জীবন যুদ্ধে যার সাথে মাঠে নেমেছি  সেই আমার প্রতিদ্বন্দি। সে আর কেউ নয় আমার স্ত্রী। কেন বলছি কারন, আমার আয় করা টাকা থেকে বছরে...