এভাবেই চলছে দিন। আমি জান্নাতের সাথে তেমন না পারতে কথা বলিনা। অফিস থেকে বাসায় গিয়ে নিজের মতো করে ভাত তরকারী নিয়ে খেয়ে দেয়ে শুয়ে থাকি। জান্নাত ও তার মতো। সারাদিন মোবাইল নিয়েই থাকে। সকালে আমার ঘুম ভাঙ্গে ওর মোবাইলে কথা বলার শব্দে, আবার রাতে বাসায় ফিরেও দেখি সেই মোবাইল হাতে। আমি নিজের মতো করে হাতমুখ ধুয়ে, প্লেট ধুয়ে ভাত নিয়ে খেতে বসি।
পক্ষান্তরে আমি আমি অফিস থেকে বাসায় ফিরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে । যদি একটু মোবাইল নিয়ে বসি তাহলে জান্নাতের মুখের দিকে তাকানো যায় না। মুখ খানা মুখপোড়া হনুমানের মতো করে এমন ভাব করে যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
সকালে আমি সেভ করছি জান্নাতের চিতকার, আমার উদ্দেশ্যে তোমার স্বাভাব এখনো ভালো হয়ন। আমি কোন উত্তর দিচ্ছি না। এবার আমার কাছাকাছি এসে বললো ঐ মেয়ের সাথে তোমার এখনো যোগাযোগ আছে।
আমি বললাম - জুতা দিয়ে পিটিয়ে মুখ ভেঙ্গে দেবো। এই বেয়াদপ কোথার মেয়ে।
জান্নাত বললো- এই যে রানু তোমাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে। আমি বললাম দেখি কোথায় ?
দেখলাম রোহান তানভির নামে একটা ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পেন্ডিং । প্রায় ১বছর আগে পাঠিয়েছে। নামের উপরে ৩২ ডব্লিউ লেখা (32w)। তাতে বুঝলাম ৩২ সপ্তাহ আগে রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে। আমি জানিনা এই রোহান তারভির কে ? কিন্তু জান্নাত জানে। ও বলছে এটা রানুর ছেলে।
আমি জান্নাতকে বললাম তুমি, তোমার এই স্বভাব ছাড়ো। ভালো হয়ে যাও। কে শোনে কার কথা। মানুষ হলে তো শুনতো। শুরু করলো গালিগালাজ আজে বাজে কথা, সাথে মেয়েকে ও গালিগালাজ। রাগে আমার শরীর জ্বলতে লাগলো। কোন কথার কোন উত্তর না দিয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা করালাম।
আল্লাহ ভালো জানে কতো দিন আমার আর আমার নিস্পাপ মেয়ের এই নির্যাতন সইতে হবে। মেয়েটা যদি বিছানায় একটু পানি ফেলে , সাথে সাথে মেয়েকে বিশ্রি ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে আর বলতে থাকে এই সংসারে আর শান্তি নাই। বালের সংসার, বালের একটা মেয়ে, জীবনটা ধ্বংস করে দিলো। জীবনটা কয়লা করে দিলো ইত্যাদি। আবার রাতে বা দিনে মশায় কামড়ালেও সংসারের আর আমার মেয়ের দোষ। শুরু হয় গালিগালাজ।
১৩ই জুন জান্নাতের জন্মদিন ছিলো। একটা মোবাইল কিনে দিয়েছি। ভালো মন্দ কিছুই বললো না। তারপরও আমার মোবইল নিয়ে টিপতে থাকবে। আমি কয়েকবার বলেছি। আমি তো তোমার মোবাইল ধরি না। তুমি আমার মোবাইল ধরবা কেন ? জান্নাত বলে। আমার মোবাইল তুমি ধরতে পারবা না কিন্তু আমি তোমার টা ধরবো। যা খুশি তাই করবো।
আমি কোন উত্তর দিলাম না।
No comments:
Post a Comment