ভূল ট্রেন
তখন ২০১৬ সাল আমি সার্ভিটেক মেশিনারিজে চাকরি করি। উত্তরা থেকে ঢাকা যাওযার সময় আমার ফোনে ভাবীর ফোন আসে। রিসিভ করতেই ভাবী বলে তুমি কোথায় ??
আমি বললাম আমি উত্তরা থেকে হেমায়েতপুর যাচ্ছি একটি মিটিং আছে তিনি বললেন তোমাকে কি তোমার ভাই ফোন দিয়েছিলো ?
আমি বললাম না।
উনি বলেলেন এখনি ফোন দিবে কথা বলো।
জ্বি আচ্ছা বলে ফোন রেখে দিলাম।
কিছুক্ষন পর ভাইয়ের ফোন ভাই বললো তুমি আমার এখানে চাকরী করবা। আমি বললাম আপনার ওখানে চাকরী করাতো আমার ভাগ্যে। অবশ্যই করবো।
ভাই বললো বিকালেই চলে আসো।
আমি বললাম ভাই এভাবে তো আসা যায় না। আমি যেখানে চাকরী করছি সেখানে আমাকে একটা দায়িত্ব দেয়া আছে। আমি সেগুলো বুঝিয়ে দিয়ে চলে আসবো।
কথা মতো পরের দিন সিভি নিয়ে হাজির হলাম ভাইয়ের অফিসে।
উনি আমাকে পাঠালেন পল্টন মাহাবুব গ্রুপ এর অফিসে। সেখানে যাওয়ার পর নানান নাটক চলতে লাগলো। অবশেষে আমাকে একটি নিয়োগ পত্র দেয়া হলো। যাতে বেতন ভাতা কোনকিছু উল্লেখ নাই। শুধু জানুয়ারীতে জয়েন্ট করতে বলা হলো। বিপত্তি ঘটলো বেতনের সময়। আমাকে ভাই বলেছিলো ৩০ হাজার বেতন হবে। ওনারা দিলো ১০ হাজার। এ নিয়ে ভাই ওনাদের সাথে অনেক তর্কবিতর্ক করলো কিন্তু কোন লাভ হলোনা। তাই ভাই বললো তুমি ওখানে যা পাও রাখো আর প্রতি মাসে আমার কাছে এসে ৫ হাজার করে নিয়ে যাবা। আপাতত এভাবে চলো । চলতে লাগলাম। ৭ মাস পর একদিন রাতে ভাইয়ের ফোন তিনি বললেন।
তুমি কালকেই অফিসে যেয়ে দেখবে নেত্রিসাথে আমার একটি ছবি আছে ওটা নামিয়ে নিয়ে চলে আসবে। কেউ বাধা দিলে আমাকে বলবে। আর ওদের বলে আসবা যে, তুমি আর চাকরী করবা না।
আমি ঠিক তাই করলাম, তখন মাসের ২৭ তারিখ।
পরের দিন সন্ধ্যায় মালেক ও সাবিনা অফিসে এলো। আমাকে ডেকে ভাই ওনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বললো। একে আপনার ওখানে চাকরী দেন। বেতন ৩০ হাজার দিবেন। সাথে সাথে পাকা হয়ে গেলে সকাল থেকে চাকরী। বনানী অফিসে সকালে হাজির । মালেক ও সাবিনা কাগজপত্র দেখে । আমাকে বললো তুমি একটু বাইরে যাও। নিজেরা কিছুক্ষন ঘুচুর মুচুর করে আমাকে ডেকে বললো তোমাকে বর্তমানে ২০ হাজার দিবো। ৬ মাসে পরে ২৫,এবং ১ বছর পরে ৩০ হাজার হবে। আমি ভাইকে ফোন দিলাম । ভাই বললো আপাতত করো। তারপর আমার হাতে ১০ হাজার টাকা দিয়ে সাবিনা ম্যাডাম বললো, এই মাসের ১০ দিন সময় তুমি বাড়ি চলে যাও সামনের মাসের ১তারিখ থেকে জয়েন্ট করো। বাড়ি চলে গেলাম ।
১০ দিন পর এসে জয়েন্ট করলাম। তখন থাকতাম আড়াই হাজারে আইয়ুব ভাইয়ের সাথে। মাহাবুব গুপের সিয়াম পেপার মিলস থেকেই আমার আইয়ুব ভায়ের সাথে পরিচয় হয়। খুব ভালো মানুষ।
মালেকের অফিসে সারাদিন রেষ্টরুমে বসে বসে মোবাইল টিপে অলস সময় পার করছি। মাসে শেষ সবার বেতন হয় আমার কোন বেতন হয় না। পরে ভাইকে জানালাম। মালেক মার হাতে ১০ হাজার টাকা দিয়ে বললো বাকি টাকা স্যার দিবে। তুমি সারের সাথে কথা বলো। আমি ভাইকে ফোন দিলে ভাই বললো টাকা পাঠিয়েছি একটা কম্পিউটার কিনে আমার অফিসে আসো। সব বলা আছে তোমাকে রুম ঠিক করে দিবে। মালেক সাথে একজনকে দিয়ে তার হাতে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বললো কম্পিউটার কিনে সেট করে দিয়ে আসবা।
সেই থেকে আমার এই অফিসে চাকরী শুরু। তখন ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারী মাস। তখন এসে অফিসে পেলাম পিয়ন হাসান, ড্রাইভার হৃদয় ও ফরিদকে।
আর ভাইয়ের সবচেয়ে আস্তাভাজন বিশ্বাসী পেলাম দুজনকে চিসতি ও বকুল। যারা ভাইয়ের সব কাজকর্ম দেখাশুনা করে এবং সকাল থেকে রাত ১০/১১ টা পর্যন্ত ভাইয়ের সাথে অফিসে পড়ে থাকে।
আমিও খুব আনন্দে চাকরী করছি। খুব শান্তির চাকরী পেয়েছি। এভাবে জীবন কাটতে লাগলো। অফিসের পিয়ন হাসান মাঝে মাঝে অফিসে থাকে না। আমি ভাবলাম অফিসের পিয়ন যায় কোথায় পাওযা যায় নাকেন?
