Tuesday, December 21, 2021

মরে যেতে ইচ্ছা করে প্রতিটি মূহূর্তে


 বাচার কোন ইচ্ছা বা স্বাদ নাই। যতটুকু ছিলো তাও শেষ হয়ে  গেছে আব্ব মারা যাবার পরে। কারন, ভাবতাম আমার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে হয়তো অসুস্থ আব্বাকে আর বাচানো যাবে না। তারপর আবার আত্মহত্যা মহাপাপ।সর্বপরি সকলের উদ্ধে আমার মেয়ের মুখটা জ্বলে ভেজা চোখের সামনে ভাসে। 

কিন্তু বউ নামক এই  মানুষটার অত্যাচার আর সহ্য  হচ্ছে না। 

১৫.১২.২০২১ দিনগত রাত। তখন ঘড়ির কাটায় ৩টা বাজে। সবাই ঘুমিয়ে, আমার মতো কিছু হতভাগা ও নির্যাতিত পুরুষ ছাড়া। এদের জন্য সকাল থেকে রাত অবধি খেয়ে না খেয়ে মানুষের বকাঝকা শুনে। চুপটি মেরে থাকি শুধু মাত্র এই এর মুখে হাসি ফুটানোর জন্য।অথচ এর তা বুঝতেই চায় না। জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে একে সুখে রাখার চেষ্টা করি।

আর এই কিনা আমার রাতের ঘুমটাও , ‍ঘুমাতে দেয় না। নিজেদের কি মনে করে এক আল্লাহ ভালো জানে।

প্রতিদিনের মতো সুন্দর ভাবে রাতের খাওয়া শেষ করে মেয়েকে কোলে নিয়ে ঘুমাতে গেলাম। ঘুম ভাঙ্গলো জান্নাতের গলা শুনে। মেয়েকে বকছে তোর জ্বালায় একটু ঘুমাতেও পারবো না ? তোকে পেটে ধরে আমার সুখ শান্তি সব শেষ হয়ে গেছে। একটা বাড়া পেটে ধরছি, জীবনটাই শেষ হয়ে গেছে। নরক যন্ত্রনা ভোগ করছি ইত্যাদি ইত্যাদি ।

আমি শোয়া থেকে পাশ ফিরে আস্তে করে বললাম -মাঝরাতে কি শুরু করলা তুমি।অবলা নিশ্পাপ বাচ্চাটাকে সব সময় এমন আজে বাজে কথা বলো, কি সমস্যা তোমার ? এটা কি কোন মানুষের ব্যবহার ?

জান্নাত খেকিয়ে উঠলো আমার উপর-তোমার কি সমস্যা ?

এতোরাতে মানসম্মানের ভয়ে চুপচাপ থাকলাম। ভীতরটা দাউ দাউ করে জ্বলছে, চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।  এসব কি একদিন , দুদিন পর পর। কোন সিদ্ধান্ত নিতে গেলেই মেয়ের মুখটা চোখের সামনে ভেসে আসে। ওরাও এই দুর্বলতা কাজে লাগিয়েই যা না তাই করে। মানুষকে মানুষ হিসাবে মনে করেনা। এগুলো পরিবারের কু-শিক্ষা। যা সমাজ পরিবার ভেঙ্গে তছনছ করে দিচ্ছে। মানুষকে প্রতিনিয়ত মরন যন্ত্রনায় পতিত করছে। 

আমার শুধু মেয়েটাকে নিয়ে ভয় হয়। সারাক্ষন মেয়েটাকে যেভাবে বিশ্রি ভাষায় কথা বলে কোন , শালীন , ভদ্র পরিবারের মা, তার সন্তানের সাথে এমন ব্যবহার করে কিনা আমার জানা নাই।

কথায় আছে বোবার শত্রু নাই। কিন্তু এক্ষেত্রে পুরোটাই উল্টো। চুপ থাকলেও নিস্তার নাই। প্রতিনিয়ত এমন পরীক্ষায় পতিত হচ্ছি যে, কতোক্ষন উত্তর না দিয়ে থাকবা। কখন যেন মুখ ফসকে কি বের হয়ে যাবে, শুরু হবে ঝগড়া তাই আস্তে  করে বিছানা ছেড়ে বারান্দায় গিয়ে বসলাম। যদিও শীতের রাত , শীতের কষ্ট ও মশার কামড় উপলব্ধি হচ্ছে না। শুধু আল্লাহকে বলছি আল্লাহ আমার বাচ্চাটাকে তুমি রক্ষা করো, হেফাজত করো। আর ওর মাকে হেদায়েত দান করো। 

ওর এই অত্যাচারে আমি কয়েকবার অত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছি। সেটা কি ও ভূলে গেছে,  নাকি আমার মৃত্যূই ওর কাম্য। তা না হলে দুদিন একদিন পর পর কেন এমন করবে। 

মেয়েটা জোরে চিতকার করে কেদে উঠলো। আমার ভীতরটা কেমন যেন হয়ে গেলো। দৌড়ে ঘরে গেলাম, ভাবলাম মেয়েটার গলা টিপে ধরলো কিনা। ওর পক্ষে কোন কিছুই অসম্ভব নয়। মানুষ হলে তো অশান্তিই করতো না। আমি দেখলাম মেয়ে শুয়ে কাদছে আর ও পাশে বসা। মশারি উচিযে আমি মেয়েটাকে কোলে তুলে নিলাম। এই পর্যন্ত আমি সব শুনে যাচ্ছি কোন কথার উত্তর দিচ্ছি না। আমি মেয়েকে কোলে করে আমার কাধে মেয়ের মাথা রেখে ঘুম পড়ানোর চেষ্টা করছি আর বলছি , আম্মু কি হয়েছে কাদছো কেন ? ভয় পেয়েছো ? কোন ভয় নাই  ইত্যাদি ইত্যাদি ।

ওদিকে জান্নাত আমার আশপাশ দিয়ে ঘুরছে আর বিড়বিড় করে গালিগালাজ করছে যা , আমি পরিস্কার শুনতে পাচ্ছি। 

আমার সহ্য হলোনা। আমার ডান কাধে মেয়ে। তাই বাম হাত দিয়ে মারলাম কয়েকটা থাপ্পড়। থাপ্পড় খেয়ে খাটের উপর পড়ে গিয়ে বলে আমায় আর মারিশ না, আমায় মাফ করে দে, আর এমন করবো না। আমায় মাফ করে দে এমন ভাষা যাখন ছাড়লো তখন আরো দটো মারলাম। তখন আমার মনে হলো কতোটা দুষিত রক্তের  জন্ম হলে এমন ভাষা ব্যবহার করে এবং প্রতিনিয়ত কোন কারন ছাড়াই সংসারে অশান্তি করে। 

পরক্ষনেই দেখি জান্নাতের ঠোটে কিঞ্চৎ রক্ত। বুঝলাম দাতের সাথে লেগে ঠোট কেটে গেছে। খুব খারাপ লাগলো। জান্নাতকে কাছে টেনে বললাম-সরি। তুমি যা শুরু করেছিলে আমি নিজেকে সামলাতে পারিনি। 
 

Monday, December 13, 2021

কি বলবো, কি করবো ?

