Tuesday, March 23, 2021

ধারাবাহিক-৪

ধারাবাহিক-৪ 



16.10.19

আমি প্রতিদিনের ন্যায় যথারিতি অফিসে। আজ সকালে আর ফোন করে খোজ নেয়নি হয়তো ভূলে গেছে  অথবা নতুন কোন ফন্দি মনের মধ্যে পুশে চলেছে। আমি অফিসের কাজে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় ফোন করতে পারিনি।

দুপুরে মহারানীর ফোন। তখন আমি খাচ্ছি। ও জেনেবুঝেই লাঞ্চ টাইমে ফোন করবে। 

আমি বললাম খাচ্ছি , একটু পরে ফোন দিবো তোমাকে। 

খাওয়া শেষ হতেই আবার ফোন । আমি হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেস হতে পারিনি। ভিজা হাতে ফোন রিসিভ করে প্রায় ৭/৮ মিনিট কথা বললাম। আধঘন্টা পরে আবার ফোন করলো।আমি তখন একটা মিটিং এ আছি। আমি বার বার কেটে দিচ্ছি , অথচ জান্নাত একের পর এক ফোন দিযেই যাচ্ছে। ৭টা কল কেটে দেয়ার পর ৮ম তম কল রিসিভ করে আমি বললাম তুমি কি বোকা নাকি খোকা। বুঝতে পারচো না আমি ব্যস্ত । বার বার তোমার কল কেটে দিচিছ তারপরও ফোন দিচ্ছো। আমি মিটিং এ পরে কল দিচ্ছি । বলে কল কেটে দিলাম।

আধঘন্টা পর আবার ফোন করলো। আমি রিসিভ না করায় । এসএমএস দিলো -তোমার মিটিং শেষ হয়েছে ? আমি কোন উত্তর দিলাম না। খুব রাগ হচ্ছে। ওর এমন উল্টাপাল্টা কাজে। আমার এসএমএস দিলো আমি কি তোমাকে বিরক্ত করছি ?

তখন আমি উত্তর দিলাম হ্যা তুমি বিরক্ত করছো। 

রাতে সাড়ে ১০ টার দিকে বাসায় ফেরার সময় ১০০০ টাকা বিকাশ করে পাঠালাম। টাকা পাঠিয়ে ২/৩ বার ফোন করলাম কিন্তু ফোন রিসিভ করলো না। 

আমি বাসায় ফেরার পর ও আমাকে ফোন করলো । তখন রাত ১১টা বাজে। ফোন রিসিভ করার সাথে সাথে তুমি আমাকে বিশ্বাস করোনা ? আমার সব ইচ্ছা পূরন করতে না পারলে বিয়ে করেছো কেন ?

আমি বলল কি হয়েছে এমন করছো কেন ?  

জান্নাত -১০০০টাকা পাঠিয়েছো কেন ? আমি কি তোমার মতো ছোট লোক নাকি ? বিকাশের দোকান থেকে ১০০০ টাকা তুলতে আমার মানসম্মানে বাধে, আমার লজ্জা লাগে। 

আমি বললাম কি বলো তুমি হাস্যকর কথা । ১০০০ টাকা কি টাকা না। আর এতে লজ্জার কি আছে ? 

তখন জান্নাত বললো- কি দেখে যে, তোমায় বিয়ে করেছিলাম। আমার পছন্দ যে, এত জগন্য হবে এটা আমি ভাবতেই পারছিনা। আমার নিজেকে বিশ্বাস হচ্ছে না।


আমি শুধু বললাম আমার সাথে তুমি এমন ব্যবহার করতে পারোনা। এটা তোমাকে মানায় না। বলে ফোন কেটে দিলাম। তখন জান্নাত আমাকে আবার একটি এসএমএস দিলো যেটা হুবহু তুলে ধরছি - “ এই কাজটি করে তুমি ছোট লোকের পরিচয় ‍দিলে”।

১৭.১০.১৯

প্রতিদিনের ন্যায় অফিসে যাচ্ছি গাড়িতে থাকাকালীন দুবার ফোন করলো। ঢাকার শহরে লোকাল বাসে ঝুলে যাওয়া অভ্যাস যাদের আছে তারাই বলতে পারবে । তখন ফোন রিসিভ করা কতোটা  ঝামেলা।

আমি গাড়ি থেকে নেমে কল ব্যক করলাম । ফোন রিসিভ করেই বললো- কোথায় ?