একদিন জানতে চাইলাম হাসান তুমি মাঝে মাঝে অফিস ছেড়ে কোথায় যাও। হাসান একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো আমার কাজ কি শুধু অফিসে বাসার কাজও করতে হয়। আমি বললাম ও আচ্ছা।
একদিন হাসানের প্রচন্ড জ্বর। পাশের রুমে ফ্রোরে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে। ভাই অফিসে এসে বললো হাসান কোথায় ??
আমি বললাম ওর জ্বর পাশের রুমে শুয়ে আছে। ভাই বললো জ্বর কি খুব বেশি। আমি বললাম দেখে তাই মনে হচ্ছে। ভাই তার নিজের রুমে ডুকে বললো, গন্ধে অফিসে থাকা যাচ্চে না। হাসানকে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করো। বলে আমার হাতে ৩ হাজার টাকা দিয়ে বললো ওকে গাড়িতে তুলে দাও।
আমি হাসান এর হাতে টাকা দিয়ে বললাম হাসান তোমাকে বাড়ি চলে যেতে বলেছে। চলো তোমাকে গাড়িতে তুলে দেই। হাসান বললো আমি নিজেই যেতে পারবো। হাসান ঘন্টা খানেকের ভিতর ধীরে ধীরে সব গুছিয়ে বাড়ির পথে রওনা করলো। হাসান চলে যাওয়ার পর ভাই বললো, গাড়িতে তুলে দিয়েছো। আমি বললাম ভাই হাসান বললো নিজেই যেতে পারবে। তাই গেটের বাইরে রিক্সায় উঠিয়ে দিয়ে এলাম। ভাই বললো সব নাটক, বাড়ি যাবার ধান্দা। এতোক্ষন নড়তে চড়তে পারছিলোনা এখন বাড়ি যাবার কথা বলতেই নিজে যেতে পারবে। এখন পুরো সুস্থ হয়ে গেছে। কথার আগামাথা কিছু বুঝলাম না। ভাবতে লাগলাম কেন এমন করবে। এটা কি কোন মানুষের কাজ। এখন অফিসে পিয়ন একজন নাম তার পটু। হাসান নাকি এখনো ১ মাসের বেতনের টাকা পাবে। আমাকে বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েছিলো , ভাই বলেছিলে দিবে, দিবে দিবে করে এই কয়েক বছরে দেয়া হলোনা । হয়তো আর দেয়া হবেনা।
কিছুদিন পর দেখলাম চিশতিকে বের করে দিলো, চিশতির নামের অভিযোগ পাহাড় থেকেও উচু। বলে শেষ করা কঠিন।
এখন অফিসে পুরো আমার নিয়ন্ত্রনে। আমি এখানকার হাওয়া বাতাস কম বুঝি তাই হিমসিম ক্ষেতে লাগলাম। অল্প কয়েক দিনের মধ্যে সব সামলে নিলাম। ভাই এবং ভাইয়ের পরিবার আমাকে খুব স্নেহ করেন। আর বিশ্বাসের তো ঘাটতি নাই।
