Tuesday, October 19, 2021

19.10.2021

 

গতকাল দুপুরের কথা । আমি বাসায় গিয়ে মেয়েকে গোসল করিয়ে। ঘরে বসে বসে মো্বাইল টিপছি।জান্নাত আমার সামনে দিয়ে ঘুরছে আর বলছে আমি একটু ফেসবুকে হায় হ্যালো করেছি তাতে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গেছে ।যত অত্যাচার সব আমার উপর বলে মেয়ের মাথায় একটা খোচা মেরে বলছে তুই পেটে এসেই আমার সর্বনাশ করেছিস। তোর জন্য মুখ বুজে সব সহ্য করছি। তুই হচ্ছিস সব নষ্টের গোড়া।  আমি আমি চুপচাপ সব শুনছি কোন কথার কোন উত্তর দিলাম না।বুঝতে পারছি অশান্তি করার জন্য ওর শরির কামড়াচ্ছে। এমন সময় ওয়াস রুমের কাছে গিয়ে জান্নাত চিৎকার করেে উঠলো এই এদিকে আসো। আমি এগিয়ে এসে বললাম কি হয়েছে। 

জান্নাত -আমার কাপড়ের বালতিতে পানি দিয়েছো তুমি ?

হ্যা আমি দিয়েছি। শুকনো কাপড় বালতির ভিতর, তারপর এতোখানি ভালো পানি ফেলে দেবো তাই বালতির মধ্যে ঢেলে দিয়েছি।

জান্নাত- তোমার সাথে সংসার করার মতো কোন পরিবেশ নাই।

আমি হতবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম। এই কারনে এই কথা আসে কিনা আমার জানা নাই। বলে চুপ হয়ে গেলাম।

জান্নাত কতক্ষন একা একা যা খুশি বলে গেলো অনুরুপ ভাবে। আমি চুপচাপ বসে মেয়েকে নিয়ে খেলা করছি। যেন কিছুই শনছি না বা কিছুই হয়নি।

বিকাল ৪টার দিকে জান্নাত বললো ডাক্তারের কাছ যেতে হবে। আমি কোন প্রশ্ন না করে বললাম রেডি হও। ডাক্তার দেখিয়ে মেয়েকে এবং ওকে নিয়ে রাত ৮ টা পর্যন্ত আমরা রাস্তায় রাস্তায় হাটলাম ঘুরলাম। 

রাতে ঘুম সকালে উঠে অফিসে রওনা করলাম। দুপুরে বাসায় ফিরে জান্নাতরে করোনা টিকার নিবন্ধন করলাম। আমি গোসলে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি। তখন আড়াইটা বাজে। আমি লুঙ্গি নিয়ে ওয়াসরুমে ঢুকবো । ঘরে তাকিয়ে দেখি জান্নাত খেতে বসে গেছে। আমি গোসল শেষ করে এসে খেতে বসলাম। ততক্ষনে জান্নাত খাওয়া শেষ করে মোবাইলে নাটক দেখতে বসেছে। আমি খাওয়া দাওয়া শেষ করে একটু শুয়ে পড়লাম। বেলা  সাড়ে ৪টার দিকে উঠে বাতাবি লেবু নিয়ে বসলাম।তখনও জান্নাত মোবাইলে নাটক দেখছে। আমার ঘরে রেকসিনের সোফা। আমি সোফায় বসে বাতাবী লেবুর খোসা ছাড়িয়ে সোফার উপর রাখছি আর লেবুর কোয়াগুলো প্লেটে রাখছি। বলে রাখছি এটা লেবুর উপরের মোটা খোসা না, ভিতরের সাদা খোসাটা্ । মেয়ে আমার সাথে লেবু ছেনছে। এমন সময় জান্নাত আমাকে উদ্দেশ্যে করে বলছে । কি করছো তুমি ? খুব গম্ভির গলায়।

আমি কিছু বলছি না। কারন ওর কথার টোনটা ভালো মনে হলোনা। আমার কাজ আমি করছি।

আবার জান্নাত বললো আমার কথা শোনোনি ?

আমি বললাম কি হয়েছে ? এমন করছো কেন ?

জান্নাত- খোসা তুমি সোফায় রাখছো কেন ?