 

২৮.১১.২১ তারিখি আমার বস সন্ধ্যা ৭ থেকে সাড়ে ৭ টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন আমি অফিসে। বস আমাকে ফোন করে বললো। জাহিদী আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছি। আমার ভালো লাগছে না। জলদি করে আমাকে কোন হাসপাতালে নাও।

আমি তখন অফিসে বন্ধ করে ছুটে গেলাম বসের বাসায়। ড্রাইভারকে ফোন দিচ্ছি তিনি ফোন রিসিভ করছে না। তিনি বিকালেই বসের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় চলে গেছে। ড্রাইভারের বাসা অনেক দুর আশুলিয়া। 

আমি বসের বাসার সামনে যেতে যেতে বসের বড় ছেলেও আমাকে ফোন  করে বললো । আংকেল আব্বার শরীর খুব খারাপ । যত শিঘ্র পারেন একটি গাড়ির ব্যবস্থা করেন। আমাদের ড্রাইভার ফোন রিসিভ করছে না। যে যেমন পরিচিত আছে সবাইকে ফোন কারতে লাগলাম। 

হাসপাতালের একটা এম্বুলেন্স ব্যবস্থা হলো। এম্বুলেন্স আসলো তাকে হাসপাতালে নেয়া হলো। তখন প্রায ৯ টা বাজে। আমি আমার বাসায় ফোন করে বললাম , বস হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছি । আমার আসতে হয়তো একটু দেরি হতে পারে। 

জান্নাতের উত্তর এলো- যা খুশি তাই করে বেড়াও তুমি, বাসায় আসতে হবে না।

আমি কোন উত্তর না দিয়ে ফোন কেটে দিলাম। আর মনে মনে ভাবতে লাগলাম এটা কোন মানুষের ভাষা হতে পারেনা। আমি অফিসের কাজ ছাড়া একটা  মিনিটও বাইরে থাকি না। সেটা জান্নাত জানে তার পরও কেন  এমন ব্যবহার করলো খুব কষ্ট লাগলো। 

তারপর আবার বসের বাসা থেকে যখন কোন খাবার পাঠায়,  ওর জন্য জামা কাপড় কিনে পাঠায় তখন খুশিতে গদগদ হয়ে পড়ে । তাদের মতো ভালো মানুষ হয় কতো প্রশংসা। এইতো  এই মাসের প্রথম দিকের কথা। কক্সবাজার থেকে কতো কি এনে দিলো । অথচ তাদের অসুস্থ তার কথা শুনে যেখানে খারাপ লাগার কথা সেখানে উল্টো আমার সাথে খারাপ ব্যবহার।

আমি রাত ১২ টার দিকে আমার বাসায় ফিরলাম। আমার সাথে যে ব্যবহার করলো তা , লেখার কোন ভাষা আমার জানা নাই। আমি সকালে ভোর ৬ টার দিকে উঠে আবার হাসপাতালে বসের কাছে চলে গেলাম। কারন আমাকে বলে দেয়া হয়েছিলো যে, রাতে যে থাকছে সে সকালে চলে যাবে। আমি যেন ভোরে হাসপাতালে চলে আসি। 

বস ৩০.১১.২১ তারিখে হাসপাতাল থেকে রিলিজ নেন। এই তিন দিন প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৯টা, ১০ টা , ১১টা পর্যন্ত আমার হাসপাতালে থাকতে হয়েছে। এই তিনদিন জান্নাত আমার সাথে যে ব্যবহার করেছে তা হয়তো আমি কোনদিন ভূলবো না।

এছাড়া আমার আব্বা মারা যান ১২.১১.২১ তারিখ আমি ঐদিনই বাড়িতে রওনা করি। ১৭ তারিখ ঢাকায় ফিরে আসি। অনেক ব্যক্তিগত বিষয় আছে যা লিখতে লজ্জা লাগে কিন্তু । সহ্য করাও কিঠিন হয়ে যায়। স্বাভাবিক সবাই বুঝতে পারে তখন আমার মনের মনের অবস্থা কেমন ?

অথচ ১৮ তারিখ জান্নাত রাতে আমাকে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। আমি বলি এখন ওসব আমার ভালো লাগছে না। আমাকে একটু বিশ্রাম নিতে দাও। আর শুরু হয়ে গেলো । তুমি আমাকে একটু সুখ দিতে পারোনা। এক সপ্তাহ হয়ে গেছে কাছে আসোনা। আমাকে খুশি কারার যোগ্যতা তোমার নাই। ইত্যাদি। ওর এই মিথ্যা অপবাদগুলো আমাকে খুব যন্ত্রনা দেয়। কারন আমি জানি যখন ওর কাছে যাই তখন ও কি করে। পরক্ষনেই এক দিন পর এমন বাজে কথা বলতে থাকে। এটা নিত্য নৈমিত্তিক । প্রতি সপ্তাহে দু একবার এমন ভাষা আমার শুনতে হয়। এজন্য আমি ওকে কয়েক বার মারধর করেছি তারপরও মুখের কুরুচিপূর্ন ও অশ্লিল ভাষা বন্ধ হয়ে না। 

যেমন ১০.১২.২১ তারিখ ওর কাছে গেলাম। তারপর দুদিন খুব খুশি। আহ্বাদে গদগদ। ১৩ তারিখ রাতে আমি পেটের গ্যাসের কারনে রাতে ঘুমাতে পারছি না। খুব খারাপ লাগছে।একবার কাত হচ্ছি, একবার চিতহয়ে শুচ্ছি, আবার উঠে বসছি। 

গত একদিন ধরে দেখছি জান্নাত একা একা ভদভদ করে বেড়ায়, আমার কিছু ভালো লাগছে না। আমি অভিশপ্ত জীবন পেয়েছি, আমার দিকে কারো কোন খেয়ালই নাই। সারাদিন গরুর মতো একা একা খাটতে খাটেতে জীবন শেষ হয়ে গেলো। ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলো ওর নিত্য দিনের কথা।একদিন ভালো তো পরের দিন এমন আজে বাজে বকবে। আমার এক রুমের বাসা, একটা দুই বছরের বাচ্চা। আমার জামা কাপড় বেশির ভাগই আমি ধুযে থাকি। মাঝে মাঝে ও ধুয়ে দেয় যেদিন মন ভালো থাকে। কিন্তু সপ্তাহে দুইদিনের বেশি ওর মন ভালো থাকে না।আমি এমন খুব কম দেখেছি। শুধু ওর নিজের জামা কাপড়, মেয়ের কাপড় ধোয়া ও রান্না করা। আর দিনে একবার ঘড় ঝাড়ু দেয়। আর সবচেয়ে বড় কাজ হচ্ছে ফেসবুক নিয়ে পড়ে থাকা, আর ইউটিউবে সুলতান সুলেমান দেখা। আমি বাসায় গিয়েও দেখি ঔ সুলতান সুলেমান নিয়েই পড়ে আছে। আমি কিছু বলিনা, শুধু দেখি আর নিরব থাকি । কখনো কখনো রাতের আধারে শুধু চোখের জল মুছি। কি করবো পুরুষ মানুষ দিনের আলোয় , বা কারো সামেনে, কেদে মনটা হালকা করতে পারিনা।

তাই আমার যতই খারাপ লাগুক আমি কোন উত্তর না দিয়ে। চুপচাপ পড়ে থাকি না শোনার ভান করে। 

গত রাতে ১২ তারিখ রাতেও সেই একই ভান ধরলো, আমার শরীর জ্বলে যাচ্ছে, মেযেকে বলছে রাতে তোকে জানালা দিয়ে ফেলে দিতে মন চাচেছ। তখন আমি বললাম কি অবস্থা তোমার এগুলো কি ? এমন ব্যবহার করছো কেন মেয়ের সাথে ?