বেতন হাতে পেয়েই পালিয়ে গেল ড্রাইভার হৃদয়। আমি আশ্চর্য হলাম এমন সুন্দর চাকরি কেউ ছাড়ে। প্রতিটি পদে পদে আমি অবাক হতে লাগলাম। তার কিছুদিন পর ড্রাইভার ফরিদও ভেগে গেলো। ভাই পালিয়ে যাওয়া ড্রাইভারদের আমলনামা আমার সামনে তুলে ধরলেন। তুলে ধরলেন তার দেয়া অগনিত সুযোগ সুবিধার কথাও। শুধু শুনা ছাড়া কিছুই বলার ছিলো না। নতুন ড্রাইভার এলো নাম মনির। বছর খানেক পর সেও চলে গেলো। পিয়ন পটু ভাইদের সাথে গোপালগঞ্জ গেলো। সেখান থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে গেলো আর এলোনা।
নতুন ড্রাইভার এলো কাশেম সে এক বছরও টিকলোনা। তখন পিয়ন তুহিন। খুব ভালো ছেলে। আলাপ ব্যবহার পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা সবাইকে মুগ্ধ করেছে। অবশেষে একদিন ওর নামে খাবার চুরির অভিযোগ এনে খুব গালিগালাজ করলেন ভাই। তুহিনও একদিন কাউকে কিছু না বলে উধাও হয়ে গেলো।
কাশেমের পর ড্রাইভার এলো মেহেদী। গোপালগঞ্জের ছেলে। প্রথম প্রথম মেহেদী খুব ভালো দিন কাটাতে লাগলো। ভাই ও মেহেদীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কিছু দিন পার না হতেই সেই সাবেক আচরনে ফিরে গেলেন ভাই। আমার নিজস্ব মতামত ড্রাইভার না টিকার কারন হলো । গাড়ি চালানোর সময় তাকে নানান ভাবে বকাবকি করা। ড্রাইভরের গাড়ি চালানো ভাইয়ের পছন্দ হতো না। তাই বকাবকি করতো। ভাই খুব ভালো গাড়ি চালাতে পারে তাই ড্রাইভারদের ভূল সহজে ধরতে পারতো। কিছু দিন পর মেহেদীও খুব খারাপ লোক হয়ে গেলো। মেহেদীর বিরুদ্ধেও অভিযোগের শেষ নাই। তাকে আর রাখা যাবে না। যখন তখন কথায় কথায় তাকে যা না তাই বলে গালিগালাজ করতে থাকে। মেহেদীকে বললাম কি ব্যাপার মেহেদী তুমি এতো ভূল করো কেন ?
মেহেদী বললো স্যার ভূল করি না,
আমি বললাম তাহলে তোমাকে বকাবকি করে কেন ?
মেহেদী বললো আমাকে তাড়ানোর জন্য
মানে কি ? তুমি কি বলতে চাও ?
তখন মেহেদী বললো স্যার, একটা কাজের জন্য বড় স্যারকে আড়াই লক্ষ টাকা এনে দিয়েছিলাম। সেই কাজটা হয়নি। এখন তারা আমার কাছে টাকা চাচ্ছে। আর আমি যেই স্যারের কাছে টাকা চাই সেই সে রাগ হয়ে যায়। বলেন কাজ না করতে পারলে তো টাকাটা ফেরত দেয়া উচিত।
পিয়ন তুহিন চলে যাওয়ার পর নতুন জয়েন্ট করলো হাবিল। আমি এখানে আসার পরে আমার দেখা সবথেকে বেশিদিন টিকে থাকা পিয়ন হাবিল।
আর মেহেদী চলে যাওয়ার পর নতুন ড্রাইভার এলো শুকুর আলী।
হাবিল সারদিন খুব ব্যস্ত থাকতো। হাবিল মাঝে মাঝে এসে আমাকে বলতো স্যার আমি অফিসের পিয়ন, আমি তো অফিসের কাজ করবো। বাসার বাজার সদাই যা লাগে সব করবো এটা কোন সমস্যা না।
আমি বললাম তাহলে তোমার সমস্যা কোথায় ??