আমি বললাম এটা ভেজা কিছুনা যে, সোফায় লেগে নষ্ট হয়ে যাবে। এগুলো ফেলে একটা মোছা দিলেই পরিস্কার হয়ে যাবে। 

শুরু হয়ে গেলো বকবকান। আমি আর কোন উত্তর দিলাম না। মেয়েকে নিয়ে লেবু ছাড়ানো শেষ করে। সোফা পরিস্কার করে। হাত ধুয়ে এসে জানলায় টাঙ্গানো পুরানো গামছা নিয়ে হাত মুছলাম। 

জান্নাত আবারও খেকিযে উঠলো- এই গামছা ধরলা কেনো ? ঐখানে চেয়ারে একটা গামছা আছে না ? 

আমি কোন উত্তর দিলাম না। কিন্তু জান্নাতের মুখ বন্ধ হলো না। মেয়েকে উদ্দেশ্যে সেই আগের মতো বলতে শুরু করলো। ১৫ মিনিটের মতো একা একা এমন আজে বাজে কথা বলতে শুরু করলো। আমার জীবনটা শেষ করে ফেলছে। জানিনা কোন পাপে এমন কুলাঙ্গারের ঘরে আল্লাহ আমারে পাঠিয়েছে। একটা অমানুষ, এক বিন্দু সময়ও শান্তিতে থাকতে দেয় না। ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি কোন কথার কোন উত্তর না দিয়ে চুপ চাপ সব শুনছি আর আফিসে আসার জন্য জামা প্যান্ট পরছি। মেয়েকে একটু আদর করে বেরিয়ে এলাম অফিসের পথে।

এই দুইদিন যে এমন করছে তা নয়। প্রতিদিন কোন কারন ছাড়াই এভাবে যা না তাই বলা শুরু করে। 

১৫ তারিখে ওকে নিযে বের হয়ে ওর ইচ্ছা মতো ওকে কাপড় কিনে দিলাম। ১৬ তারিখ সন্ধ্যা ৭টার সময় বলছে । চলো টঙ্গি বাজারে যাবো প্লাজু কিনতে। আমি বললাম এখন যেতে যেতেই সাড়ে আটটা নয়টা বেজে যাবে। এখন কিভাবে যাবো। আগামী কাল ৪টার  দিকে যাবো। 

আমি অফিসে থেকে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে মেয়েকে খাওয়ালাম। জান্নাত খাওয়া শেষ করে বলছে এখন একটু ঘুমাবো। আমি কিছু বললাম না। ও ঘুমিয়ে পড়লো। সাড়ে ৫টার দিকে উঠে বলছে টঙ্গি বাজারে যাবানা। 

আমি বললাম এতক্ষন মনে ছিলোনা। গতকালকে বলে রাখছি যে, ৪টার দিকে যাবো। আর এখন সাড়ে ৫টায় তুমি এই কথা বলছো। তোমার রেডি হতেই তো এক ঘন্টার বেশি লাগে। 

কে শোনে কার কথা জান্নাত সব দোষ আমার কাধে চাপিয়ে বলছে। জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে গেলাম একটা কাজ যদি ঠিক মতো করতে পারে। আমার কপালে যে, কেন এমন হলো। কোন কথায় কান না দিয়ে আমি বললাম রেডি হও। 

সেখান থেকে মার্কেট করে ফিরলাম রাত ১০টার দিকে। আমি মাজায় খুব ব্যাথা পেয়েছি। মেয়েটা তেমন হাটতেই চায়না্ শুধু কোলে কোলে।ওর বয়স ২বছর ৩মাস। আর কোলে তো নিতে হয় আমার । আর যদিও হাটতে চায় , সব জায়গায় তো ছেড়ে দেয়া যায় না। রাস্তায় গাড়ির যে চাপ। এই পর পর চারটে পাচটা দিন মেয়েকে কোলে কোলে রাখতে রাখেতে আমার অবস্থা কাহিল। তারওপর যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন তো খুব কষ্ট হয় । আর জান্নাতের ভাষ্য হলো মেয়ে ঘুমিয়ে আছে বিরক্ত করছে না , চলো ঐ মার্কেট থেকে  একটু ঘুরে আসি। ঐটা শেষ হলে চলো পাশের টায় যাই। এর মধ্যে মেয়ে েএকবার ঘুম ভেঙ্গে আবার ঘুমিয়ে পড়ে।

No comments:

Post a Comment

শুধু সন্তানের জন্য

 আমি চরম অসহায়। জীবন যুদ্ধে যার সাথে মাঠে নেমেছি  সেই আমার প্রতিদ্বন্দি। সে আর কেউ নয় আমার স্ত্রী। কেন বলছি কারন, আমার আয় করা টাকা থেকে বছরে...