জান্নাত বললো- তোমার মতো অযোগ্য অপারগ পুরুষ মানুষের সাথে আমার কোন কথাই বলতে ইচ্ছা হচ্ছে না। তোমার ঘর করতে ইচ্ছা করছে না। আগে পরে ওর সাথে আমার কোন রকম তর্কবিতর্ক কিছুই হয়নি। আমাদের সাথে কোন রকম মনমালিন্যও হয়নি। কোনরুপ কোন কারন ছাড়াই এমন জগন্য জগন্য ভাষা আমার সহ্য হয়নি তাই দুচারটে চর থাপ্পর মেরে ওকে ঠান্ডা করলাম।

পরের দিন থেকে আমি নিজেই ওর সাথে ভালো মন্দ কথা বললাম, একটু আদর করার চেষ্টা করলাম, রাগ ভাভ্গানোর চেষ্টা করলাম। 

১৩ তারিখ আমি অফিসের কাজে ঢাকা থেকে সকালে ভোর ৬ টার দিকে কিশোরগঞ্জ রওনা করলাম ।  দিনে দিনে ফিরে আসতে হবে তাই খুব সকালেই রওনা করলাম। জান্নাত ঘুমিয়েই ছিলো । আমি ওকে দরজা লাগাতে বলে বেরিয়ে এলাম।

বিকালে ৫টার দিকে আমি জান্নাতকে ফোন করে বললাম আমি রওনা করেছি। রাস্তায় একটু জ্যাম আছে ঢাকায় ফিরতে ফিরতে হয়তো রাত ৯ টা বাজবে। 

জান্নাত বললো তুমি আর বাড়ি আসবানা। আমি দরজা খুলবো না। সত্যি করে বলছি আমাকে তো চেনো না। গাড়িতে আমার সাথে আরো মানুষ ছিলো তাই আমি ওর কথাগুলো হেসেই উড়িয়ে দিলাম। কিন্তু মনের দিকে থেকে ওর এই ব্যবহার কোনভাবেই আশা করিনি।

রাত সাড়ে ৯টায় বাসায় ফিরলাম। সেই পূর্বের মতোই ভদ ভদ করে বেড়াচ্ছে ঘর জুড়ে। আমি ওকে বিভিন্ন ভাবে যেখানে যেখানে গেছিলাম সেখানের গল্প বলে মন ভালো করানোর চেষ্টা করছি। উল্টো আমর উপর রেগে গেলো আমি কেন ওকে নিয়ে গেলাম না। 

আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম  এটা কোন ধরনের কথা । অফিসের কাজে গিয়েছি, অফিসের পিয়নসহ আরো একজন লোক সাথে ছিলো। 

আমি ওর সাথে আর একটিও কথা বললাম না। কোন মতে কিছু মুখে দিয়ে মেয়েকে কোলের মধ্যে নিয়ে বাতি নিভিয়ে শুয়ে পড়লাম। নিজের অজান্তেই চোখ দুটো জ্বলে ছলছল করতে লাগলো। 

আরেকটা বদঅভ্যাস আছে যেটা না বলেলেই না , আমি যখন খুব জরুরী কোন কাজে আটকে যাই। অথবা জরুরী কোন মিটিংয়ে যাই, কোন প্রোগ্রামে যাই তখন বার বার ফোন দিতে থাকে আর বলতে থাকে আমার খুব খারাপ লাগছে। মাথা ঘুরাচ্ছে, আমি উঠে বসতে পারছি না, মেয়েও যেন কেমন কেমন করছে ইত্যাদি ইত্যাদি। 

মনে পড়ে যায় সেই গানটার কথা - এ পৃথিবীর কেউ ভালো তো বাসেনা, 

                                                 এ পৃথিবী ভালো বাসিতে জানেনা।



Friday, October 22, 2021

23.10.2021



 গত ২১.১০.২০২১ তারিখ বৃহস্পতিবার জান্নাতকে টিকা দিতে নিয়ে যাই মিরপুর। টিকা দেয়া শেষ করে গিয়াস উদ্দিন ভাইয়ের টালিকো রেষ্টুরেন্টে লাঞ্চ করি। উত্তরায় ফিরতে ফিরতে ৪ টা বেজে যায়। উত্তরায় ফিরে একটু সময় অফিসে রেষ্ট নিযে এপেক্স থেকে ১৭৯০ টাকা দিয়ে জান্নাতকে একটি জুতা কিনে দেই। জুতাটি জান্নাত নিজে পছন্দ করে কিনেছে।

শুক্রবার ২২.১০.২১ সারাদিন বাসায় ছিলাম। সন্ধ্যায় বের হয়েছিলাম জান্নাতের জন্য ওষূধ কেনার জন্য।সাথে দুটো জামা নিয়ে বের হই । জামাদুটো চাপাতে হবে। এমন সময় মিলন ভাই ফোন করে। মিলন ভাই জরুরী তলব করে আমাকে। সাথে কপি ছবি নিতে বলে । তাই অফিসে গিয়ে এক কপি ছবি নিয়ে মিলন ভাইয়ের সাথে দেখা করি। মিলন ভাই একটা ফর্ম দেয় সেটা পুরন করে ছবিটা এটাচ করে দিই। ফর্মটি ছিলো উত্তরা ১নং আওযামীলীগের সদস্য ফর্ম। বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত সাড়ে নয়টা বেজে যায়। রাতটা খুব ভালোভাবেই কাটে। রাতে জান্নাত খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। আমি অনেকক্ষন  জেগে ছিলাম ঘুম আসছিলো না। 

সকালে ঘুম ভাঙ্গে জান্নাতের মোবাইলে নাটক দেখার শব্দে। তখনও চোখে ঘুম। জান্নাত বললো -এই খানে দরজাল প্রথম দুনিয়ায় এসে কি করবে ? কি বলবে জানো ?

আমি শুয়ে শুয়ে চোখ বন্ধ অবস্থায় বললাম- হমমম উনি প্রথম এসে তোমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলবে, তারপর বলবে একটা মজার নাটক চালাও দেখি। তোমার সাথে বসে নাটক দেখবে।

জান্নাত -আমার কথার কোন উত্তর দিলো না। মনে হয় নাটক দেখায় মনোযোগ দিয়েছে।

কিছুক্ষনপর অনুভব করলাম জান্নাত আমার গায়ের উপর শুয়ে পড়েছে। তখন বাজে সকাল নয়টা। জান্নাত বললো আমি রাতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম এখন আমাকে কিছু দিতে হবে। জান্নাতের কথা শুনে আমি ঘড়ির দিকে তাকালাম। দেখি নয়টা ১০ বাজে। আমি বললাম ছাড়ো অফিসে যাবার সময় হয়ে গেছে। আর পাশে মেয়ে শুয়ে আছে ওর ঘুম ভাঙ্গার সময় হয়ে গেছে।

জান্নাত- ও আমি একটু কাছে এলাম আর অফিসে যাওয়ার সময় হয়ে গেলো। 

আমি বললাম এটা তুমি আমাকে জিজ্ঞাসা ন করে ঘড়ির দিকে তাকাও। 

রাগান্বিত কন্ঠে চিৎকারের সাথে জান্নাতের কথা গুলো ছিলো এমন - তোমার কোন অনুভূতি নাই, তুমি হিজড়া হয়ে গেছো , তুমি অপারগ পুরুষ। আমাকে এক বিন্দু সুখ দিতে পারোনা। 