হাবিল বললো স্যার, বাসার ঘর মোছা, মাছ মাংস ধোয়া, কাপড় ধোয়া সব আমার করতে হয়। আর দিনের মধ্যে 20 তেকে ৩০ বার দোকানে যেতে হয়। চারতলা থেকে বারবার ওঠা নামা করতে করতে অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। পা আর চলে না।
আমি বললাম তো এতোবার দোকানে যেতে হবে কেন ?? একবারে সব জিনিস কিনে আনতে পারোনা। হাবিল একটু হেসে দিয়ে বললো স্যার, তারই তো বারবার পাঠায় একবারে সব কিছু বলেনা। তাহলে তো সব একবারে কিনে মাথায় করে উঠে যেতাম। হাবিলও 2023 সালের কোরবানী ঈদের মাংস নিয়ে পালিয়ে গেল আর ফিরে আসেনি। ঈদের পরে নতুন পিয়ন জয়েন্ট করেছে রনি। রনির বাবা ভাই এর প্রজেক্টের দারোয়ান। রনি ছেলেটাও খুব ভালো, নম্রভদ্র শালিন ব্যবহার।
আমি হলাম ওনাদের অফিসে টিকে থাকা সবচেয়ে পুরোন কর্মচারী। জীবনের সাথে কতোটা যুদ্ধ করে, কতোটা যন্ত্রনা সহ্য করে টিকে আছি তার কিছুটা তুলে ধরছি।
করোনার আভাস যখন এলো, বাংলাদেশে লকডাউন দেয়ার আগে ভাই বাড়ি চলে গেলেন। আমার হাতে বেতনের অর্ধেক অর্থাত ১০ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে গেলেন। আমি কড়া লকডাউনে ঢাকায় আটকা পড়ে গেলাম। ৫ মাসের ছোট বাচ্চা নিয়ে কোন রিক্স নিতে পারলাম না। চারদিকে তখন কেমন যেন একটা হাহাকার অবস্থা সবাই হয়তো বুঝতে পারবেন যারা সেই পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছেন। অসৎ মানুষ গুলো সুযোগ পেয়ে নিত্যপন্যের দামও হাকিয়েছে অনেক। তাই মাসখানে পরেই আমার হাত খালি হয়ে গেলো। চোখে মুখে অন্ধকার দেখেতে লাগলাম। ভাইকে ফোন দিলে ভাই বলে এইতো পাঠিয়ে দিবো। কালকে, পরশু করতে করতে এখন আর ফোন রিসিভ করেন না। কষ্টে যন্ত্রনায় কলিজা ফেটে যেতে লাগলো, কি করলাম ভাই ২ বছরে আমার বেতন একটাকাও বাড়ালোনা। এমনকি আমার কোন বাড়তি আয়ও নাই। এমন দুঃসময়ে আমাকে ফোন করলো জালাল ভাই, লজ্জা ভয় উপেক্ষা করে তাকে সব খুলে বললাম যে, ঘরে ৫ মাসের বাচ্চা দুধ নাই। ঘরে আমাদেরও খাবার নাই। তখন জালাল ভাই বললো স্যার এটা কি করে করতে পারলো, কিছু বলার নাই।
তখন জালাল ভাই ১হাজার টাকা পাঠালো বিকাশে। একটু স্বস্থির নিশ্বাস ফেলে ভাবলাম আমার শুভাকাঙ্খি কে কে আছে, কে কে আমাকে যথেষ্ট ভালোবাসে ?
মিলন ভাই ও রিয়াজ ভাইয়ের কথা মনে হলো, মিলন ভাইকে ফোন দিয়ে বললাম ভাই আপনার সাথে একটু কথা ছিলো, খুব বিপদে আছি একটু পরামর্শ চাই। লকডাউনের বাধা উপেক্ষা করে, পুলিশ বিজিবি, বেরিকেটে ওষুধ কেনার বাহানা দিয়ে মিলন ভাইয়ের সাথে দেখা করলাম। মিলন ভাই বললো দেখি আপনার জন্য কি করতে পারি। মিলন ভাইয়ের বাসার নিচ তলায় ভাড়া থাকতো এক ভদ্রমহিলা ত্রান দিচ্ছিলো। মিলন ভাই সেখান থেকে আমাকে এক বস্তা ত্রান এনে দেয়। এভাবে দুবার দিয়েছে। যাতে চাল, ডাল,তেল, আলু ছিলো। এবং রিয়াজ ভাই একবার সিটি কর্পোরেশনের ত্রান পাশ করিয়ে দিয়েছিলো। তারপর আমার বাসার কাছেই বাড়ি ভাইপো সজলও আমাকে অনেক হেল্প করেছে। লকডাউনের ঐ কয়টা মাস। জীবনকে তখন খুব কাছ থেকে দেখেছি। বাসাভাড়া বেধে গেছে প্রায় লক্ষাধিক টাকা। বাড়িওয়ালা খুব ভালো মানুষ ছিলো, ঐ কঠিন সময় উনি একবারও বাসা ভাড়া চাননি। এই নির্মম শহরে এমন বাড়িওয়ালা পাওয়া খুব কঠিন। এই লকডাউনে রোজার ঈদের আগে আমার শ্বশুর ১০ হাজার টাকা পাঠালো । তখন বাচ্চাটাও একটু পেটের সমস্যায় ভূগছিলো। তখন কোন ডাক্তার দেখানোও খুব কঠিন ছিলো। করোনার ভয়ে অধিকাংশ ডাক্তারই চেম্বার বন্ধ করে দিয়েছিলো। করোনা টেষ্টএর রিপোর্টছাড়া