আমি বললাম রাস্তায় অফিসে যাচ্ছি ।

ও আচ্ছা, গুড খাইছো ? 

হমম খেয়েছি।

আচ্ছা যাও বলে ফোন কেটে দিলো।

আমি অফিসের একটা জরুরী মিটিং এ মতিঝিল। 

আনুমানিক ১২টার দিকে আবার ফোন করলো। কল ব্যক করলাম কি বলো ?

জান্নাত- জরুরী কথা আছে । 

আমি বাইরে মিটিং এ আছি। পারলে সংক্ষেপে বলো।

জান্নাত -আমার এখানে থাকার মতো পরিবেশ নাই। আমি এখানে থাকতে পারছি না।আমাকে নিয়ে যাও। 

এই তোমার জরুরী কথা। তাও আবার এই মিটিং এর সময় বলতেই হলো। আচ্ছা এখন রাখো পরে ফোন দিচ্ছি। বলে ফোন কেটে দিলাম।

ঘন্টাখানিক পরে আমি ফোন করলাম- বলো কি হয়েছে ?

জান্নাত - আমি এখানে থাকবো না। আমাকে নিয়ে যাও ।

তোমার এখানে সমস্যা হলে তুমি খূলনায় যাও। আমি সময় করে ছুটি নিয়ে তোমাকে নিয়ে আসবো।

জান্নাত- হবে না। আমি ছোট মামাকে নিয়ে ঢাকায় আসছি।আমি টুটুপাড়া (খুলনা) যেতে পারবো না। 

আমি বললাম -শোনো ক্লিনিক থেকে আসার সময় মেয়েটাকে ওর দাদীকে না দেখিয়ে নিয়ে চলে আসছো । এখন যদি ঢাকায় চলে আসো সেটা খুব খারাপ দেখায়। জান্নাত ফোনটা কেটে দিলো।

ঘন্টাখানিক পর আবার ফোন করে বললো- আমি তোমাকে বিয়ে করেছি তোমার বাপ-মাকে না। আমাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে এখান থেকে নিয়ে যাবা না হলে আমি তোমাকে তালাক দিবো।

আমি বললাম কি বলো তুমি? তোমার মাথা ঠিক আছে ? এটা কেমন ব্যবহার ?

জান্নাত- আমি ঠিকই বলছি। আমি তোমার নিরযাতনে জজরিত। 

আমি তোমাকে কিভাবে ? কি? নিরযাতন করলাম ?

জান্নাত- আমি যা বলছি তাই। আমি ডিসিশন নিয়ে নিয়েছি। তোমার সময় মাত্র ২৪ ঘন্টা। বলেই ফোনটা কেটে দিলো ।

আমি আমার নানী শ্বাশুড়িকে ফোন করে সব কথা জানালাম। 

ঘন্টাখানিক পর আমার আব্বা ফোন করে বললো- আমি রাস্তার ওপারের বাড়িতে কাজ করছিলাম । বাসায় এসে দেখি তোমার শ্বশুর ২/৩বার ফোন দিয়েছে। ওরা তো সমস্যা ছাড়া ফোন করেনা। আবার কি কোন সমস্যা হয়েছে। আমি আমার আব্বাকে সব ঘটনা খুলে বললাম । 

১৮ তারিখে কোন কথা হয়নি।

১৯.১০.১৯ তারিখে একটি এসএমএস পাঠালো- খুলনা থেকে ডাক্তার দেখিয়ে এলাম । টাকা নাই ১০০০ টাকা পাঠাও।আমি রাত ১০টার দিকে টাকা পাঠিয়ে দিলাম। 

আর কোন ফোন করলাম না।


No comments:

Post a Comment

শুধু সন্তানের জন্য

 আমি চরম অসহায়। জীবন যুদ্ধে যার সাথে মাঠে নেমেছি  সেই আমার প্রতিদ্বন্দি। সে আর কেউ নয় আমার স্ত্রী। কেন বলছি কারন, আমার আয় করা টাকা থেকে বছরে...