আমি বললাম সকাল বেলা তুমি কি শুরু করলা। এটা কোন কথা।

জান্নাত বললো যাও তুমি , তোমার সাথে কথা বলতেও আমার ঘৃনা হচেছ। আরো অনেক কথা যা প্রকাশ করা বা লেখা সম্ভব না।

জান্নাতের কথাগুলো শুনে আমার এতো পরিমান রাগ হচ্ছিলো যে, খুব তাড়াতাড়ি আমি ঘর থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু জান্নাতের মুখ থাকছে না। একপর্যায়ে আর সহ্য করতে না পেরে আমি জান্নাতকে দু চারটে চড় থাপ্পর মেরে না খেয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসি।


Tuesday, October 19, 2021

আনজুমা-২


 আজ সকালে ঘুম ভাঙ্গলো জান্নাতের মোবাইলে দেখা নাটকের শব্দে। আমি ঘুম ভাঙ্গতেই আনজুমাকে বললাম পাখিটা ওঠো সকাল হয়ে গেছে। আনজুমা খুব তড়িঘড়ি করে  পাশ ফিরে উঠে বসে আমার কপালে গালে হাত বুলিয়ে চুমু খেয়ে বলছে ওঠো পাখি ওঠো। আমার প্রান জুড়িয়ে গেলো। মেযের এমন আচরনে। উঠে দেখি টেবিলে প্লেটে ভাত তরকারী দিয়ে রাখা আছে। আমি দাত ব্রাশ করলাম । মেয়েকে ও ব্রাশ দিলাম। আনজুমা টুটপেষ্ট খেয়ে ফেলে, তাই বেবি পেষ্ট ব্রাশে মাখিয়ে দিয়ে যতটুকু ব্রাশ করানো যায়। এটা  দাত ব্রাশ করানোর অভ্যাস তৈরির চেষ্টা । অবশ্যই অভ্যাসটা তৈরিও হচেছ। খাওয়া দাওযা সেরে,  দুটো পানির পট নিয়ে আমি অফিসে রওনা করলাম। 
 লাঞ্চ করার জন্য বাসায় গেলাম। গোসল করে নামাজ পড়ে দুপুরের খাওয়া শেষ করতে না করতে জান্নাত বললো আমার খুব ঘুম পাচ্ছে। এখন ঘুমাবো।

আমি কোন কথা বললাম না চুপচাপ খেয়ে মেয়েকে নিয়ে খেলা করতে লাগলাম ।কারন আমার ঘুম আসছে কিন্তু মেয়ের ঘুম আসছে না । তাই আমি ঘুমিয়ে গেলে ও কি করবে। এমন সময় আমার মোবাইরে নটিফিকেশন আওয়াজ হলো। জান্নাত পাশ ফিরেই বললো -মানুষকে তিলে তিলে মারায় তুমি ওস্তাদ। এক তিল শান্তি নাই সংসারে। আর এই একটা বেজাত জন্মাইছে। ওর জন্যও কোন শান্তি নাই। 
আমি কোন উত্তর না দিয়ে । আসরের নামাজের জন্য তৈরি হলাম। নামাজ শেষ করে আবার অফিসে রওনা করলাম।

আমার মেয়ে -১

 আমার মেয়ের মতো মেয়ে কোটিতে হয় কিনা সন্দেহ। আমার মেয়ে বলে বলছি না। আমার বয়সে অনেক বাচ্চা আমি দেখেছি। আত্ময় স্বজনের মধ্যে , বন্ধু বান্ধবের মধ্যে। কিন্ত আমার মেয়ের মতো এতো শান্ত শিষ্ট বাচ্চা আমি দেখিনি। ওর ক্ষুধা না পেলে ও কাদে না। তাও আবার খুব বেশি ক্ষুধা পেলে কাদে । সারাদিন একা একা খেলা করবে। নিজের মতো নিজে খেলানা নিয়ে মনের আনন্দে হইচই করতে থাকবে। উচ্চস্বরে নিজের ভাষায় কিযে গাইতে থাকে তার মাথা মুন্ডু কিছুই বুঝার সাধ্য আমার নাই।অথচ এই মেয়ের সাথে সারাক্ষন খেচখেচ করতেই থাকে জান্নাত। অফিসে থেকে বাসায় ফিরে প্রতিদিনই আমার শুনতে হয়। মেয়ের অত্যাচারে জান্নাত নাকি অতিষ্ট। অথচ আমি যতক্ষন বাসায় থাকি মেয়ে ততক্ষন আমার সাথে কতো সুন্দর খেলা করে। আহ্লাদ করে। দৌড়ে এসে গালে চুমু দিয়ে যায়। কোলে রাখতে চাইলে কোলে থাকতে চায় না। ঘরে ছুটা ছুটি খেলা ধুলা করতে চায়। 

রাত যতই হোক আমি বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত ওর ঘুম আসেনা। ওর মা অনেক বকাঝকা করে মাঝে মাঝে ঘুম পড়ায়। আমার হাতের উপর মাথা রেখে অথবা ওর মায়ের দিকে মাথা আর আমার বুকের উপর পা তুলে না দিলে মেয়ের ঘুমই আসে না। 

মেয়েটার একটু সমস্যা আছে ।

19.10.2021

 

গতকাল দুপুরের কথা । আমি বাসায় গিয়ে মেয়েকে গোসল করিয়ে। ঘরে বসে বসে মো্বাইল টিপছি।জান্নাত আমার সামনে দিয়ে ঘুরছে আর বলছে আমি একটু ফেসবুকে হায় হ্যালো করেছি তাতে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গেছে ।যত অত্যাচার সব আমার উপর বলে মেয়ের মাথায় একটা খোচা মেরে বলছে তুই পেটে এসেই আমার সর্বনাশ করেছিস। তোর জন্য মুখ বুজে সব সহ্য করছি। তুই হচ্ছিস সব নষ্টের গোড়া।  আমি আমি চুপচাপ সব শুনছি কোন কথার কোন উত্তর দিলাম না।বুঝতে পারছি অশান্তি করার জন্য ওর শরির কামড়াচ্ছে। এমন সময় ওয়াস রুমের কাছে গিয়ে জান্নাত চিৎকার করেে উঠলো এই এদিকে আসো। আমি এগিয়ে এসে বললাম কি হয়েছে। 

জান্নাত -আমার কাপড়ের বালতিতে পানি দিয়েছো তুমি ?