রোগি দেখতেন না। ঐ সময় আমার আব্বারও লিভার সিরোসিস ধরা পড়লো। আল্লাহ যেন সব পরীক্ষা একসাথেই নিচ্ছিলেন। শ্বশুরের টাকা পেয়ে বাচ্চাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গেলাম আহছানিয়া মিশনে , ডাক্তার দেখিয়ে বাসায় এসে দেখি আমার ঘরের দরজা খোলা, মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। ঘরে ডুকে দেখি চাল,ডাল,তেল জুতা সেন্ডেল এমনকি মোবাইলের চার্জার, বাচ্চার গায়ে মাখানো লোশনের বাকি অংশটুকুও নাই। মনে মনে ভাবলাম চোরের কি আমার বাসাটাই নজরে পড়লো। আমার বউ অঝোরে হাউমাউ করে কাদছে। আমি বললাম কেদে আর কি হবে। ও বললো প্লাষ্টিকের ব্যাংকটাও নাই।
তখন সজল এবং সজলের বাবা শহিদ ভাই থানা পুলিশ করে অনেক সহযোগীতা করেছে কিন্তু কি আর করার।
ভাইকে ফোন সব জানালাম ভাই সব শুনে ৫ হাজার টাকা পাঠালেন।
করোনার পর তিনি ঢাকায় এলেন। আবার অফিস পুনরায় চালু হলো। ভালোই দিন কাটছিলো। আমি আবার মিথ্যা কথা কম বলতে পারি। তাই ভাইয়ের বাসা থেকে ভাবী বা ভাইপো যদি আমাকে কল দিয়ে জিজ্ঞাসা করতো অফিসে কে কে আছে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই বলতাম কে কে উপস্থিত আছে। কিন্তু অফিসের ব্যাপারে যে তার পরিবার হস্তক্ষেপ করে সেটা আমার জানা ছিলোনা। তাই কিছুদিন পরই ভাইয়ের চরম রোশানলে পড়ি। বুঝে উঠতে পারিনা কেন উনি আমার সাথে এমন করছে। আমার বেতন কিন্তু সেই ২০ হাজারই আছে। বাড়তি আর কোন আয় নাই।
দ্রব্যমূল্যের দাম উদ্ধগতিতে। বেতন বাড়ানোর কথা বললেই ওনার মুখের দিকে তাকানো যায় না।
বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী সবাইকে দাওয়াত দিচ্ছি নাম লিষ্ট করে। তখন মিলন ভাই জিজ্ঞাসা করলো তামিম কে ??
আমি বললাম ব্যাংকের লোক। নেমে এলো আমার উপর চরম দুর্যোগ। কেন বললাম ?? মিলন এখন তামিমকে খোজ করে আমার ক্ষতি করবে। আমার কাজ বন্ধ করে দিবে। কোটি কোটি টাকা লস হয়ে যাবে। ব্যাংকের লোন পাবো না। ইত্যাদি ইত্যাদি আমি খুব ভদ্র ভাষায় লিখেছি কিন্তু ভাই এতো ভদ্র ভাষায় কথা বলে না।
আমার জানামতে মিলন ভাই কখনো উনার কোন ক্ষতি করবে না। মিলন রফিক ওনার অদ্ধ ভক্ত। যাই হোক চুপচাপ সব অভিযোগ শুনলাম।
আরেকদিন নতুন ড্রাইভার আসার কথা। ড্রাইভার কাশেমের আগের কথা। ড্রাইভার সকালে এসে অফিসে বসে আছে। আমিও সকাল নয়টায় অফিসে চলে এসেছি। ১০ টার দিকে আমাকে ফোন করে ভাই বললো, ড্রাইভার আসছে ?
আমি বললাম জ্বি ভাই, ১৫ মিনিট আগে আসছে।
ভাই বললো- ড্রাইভার আসছে তাতে কোলের ভিতর বসায় রাখছো কেন? বাসায় পাঠাতো পোরোনা? ইত্যাদি ইত্যাদি গালিগালাজ। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে কখনো আমি জানাতাম যে উনি অফিসে আসবে তারপর ড্রাইভারের সাথে কথা বার্তা বলবে তারপর ফাইনাল একটা সিদ্ধান্ত দিবে।
ওনার গালিগালাজ চুপ করে শুনে ছোট একটা উত্তর দিলাম -ভাই ড্রাইভার তো ১৫/১৬ মিনিট আগে আসছে আর আপনি তো বলেননি যে ওকে নিয়ে বাসার নিচে আসতে হবে। তাই বসিয়ে রেখেছি।
ভাই উত্তর দিলো তেল বেশি হয়ে গেছে। তর্ক করো, আবার বিশ্রি বিশ্রি গালিগালাজ।
সেই ড্রাইভার টিকলো মাত্র ১ মাস। তাকে ঐ এক মাসের কোন টাকা দেয়া হয়নি। বেশি কয়েকবার অফিসের নিচে এসেছিলো। পরে টাকা দিয়েছে কিনা।
অথচ এই মানুষটা মুখের কথার মূল্য আমার কাছে অনেক। উনার অনুমতি ছাড়া আমি অফিস থেকে বের হইনা। কাউকে ফোনও দেই না।