হ্যা আমি দিয়েছি। শুকনো কাপড় বালতির ভিতর, তারপর এতোখানি ভালো পানি ফেলে দেবো তাই বালতির মধ্যে ঢেলে দিয়েছি।

জান্নাত- তোমার সাথে সংসার করার মতো কোন পরিবেশ নাই।

আমি হতবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম। এই কারনে এই কথা আসে কিনা আমার জানা নাই। বলে চুপ হয়ে গেলাম।

জান্নাত কতক্ষন একা একা যা খুশি বলে গেলো অনুরুপ ভাবে। আমি চুপচাপ বসে মেয়েকে নিয়ে খেলা করছি। যেন কিছুই শনছি না বা কিছুই হয়নি।

বিকাল ৪টার দিকে জান্নাত বললো ডাক্তারের কাছ যেতে হবে। আমি কোন প্রশ্ন না করে বললাম রেডি হও। ডাক্তার দেখিয়ে মেয়েকে এবং ওকে নিয়ে রাত ৮ টা পর্যন্ত আমরা রাস্তায় রাস্তায় হাটলাম ঘুরলাম। 

রাতে ঘুম সকালে উঠে অফিসে রওনা করলাম। দুপুরে বাসায় ফিরে জান্নাতরে করোনা টিকার নিবন্ধন করলাম। আমি গোসলে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি। তখন আড়াইটা বাজে। আমি লুঙ্গি নিয়ে ওয়াসরুমে ঢুকবো । ঘরে তাকিয়ে দেখি জান্নাত খেতে বসে গেছে। আমি গোসল শেষ করে এসে খেতে বসলাম। ততক্ষনে জান্নাত খাওয়া শেষ করে মোবাইলে নাটক দেখতে বসেছে। আমি খাওয়া দাওয়া শেষ করে একটু শুয়ে পড়লাম। বেলা  সাড়ে ৪টার দিকে উঠে বাতাবি লেবু নিয়ে বসলাম।তখনও জান্নাত মোবাইলে নাটক দেখছে। আমার ঘরে রেকসিনের সোফা। আমি সোফায় বসে বাতাবী লেবুর খোসা ছাড়িয়ে সোফার উপর রাখছি আর লেবুর কোয়াগুলো প্লেটে রাখছি। বলে রাখছি এটা লেবুর উপরের মোটা খোসা না, ভিতরের সাদা খোসাটা্ । মেয়ে আমার সাথে লেবু ছেনছে। এমন সময় জান্নাত আমাকে উদ্দেশ্যে করে বলছে । কি করছো তুমি ? খুব গম্ভির গলায়।

আমি কিছু বলছি না। কারন ওর কথার টোনটা ভালো মনে হলোনা। আমার কাজ আমি করছি।

আবার জান্নাত বললো আমার কথা শোনোনি ?

আমি বললাম কি হয়েছে ? এমন করছো কেন ?

জান্নাত- খোসা তুমি সোফায় রাখছো কেন ?

আমি বললাম এটা ভেজা কিছুনা যে, সোফায় লেগে নষ্ট হয়ে যাবে। এগুলো ফেলে একটা মোছা দিলেই পরিস্কার হয়ে যাবে। 

শুরু হয়ে গেলো বকবকান। আমি আর কোন উত্তর দিলাম না। মেয়েকে নিয়ে লেবু ছাড়ানো শেষ করে। সোফা পরিস্কার করে। হাত ধুয়ে এসে জানলায় টাঙ্গানো পুরানো গামছা নিয়ে হাত মুছলাম। 

জান্নাত আবারও খেকিযে উঠলো- এই গামছা ধরলা কেনো ? ঐখানে চেয়ারে একটা গামছা আছে না ? 

আমি কোন উত্তর দিলাম না। কিন্তু জান্নাতের মুখ বন্ধ হলো না। মেয়েকে উদ্দেশ্যে সেই আগের মতো বলতে শুরু করলো। ১৫ মিনিটের মতো একা একা এমন আজে বাজে কথা বলতে শুরু করলো। আমার জীবনটা শেষ করে ফেলছে। জানিনা কোন পাপে এমন কুলাঙ্গারের ঘরে আল্লাহ আমারে পাঠিয়েছে। একটা অমানুষ, এক বিন্দু সময়ও শান্তিতে থাকতে দেয় না। ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি কোন কথার কোন উত্তর না দিয়ে চুপ চাপ সব শুনছি আর আফিসে আসার জন্য জামা প্যান্ট পরছি। মেয়েকে একটু আদর করে বেরিয়ে এলাম অফিসের পথে।

এই দুইদিন যে এমন করছে তা নয়। প্রতিদিন কোন কারন ছাড়াই এভাবে যা না তাই বলা শুরু করে। 

১৫ তারিখে ওকে নিযে বের হয়ে ওর ইচ্ছা মতো ওকে কাপড় কিনে দিলাম। ১৬ তারিখ সন্ধ্যা ৭টার সময় বলছে । চলো টঙ্গি বাজারে যাবো প্লাজু কিনতে। আমি বললাম এখন যেতে যেতেই সাড়ে আটটা নয়টা বেজে যাবে। এখন কিভাবে যাবো। আগামী কাল ৪টার  দিকে যাবো। 

আমি অফিসে থেকে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে মেয়েকে খাওয়ালাম। জান্নাত খাওয়া শেষ করে বলছে এখন একটু ঘুমাবো। আমি কিছু বললাম না। ও ঘুমিয়ে পড়লো। সাড়ে ৫টার দিকে উঠে বলছে টঙ্গি বাজারে যাবানা। 

আমি বললাম এতক্ষন মনে ছিলোনা। গতকালকে বলে রাখছি যে, ৪টার দিকে যাবো। আর এখন সাড়ে ৫টায় তুমি এই কথা বলছো। তোমার রেডি হতেই তো এক ঘন্টার বেশি লাগে। 

কে শোনে কার কথা জান্নাত সব দোষ আমার কাধে চাপিয়ে বলছে। জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে গেলাম একটা কাজ যদি ঠিক মতো করতে পারে। আমার কপালে যে, কেন এমন হলো। কোন কথায় কান না দিয়ে আমি বললাম রেডি হও। 

সেখান থেকে মার্কেট করে ফিরলাম রাত ১০টার দিকে। আমি মাজায় খুব ব্যাথা পেয়েছি। মেয়েটা তেমন হাটতেই চায়না্ শুধু কোলে কোলে।ওর বয়স ২বছর ৩মাস। আর কোলে তো নিতে হয় আমার । আর যদিও হাটতে চায় , সব জায়গায় তো ছেড়ে দেয়া যায় না। রাস্তায় গাড়ির যে চাপ। এই পর পর চারটে পাচটা দিন মেয়েকে কোলে কোলে রাখতে রাখেতে আমার অবস্থা কাহিল। তারওপর যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন তো খুব কষ্ট হয় । আর জান্নাতের ভাষ্য হলো মেয়ে ঘুমিয়ে আছে বিরক্ত করছে না , চলো ঐ মার্কেট থেকে  একটু ঘুরে আসি। ঐটা শেষ হলে চলো পাশের টায় যাই। এর মধ্যে মেয়ে েএকবার ঘুম ভেঙ্গে আবার ঘুমিয়ে পড়ে।

Sunday, October 10, 2021

10.10.2021

 

১০ সেপ্টম্বরের পর থেকে আমি জান্নাতের সাথে তেমন কথা বলিনি। যতটুকু দরকার ততোটুকু। কিছু বললে উত্তর দিয়েছি। না বললে আমিও চুপ থেকেছি। এভাবে ৭/৮ দিন পার হবার পর অফিসে আসার সময় জান্নাত আমাকে জড়িয়ে ধরে কাদতে কাদতে বললো আমাকে মাফ করে দাও। আমি বললাম তোমাকে আমি মাফ করে দিয়েছি কিন্তু আল্লাহ মাফ করবে কিনা জানিনা। 

এভাবেই দিন চলতে লাগলো কিন্তু থেমে নেই জান্নাতের মুখের কর্কশ ভাষা। আমি কোন উত্তর দেই না, না শোনার ভান করে থাকি। যেমনঃ ৮ অক্টোবর দুপুরে আমি মেয়েকে নিয়ে ঘরে বসে আছি। 

জান্নাত ডাকলো একটু এদিকে আসবে ? আমি ডাক শুনে রান্না ঘরে গেলাম। আমাকে দেখে জান্নাত বললো সিঙ্ক থেকে পানি নামছে না। আমি বললাম হয়তো ময়লা জমে পাইপ বন্ধ হয়ে গেছে তাই পানি যাচ্ছে না। 

জান্নাত বললো তোমর লজ্জা করে না। একথা বলতে । পানি যচ্ছে না দেখে দিবা। লজ্জা করা উচিত তোমার। 

আমি কোন কথা বললাম না। আবার ঘরে চলে এলাম। জান্নাত রান্নাঘর থেকে বের হলে, আমি গিয়ে পাইপটা পরিস্কার করে দিয়ে ঘরে এসে আবার মেয়ের সাথে খেলায় মাতলাম।

৯ অক্টোবর আমার বস ঢাকার বাইরে যাবে। তাই ঐদিন সকাল সাড়ে ৬ টায় আমি না খেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আসি। বসকে গাড়িতে রওনা করিয়ে দিয়ে আমি বাজারে যাই। কারন জান্নাত বেশ কিছু দিন ধরে বলছে শৈল মাছ,  ফলি মাছ এবং চান্দা মাছের কথা। তাই ভাবলাম আজকে একটু সময় পেয়েছে যাই বাজারে গিয়ে মাছ কিনি। তিনটা বাজার ঘুরে শৈল মাছ পেলাম না, ফলিমাছ এবং ছোট ছোট চান্দা মাছ পেলাম। হাফ কেজি চান্দামাছ, এক কেজি ফলি মাছ কিনলাম। 

বাসায় ফিরে বুঝলাম আমি অনেক বড় অপরাধ করেছি মাছ নিকে। একদিন আগে পুটি মাছ কিনেছিলাম। এবং বলেছিলাম মাছ ফ্রিজে রেখে দাও । পরে সময় সুযোগ করে কুটে নিও। আজ সেই পুুটি মাছ কুটছে। ভাষাগুলো ছিলো এমন আমারে মানুষ মনে হয়না। এভাবে কষ্ট দেয়ার চেয়ে একবারে মেরে ফেলো। শুধু মেয়েটার জন্য মুখ বুজে সব সহ্য করছি। না হলে কবেই সব ছেড়ে চলে যেতাম।

আমি বললাম তুমি বেশ কয়েকদিন ধরে বলছো এই মাছ গুলোর কথা তাই এই মাছগুলো আনছি। সব সময় এই মাছ পাওয়া যায় না, এমনকি আমিও ঠিকমতো সময় সুযোগ পাইনা বাজারে যাওয়ার।আচ্ছা ঠিক আছে আর আনবো না। 

তখন আনুমানিক ১২টা বাজে।সকাল থেকে আমি না খাওয়া। যাই হোক কাপড় চেঞ্জ করছি। এমন সময় জান্নাত আবার বললো ঘরে খাবার কিছু নাই, ভাত রান্না করিনি। মুড়ি আছে মিষ্টি আছে ওগুলো খাও। আমি কিছু না বলে চুপচাপ মুড়ি খেয়ে খাটে শুয়ে রইলাম।দুইটার দিকে নিজে গোসল করলাম মেয়েকে গোসল করালাম। 

জান্নাতের মাছ কোটা শেষ , জান্নাত এসে বিছানায় শুয়ে পড়ে বলছে। অনেক কষ্ট হয়ে গেছে এখন একটু ঘুমাবো।আমি কিছু বললাম না, চুপচাপ শুয়ে আছি। বুঝলাম কোন উত্তর দিলেই ঝগড়া শুরু করবে। দুপুরের ভাত যখন খেতে বসলাম কখন আসরের আযান দিচ্ছে। খেয়ে একটু আবার শুয়ে পড়লাম। মেয়েটা জান্নাতের কাছে গেলেই ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে, গালিগালাজ করছে। আমি মেয়েটাকে বললমা আম্মু আমার কাছে আসো বলে মেয়েকে কোলের মধ্যে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।

ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে, যাই হোক উঠে বাইরে বের হলাম , চাউল কেনার জন্য। রাত সাড়ে ৯টার দিকে চাউল, দুটো লাইট, ও জান্নাতের জন্য ফুচকা নিয়ে বাসায় ফিললাম। জান্নাত ফুচকা খাচ্ছে আমি ছোপায় বসে মোবাইল টিপছি, জান্নাত বললো ফুচকা খাবা আমি বললাম না খাবো না।

ফুচকা খাওয়া শেষ করে জান্নাত বললো , আসো লুডু খেলবো। খাটে ওঠো। আমি খাটে গিয়ে বসলাম। জান্নাত আবার বললো মোবাইল রাখো। আমি বললাম তুমি তো এখনো খাটেই ওঠোনি, রেডি করো। জান্নাত খাটে উঠে বসে লুডু মেলছে। এমন সময় আমি মোবাইলে একটি ছবি দেখে হেসে ফেললাম। 

আমার হাসি দেখে জান্নাত বললো তোমার লজ্জা করে না , হাসছো্। আমি শুধু অবাক নয়, হতভম্ব হয়ে বললাম কেন ? আমি হাসলে তোমার সমস্যা কোথায় ?

জান্নাত বললো নিজেকে প্রশ্ন করো। 

আমি বললাম , কারনটা তুমি বলো, যদি তুমি জানো। 

জান্নাত বললো- তুমি ফিডার খাও নাকি ? কিছু বোঝনা, না বোঝার ভান করো। 

আমার সাথে জান্নাতের  কোনরুপ কথা কাটাকাটি বা অন্য কিছুই হয়নি তারপর মুখ বুজে থেকেও প্রতিনিয়ত এ ধরনের কথা শুনতে আমার খুবই খারাপ লাগছে। তাই আমি জানোয়ার , কুকুর, বেয়াদব, ইত্যাদি বলে নিজের মতো নিজ আবার চুপ হয়ে গেলাম। 








Tuesday, October 5, 2021

০৫.১০.২১

 ০৫.১০.২১

কিযে করি ভেবে পাই না।

জান্নাতের আচরণ স্বভাব বদলালো না। একমাসও কাটেনি সেই দুর্ঘটনার ।

প্রতিদিন ফোন করে কখন বাসায় আসবা ? আজকেও দেরি হবে ? এই দুটি প্রশ্ন প্রতিদিন একশ বার করে ‍শুনতে হয়। আর কতো সহ্য করবো ?