আমার যখন মেয়ে হয়েছে তখন ভাই কিশোরগঞ্জ। আমি ঢাকায় আর আমার বাচ্চা ডেরিভারী হয়েছে খুলনায়। ডেলিভারী হবার সাথে সাথে আমি খবর পেয়ে ভাইকে জানাই। ভাই বলে আমি ঢাকায় আসি তারপর তুমি বাড়ি যেও। মেয়েদের সবচেয়ে দুঃখের সময় হলো সেটা যদি ডেলিভারীর সময় স্বামী পাশে না থাকে। আমি তো আমার বউয়ের পাশে থেকে শান্তনা দিতে পারলাম না। বাচ্চার মুখটাও দেখতে পারছি না। যেন জেলখানায় আছি। নিজের বাড়ি শ্বশুড় বাড়ি বন্ধু বান্ধবের শত প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে। কেমন মানুষের কাছে চাকরী করো যে বাচ্চা দেখতে আসার জন্যও ছুটি পাওনা। ইত্যাদি ইত্যাদি। তবুও সব দোষ নিজের কাধে নিয়ে বললাম ঢাকার অফিসে পুরো দায়িত্ব আমাকে দেয়া হয়েছে। আমি ছাড়া ঢাকায় এসব দেখার কেউ নাই। ভাই ঢাকায় না আসা পর্যন্ত আমি আসতে পারছি না। হাজার কইফিয়ত, ও প্রশ্নের জবাব দিতে দিতে এক সপ্তাহ কেটে গেলো। সপ্তাহর মাথায় ভাই এলো। ৩ দিনের ছুটি দিলো। শুনেছি অফিসের বসেরা এমন খবরে কর্মচারীর হাতে কিছু টাকা দিয়ে তারপর ছুটি দেয়। আমার ভাগ্যে সেটা হলোনা । অতপর এক সপ্তাহ পরে আমি আমার মেয়ের মুখ দেখি।
আরেক দিনের আরেকটা ঘটনা বলি। সেদনি আহছানিয়া মিশনের ভার্চুয়াল মিটিং হবার কথা। সকাল থেকেই আমি ভাইকে বারবার বলছি ভাই। মিটিং কিভাবে করবেন। আপনার মোবাইলে জুম ইনষ্টল করতে হবে। ইত্যাদি ইত্যাদি। আমাকে শুধু বললো তোমার ভাবীর রুমে মিটিং করবো। ল্যাপটপে মিটিং করবো তাহলে ভালো হবে স্ক্রিন বড় ।
আমি বললাম জ্বি ভাই তাই ভালো হবে। সাথে ওনার বড় ছেলেও রয়েছে। মিটিংয়ের ৫ মিনিট আগে ভাই অফিসে আসলেন। আমি তখন মাত্র ক্ষেতে বসেছি । মিটিং ২ টায়। এসেই আমাকে ডাকলেন। খাবার টেবিলে ফেলে হাত উচু করে দৌড়ে গেলাম। তোমার ল্যাপটপ, তোমার ভাবীর রুমে নাও। ওখানে সব সেট করো মিটিং করবো।
আমি শুধু অবাক নয় হতবাক হলাম। হা করে তাকিয়ে আছি। খেকিয়ে উঠে আমাকে বললেন বুঝ নাই। আমি নরম সুরে বললাম ভাই আমি ল্যাপটপ কোথায় পাবো ? আমার তো কোন ল্যাপটপ নাই। আবার খেকিয়ে উঠে বললেন তোমার ওটা। তখন আমার মাথায় ডুকলো উনি আমার ডেক্সটপ কম্পিউটারকে ল্যাপটপ বলছে। তখন আমি বুঝাতে লাগলাম ভাই ওটাতো ল্যাপটপ না। আর ওটাতে মিটিং করা যাবে না। কারন মাইক্রোফোন নাই, ক্যামেরা নাই।
কে শোনে কার কথা, শুরু হয়ে গেলো বিশ্রি বিশ্রি গালিগালাজ। কোন উপায়ন্তর না পেয়ে আমার মোবাইলে সেট করে দিলাম। খাবার টেবিলে এসে আর ক্ষেতে পারলাম না। খাবারের ভিতরে চোখের লোনা পানি পড়ে খাবার লোনা হয়ে গিয়েছিলো।
এমন হাজার ঘটনা আছে যা বর্ননা করে শেষ করা যাবে না। আর প্রতিদিন কয়েক শত মিথ্যা কথা বলতে হয়ে ওনার জন্য। কাজের কথা বলে যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে তারা ফোন দিলে বলতে হয় উনি ঢাকাতে নাই। আবার মাঝে মাঝে বলতে হয় অসুস্থ। এভাবে উনি যা শিখিয়ে দেন তাই বলতে হয়।
উনিই আমাকে বলেন খবরদার এই কথা কাউকে বলবে না। আবার উনিই সবাইকে ডেকে ডেকে বলেন।
উনার টাকা পয়সা মানুষ আমার কাছে দিয়ে যায়। এমনকি উনি চেক সই করে দিলে, ওনার ব্যাংক একাউন্ট থেকেও আমিই টাকা তুমি। সবার সামনে আমি কখনো ওনাকে টাকা বা কোন প্রকার কাগজও দেই না। আগে অনুমতি নিয়ে নেই। প্রতিদিনের ন্যায় ওনাকে টাকা দিতে গেলাম। উনি বললো পরে এখন যাও।
সবাই চলে যাওয়ার পরে উনি আমাকে খুব বকা দিলেন। বলেলেন তোমাকে কতবার বলতে হবে যে সবার সামনে টাকা দিবা না। আমি মুখ বুজে সব শুনে বললাম সরি ।
পরের দিন আবার টাকা দিবো এমন সময় লোক এসে পড়েছে। আমি বললাম ভােই এখন আনবো নাকি লোকজন চলে গেলে আনবো।
উনি বললেন কেন ???