আব্বার অবস্থা খুব খারাপ, ডাক্তার বলেছে আর আশা নাই। বাড়িতে নিয়ে যান। তারপরও ভাইয়া বললো যতক্ষন থাকে হাসপাতালেই থাকুক। আব্বার রক্ত বমি হচ্ছে। প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে নতুন নতুন দুঃসংবাদ আসছে। মনের অবস্থা খুবই খারাপ।

আমার অফিসেও প্রচন্ড চাপ। টেনশন আর ভারাক্রান্ত মনে কোন রকম কাজ করছি। ভূল হলেও বকা শুনছি না হলেও বকা শুনছি। মাঝে মাঝ মনে হচ্ছে বাথরুমে গিয়ে একটু কেদে আসি। 

কোন কষ্টই কষ্ট হতো না , যদি ঘর ঠিক থাকতো। কিন্তু আমার এতোটাই খারাপ কপাল যে, ঘরের যন্ত্রনাই আমাকে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছে।

বাইরের সকল ঝুট ঝামেলা সামলে মনটাকে শক্ত করে যখন বাসায় ফিরি তখন শান্তির ঘুম ঘুমানোর আশায় যখন বিছানায় যাবার মতো সৌভাগ্য আমার হয় না। সারাদিন খেয়ে না খেয়ে যার জন্য জীবন শেষ করছি। বাসায় গিয়ে তার পোড়া মুখ দেখতে হয়। কোন কারন ছাড়াই নানান কথা । বালিশে মাথা রেখে সুখের নিদ্রা তো দুরের কথা কষ্টে বুকটা ফেটে যায়। দুচোখর পাতাই বন্ধ হয়না। কখনো কখনো বুক ফেটে কান্না আসে। 

যদি এমন হতো যে, বছরে দু একবার এমন ঘটনা তাহলে হয়তো মনকে শান্তনা দেয়া যেতো কিন্তু আল্লাহর দিন কোনটা বাদ নাই। যদিও দু,একদিন ভালো থাকে তারপর শুরু হয় আরো ভয়ানক পরিস্তিতি। চারটে বছরে ৬ মাসও ভালো কাটেনি। মেয়েটার উপরও যেভাবে অত্যাচার করে তা বলার না। দুধের বাচ্চাকে যা না তাই বলে গালি দিতে থাকে।

মেয়েটার ভবিষ্যত চিন্তা করলে শরীরটা ঠান্ডা হয়ে যায়, ভিজে যায় দুচোখের পাপড়ি।



Thursday, September 16, 2021

ব্যবহারই পরিচয়





একজন মানুষের ব্যবহার তার অনেক বড় সম্পদ। ব্যবহার দিয়ে মানুষ অনেক উপরে যেতে পারে , আবার ব্যবহারের কারনেই উপর থেকে নীচে নেমে যেতে ও সময় লাগে না। ব্যবধান শুধু ভালো আর মন্দর।

আপনি নিজের জায়গা থেকে বিচার করে দেখুন। মানুষের মুখের ব্যবহার বা ভাষা মানুষেকে প্রভাবিত করে, উৎসাহিত করে আবার ভূ-পাতিত করে। 

হয়তো লেখাটা পড়ার পরে সবার মনে পড়ে গেছে , জীবনে ঘনে যাওয়া ভালো মন্দ ব্যবহারের কথা। 

ছোটবেলা থেকে শুরু করি। আমরা যখন স্কুল বা কলেজে পড়েছি । তখন কোন এক শিক্ষকের ক্লাসে যেতেই ইচ্ছা হতো না, স্কুল জীবনে কোনো কোনো শিক্ষকের ক্লাস হয়তো  ঘুমিয়েই পার করে দিয়েছি। কোনো কোন শিক্ষকের ক্লাস থেকে পালিয়ে যেতাম আবার কোনো কোনো শিক্ষকের বিদায় বেলায়, চোখের জলে বুক ভাসিয়েছি। শিক্ষক পেশাটা যেমন মহান তেমনি সম্মানেরও তাই তাদের কথা না হয় থাক।

বন্ধুদের আড্ডায় সামান্যে কথা নিয়ে অনেক মধুর বন্ধুত্ব নিমেষেই শত্রুতে পরিনত হয়েছে। ভাই-ভাই সম্পর্ক ভেঙ্গে শত্রুতে পরিনত হয়েছে এমন নজীর পৃথিবীর ঘরে ঘরে। বেশির ভাগ সংসারে ব্যবহারের কারনেই স্বামী-স্ত্রী বছরের পর বছর বিবাদ লেগেই আছে।

ধরুন আপনি কোন  ভালো কাজে যাচ্ছেন, হঠাৎ দেখলেন রাস্তায় জটলা  ২০/২৫ জন মানুষের একটু এগিয়ে গিয়ে দেখলেন একজন ভদ্রলোককে বেধে রাখা হয়েছে। 

Tuesday, September 14, 2021

১৪ই সেপ্টম্বর ২০২১

 14

১৪ই সেপ্টম্বর ২০২১



আজ ৪ দিন হয়ে গেলো । শ্বশুর বাড়ির থেকে কারো কোন খবর এলো না। কেউ আসছে কিনা তাও জানালো না। বার বার আমি ফোন করছি যে , আসবেন না, আসবেন না। 

তাই আজ সকালে সাড়ে দশটার দিকে আমি আমার শ্বশুরকে ফোন করলাম বললাম। আপনাকে এমন ভাবে বলার পরেও আপনারা কেউ এলেন না। আজ ৪ দিন চার দিনে অনেক কিছু হয়ে যেতে পারে। যাই হোক আমার বোঝা হয়ে  গেছে আপনি ওর কেমন বাপ। 

শ্বশুর কিছু বলতে চেষ্টা করছে, বলছে শোনো, আমার কথা শোনো ।

আমি তাকে বলার সুযোগ না দিয়ে বললাম, আপনি আমার কথা মন দিয়ে শোনেন। ফোন করেছি আমি  আমার কথা বলার জন্য। আপনার কিছু বলার দরকার হলে আপনি আমাকে এই চার ‍দিনের ভিতর  একবার হলেও ফোন দিতেন। উনি চুপ হয়ে গেলো।

আমি বললাম আমার কথা মন দিয়ে শোনেন - আপনারা বুলেট লাগার পর , বুলেটপ্রুপ জ্যাকেট দিবেন, দম বন্ধ হযে যাবার পর অক্সিজেন দিবেন। এটা হাস্যকার । আমার যা বোঝার বোঝা হযে গেছে। এখন আমার কথা মন দিয়ে শোনেন, ভুলে যেয়েন না।

এক- আমার বাসায় আপনাদের কারো আর আসতে হবে না, আর কখনো  আসবেন না।

দুই - আমার বাড়িতে আপনার বাসার কারো কোন ফোন কল কোন দিন যেন না আসে।

তিন- আমার পরিচয় দিবেন না।

চার- জান্নাতের যদি কখনো মনে হয়ে সে তার পাতানো বাপ-মাকে দেখবে। সে চলে যাবে আমি তাকে আটকাবো না।

আমি আপনাদের অত্যাচারে পাগল হয়ে গেছি।আমি যা বলছি তার উল্টো হলে যদি কিছু বলি তখন আবার  বইলেন না যে, জামাই বেয়াদব। আমার কথা শেষ। আপনার সাথে আমার আর কোন কথা নাই। বলেই ফোন কেটে দিলাম।


Sunday, September 12, 2021

১০ই সেপ্টম্বর ২০২১



 ১০ই সেপ্টম্বর ২০২১ অফিসে থেকে বাসায় ফিরে দুপুরে খেতে বসেছি। হঠাৎ জান্নাত বললো - তোমার মা আমার সাথে বেয়াদবী করেছে। সে বেয়াদব।শুনেই আমার রক্ত টগবগ করে ফুটে উঠেছে। নিজেকে সামলে নিয়ে , কষ্টটা বুকের ভিতর চাপা দিয়ে । নরম শুরে বললাম-একথা কিভাবে বলো তুমি। মুরব্বিদের সম্পর্কে এমন কথা বলা কি উচিত। 