আমি ওনার মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে আছি কি করবো বুঝতে পারছি না। তাৎক্ষনাত উনি বললেন এখনি নিয়ে আসো। আমার টাকা আমি নিবো তোমার কাছ থেকে তাতে সমস্যা কোথায় ??
আমি বললাম জ্বি ভাই।
অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে আমার বন্ধু শিপলুর অনুরোধে ওনাকে চেয়ারম্যান করে একটি কোম্পানি করার সিদ্ধান্ত নিলাম। সেখানে শিপলু সব সময় সময় দিতে পারবেনা বলে আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে গেলো আশিককে। আশিক খুবেই ধুরন্দর, প্রতারক ও চরিত্রহীন লোক। সেটা আগে আমিও বুঝতে পারিনি শিপলুও বুঝতে পারেনি। আশিক একটি বাটপারি মামলায় জেলে গেলো। ওকে অফিস থেকে র্যাব এসে ধরে নিয়ে গেলো। তারপর ভাইকে বুঝিয়ে ওকে আবার অফিসে ডুকালাম কোম্পানিটি চালু করার জন্য। কোম্পানির কাগজ যখন রেডি তখন সই করতে গিয়ে দেখি শিপলুর নাম নাই। আমি বললাম শিপলুর নাম কোথায় ? আশিক বললো স্যার ওকে বাদ দিতে বলেছে।
আমি চুপচাপ শুধু দেখে গেলাম। কিছু দিনের মধ্যে আশিক ওনার খুবই প্রিয় পাত্রে পরিনত হলো। কোম্পানির বয়স দেড় বছর। কোম্পানির থেকে একটি টাকাও আমি পেলাম না। আশিক ওনাকে গোপনে দেয় কিনা সেটা আশিক জানে। ওনি যখন আশিকের উপর রাগ হয় তখন আমাকে দিয়ে আশিককে বেশি কথা বলায়। উনি আমাকে বলে যে, তুমি আশিককে এটা বলো ওটা বলো। সেই মোতাবেক আমি আশিককে তাই বলি। অন্যদিকে উনিই আবার আশিককে আলাদা ডেকে কথা বলে আর আশিককে বলে জাহিদকে কিছু বলোনা। এরকম করে করে আমাকে আশিকের কাছে শত্রু বানায়। অন্যদিকে আশিক ওনার নাম ভাঙ্গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। সেগুলো আমার কানে আসে। আমি ওনাকে বললে উনি আমার উপর ক্ষেপে যান। উল্টো আমাকে বকাঝকা শুরু করে। আশিক কোম্পানিতে কখন কাকে নিয়োগ দেয়। রাতে চারপাচজন অফিসে থাকে ইত্যাদি ইত্যাদি।
এভাবে ১৭ আগষ্ট একটি মেয়ে আমাদের অফিসে আসে। আমি তখন মিস্ত্রিদের টাকা দিতে বাইরে গিয়েছিলাম। মেয়েটি আমাকে ফোন করে যে, আশিক ঐ মেয়েকে বেতন না দিয়ে বের করে দিয়েছে। তার একদিন আগে এসেছিলো আরেকটা ছেলে তাকেও আশিক বেতন না দিয়ে বের করে দিয়েছে। আমার বস কিছু না শুনেই আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে দিলো। যে এরা সমস্যা নিয়ে তোর কাছে আসে কেন ? তুই কি মিনিস্টার হয়েছিস। কিন্তু একবার ভাবলো না যে আমিও ঐ কোম্পানির ডিরেক্টর। যারা কোম্পানি থেকে প্রতারিত হয়ে গেছে তারা আমার কাছে আশিকের সম্পর্কে অভিযোগ জানাতে এসেছে। উনি তো চেয়ারম্যান উনার কাছে অভিযোগ জানানোর সাহস তাদের নাই।
কে কার কথা শোনে আমাকে শারিরিক ভাবে ইচ্ছামতো লাঞ্চিত করলো, অফিসের পিয়ন, ড্রাইভারসহ বাইরের কয়েকজন মানুষের সামনে। মা, বোন, বউ তুলে বিশ্রি বিশ্রি গালিগালাজ করলো। এমনি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে একবার অফিসে থেকে বেরও করে দিলো। শুধু আশিকের কথায়।
অথচ আমি এই সাতটি বছর ২৫ হাজার টাকা বেতনে ওনার কাছে চাকরী করছি। ২০২৩ সাল দিত্যপন্য ,খাদ্রদ্রব্যর যে দাম তাতে কিভাবে সংসার চলে আমিই জানি। আমার বাড়তি একটা পয়সা ইনকাম নাই।
তখন বুকটা চোখের জলে ভাসে আর মনে পড়ে আমার আব্বার কথা। আব্বা যখন ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি ছিল মুমুর্ষ অবস্থায় তখন, ওনার অফিস বাদ দিয়ে আমি আমার আব্বার পাশে ১ঘন্টাও থাকতে পারিনি। দায়িত্বর টানে ছুটে এসেছি অফিসে। অথচ উনি যখন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তখন সকাল থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত ওনার বেডের পাশে দাড়িয়ে থেকেছি, ক্যাবিনের আশেপাশে হাটাকলা করেছি। হাসপাতালে ওনার রুমের সামনে থেকে একটু ক্ষেতেও নিচে নামিনি, বা দুরে যাইনি। ওনার জন্য মানুষের সাথে অন্যায় করেছি। হাজার হাজার মিথ্যা বলেছি।
একদিন তাররুমে ৬/৭ জন মানুষ বসা। হঠাৎ আমাকে ডাকলো। আমি দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলতেই তোমার কাছে গত পরশু যে দলিলগুলো দিয়েছিলাম সেগুলো নিয়ে আসো। আমি কিছু না বোঝার মতো চুপচাপ দাড়িয়ে রইলাম। মানুষের সামনে সরাসরি বলতে পারছিনা যে, গত পরশু আমি কোন দলিল নেইনি। কোন উত্তর দেয়ার আগেই তিনি বললেন যাও খুজে দেখো তোমার কাছে আছে। আমি জানি আমার কাছে নাই তারপরও খুজতে নিজের রুমে এলাম এসে খুজে পেলাম না। ওনার রুম থেকে বেরিয়ে আসার সময় শুনতে পেলাম উনি সবার উদ্দেশ্যে বলছে দেখে নিয়ো এই দলিল ওর কাছেই আছে। ওর কাছ থেকেই বের করবো। তোমরা দেখো। আমি ২মিনিট পর ওনার রুমে ডুকলাম বলার জন্য যে দলিলটা পাইনি। গিয়ে দেখি ওনার টেবিলে একটি দলিল, আমি তো জানিনা যে উনি কোন দলিলটা খুজছে তাই বলে ফেললাম যে, ভাই আমার কাছে নাই । এতোক্ষন খুজলাম। উনি উত্তর দিলো পেয়েছি যাওওও। এখানেই ছিলো।
উনি যতবার কলিংবেল বাজায় আমি ততবার দৌড়ে যাই । উনি আমাকে ধমক দিয়ে বলে তুমি বারবার আসো কেন ?? ওরা (পিয়ন) তোমাকে বলবে তারপর তুমি আসবে। আমি বললাম জ্বি আচ্ছা।
পরের দিন আমি আমার রুমে বসে আছি ওনি কয়েকবার কলিং বেল বাজিয়েছে। আমি অপেক্ষায় আছি কখন পিয়ন আমাকে বলবে স্যার আপনাকে ডাকছে। পিয়ন যখন বললো যে,স্যার আপনাকে ডাকছে তখন গিয়ে আরেক ধমক , তুমি ওখানে বসে কি করো, শোনোনা বেল দিচ্ছি। আমি আবারও উত্তর দিলাম জ্বি ভাই।।
আজ ১৫ সেপ্টম্বর সকালে আমার হাতে ১০ হাজার টাকা দিয়ে উনি বললেন। এটা তোমার ম্যারেজ ডে উপলক্ষ্যে তোমার ভাবী দিয়েছে। আমার ম্যারেজ ডে ছিলো ১৫ই আগষ্ট।
১৭.০৯.২০২৩
সকালে আমি অফিসে আসি সকাল ১০ টায়, অফিসে এসে ওনাকে চারবার ফোন করেছি। ফোনে কল ডোকেনি, সাড়ে ১১ টার দিকে উনি আমাকে ফোন করে বলেন তুমি তো ফোন দিলেনা। আমি বললাম ভাই , আমি কল করেছি কিন্তু ফোন ডোকেনি, আমি দুটো নাম্বারেই কল করেছি। উনি বললেন সবার কল আসে তোমার কল আসেনা। আমি নিশ্চুপ।
No comments:
Post a Comment