জান্নাত রাগান্বিত স্বরে- বললো কি বলবো, জানো এক বিয়ে বাড়ি গিয়ে আমাকে একটা মেয়েকে দেখিয়ে উনি বলেছিলো । দেখো বউ - এই মেয়ের মা , এর জন্য - জাহিদীর সাথে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলো। একথা বলে, ঐ মেয়েকে দেখিয়ে আমাকে অপনাম করা হযেছে। আমাকে ছোট করা হয়েছে।

আমি বললাম দেখো এটা অতি স্বাভাবিক ব্যাপার। যেকোন বাবা-মা ছেলে মেয়েকে নিয়ে এমন কথা বলতেই পারে এটা কোন মান অপমানের কথা না।

জান্নাত-ও তোমার তো মা, তাই তার কোন কথাই তোমার খারাপ লাগে না। আমি তো পরের মেয়ে তাই আমার কথা খারাপ লাগে।

আমি বললাম- তুমি যা বলছো , ঠিক বলছো না। ভালোভাবে কথা বলো।

জান্নাত-আমি তোমার আপন নাকি উনি তোমার আপন।

আমি বললাম -আজব কথা, আমার মা সে আমার পর, আর তুমি আমার আপন। যে মেয়ে বা বউ স্বামীর বাবা-মা নিযে এমন বাজে মন্তব্য করে এবং তাদের সম্মান দিয়ে কথা বলতে জানেনা সে মেয়ে কোন বৈধ বাব-মার সন্তান হতেই পারেনা।

আমি আর কোন কথা বললাম না। এভাবে রাত কেটে গেলো।

যে বিয়ের কথা জান্নাত বলছে সেই বিয়ে আনুমানিক ২ বছর বা তার আগের ঘটনা। আমি ঠিক বুঝলাম না সেই কথা এখন তুলে সংসারে অশান্তি করার কি মানে আছে। সম্ভবত অশান্তি করার একটা ইস্যু ..............।

আরেকটা কথা আমার বাবা-মা নাকি ওকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দিয়েছ। বিষিয়ে দিয়েছে ওর জীবন।এখানে কথা হলো ও আমার বাব-মার সাথে একত্রে ২মাসও এক ছাদের নিচে থাকেনি। তাহলে তারা কিভাবে তাকে জ্বালা যন্ত্রনা দিলো। আমি ওর ফোনে অটো কল রেকর্ড করে রেখেছিলাম । যেখান থেকে কিছু কথা শুনে পরিস্কার জানতে পারি ও এবং ওর পরিবার মিলে প্রতিনিয়ত মিথ্যা কথা সাজায়ি থাকে যা কখনো কোন দিন ঘটেনি।

 সকালে উঠে কোন কথা না বলে কোন রকম নাস্তা সেরে অফিসে চলে এলাম। আনুমানিক ১২টার দিকে জান্নাতের ফোন পেলাম। ফোন রিসিভ করতেই ও বললো কোথায় ?




আমি বললাম অফিসে। 

জান্নাত- আজকে বাসায় আসবা না। বাসায় এলে তোমাকে খুন করবো। মেয়েকেও খুন করবো। আরো অনেক বিশ্রি বিশ্রি গালিগালাজ, তু্ই তোকারি করতে লাগলো। আমি চুপ করে শুনতে লাগলাম। অফিসে আছি কোন উত্তর ও দিতে পারছি না। মানসম্মান ঠোটের আগায়। 

সবশুনে জানলাম আমাদের বিয়ের আগে ২০১৬ সালের ফেব্রুুয়ারী মাসে সম্ভবত আমার ফেসবুক আইডি থেকে একটি মেয়ের ছবি শেয়ার করা আছে। আর এজন্য ২০২১ সালের ১১ সেপ্টম্বর এসে আমার ঘরের মানুষের কাছে অপমানিত হতে হলো।  আমি কাদবো নাকি , আত্মহত্যা করবো বুঝতে পারছি না। কষ্টে বুকটা চৌচির হয়ে যাচ্ছে। চোখ দুটো ছলছল করছে, নিজেকে চরমভাবে ঘৃনা হতে লাগলো। এমন সময় কি ভেবে মাথায় এলো ইভার নাম। ইভা হলো জান্নাতের ফুফাতো বড় বোন। তাকে কোন ঘটনা না বলে বাসায় আসার অনুরোধ জানালাম। প্রথমে সে অস্বিকার করলেও পরে রাজি হলো এবং আমার বাসায় এলো।ইভা আপা জান্নাতের কাছ থেকে সবঘটনা শুনলো, আমি ইভা আপাকে রেকর্ডিং শুনালাম। সে সব বুঝে জান্নাতকে দুই তিন ঘন্টা ধরে বুঝালো, বুঝানোর সারমর্ম ছিলো  এমন, জান্নাত তুই এই সকল ফালতু বিষয় নিয়ে সংসারে অশান্তি করিস কেন ?

জান্নাত নানাভাবে ঘুরিয়ে পেচিয়ে ইভা আপাকে কনভেন্স করার চেষ্টা করলো কিন্তু । ইভা আপা মন্দকে মন্দ ভালোকে ভালোই বলতে লাগলো।

পরক্ষনেই আমি কি যেন মনে করে ইভা আপাকে বললাম, আপা ও আমাকে এতো সন্দেহ করে কেন ? কোনদিন আমার কোন সমস্যা ওর চোখে পড়েছে , শোনেন তো । এবং ওর মোবাইলটা একটু দেখেন।আমার মোবাইল ও সবসময় ঘাটাঘাটি করে , আমি তো কখনো ওর মোবাইল ছুয়েও দেখি না। আজকে আমি আপনার সামনে ওর মোবাইলে  দেখতে চাই। অনেক জোর কারার পর ইভা আপা বললো , দেখি তোর মোবাইল দেখা। প্রথমে দেখাতে চাইলো না , পরে ইভা আপার হাতে ওর মো্বাইলটা দিলো। ইভা আপা মোবাইল হাতে নিয়ে বললো আমি তো এসব বুঝি না। তখন আমি ইভা আপার হাত থেকে মোবাইলটা নিলাম । ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ড়ুকেতো আমার চোখকে বিশ্বাস হচ্ছিলো না। দশ তেকে বারো জনের সাথে বিভিন্ন আপত্তি কর কথা বার্তা। ইভা আপার মুখ থেকে কোন কথাই বের হচেছ না। আমি মেসেঞ্জারের কথা পড়ে শুনাচ্ছি আর ইভা আপা শুনছে। একপর্যায়ে আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে , উঠে জান্নাতকে মারধর শুরু করলাম। ইভা আপা থামাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। আমি রাগে ক্ষোভে ওকে যথেষ্ট মারধর করি। মোবাইলটা ঘরের ফ্লোরে আছাড় দিয়ে ভেঙ্গে ফেলি। ইভা আপার অনুরোধে তারপর আমি ওকে আর কিছু না বলে চুপচাপ থাকি। এবং ইভা আপা ওকে ওর বাড়ি নিয়ে যেতে চায় আমি প্রথমে রাজি না হলেও পরে বলেছে, নিয়ে যান ওকে আমি আমার চোখের সামনে দেখতে চাই না। 

ইভা আপার সামনে আমাকে ধোকাবাজ, লুচ্চা, বাটপার, বেঈমান বলে গালি দিয়েছিলো, অবশেষে প্রমান হয়ে গেলো জান্নাত কতোবড় মাপের মিথ্যাবাদী। শুধু জান্নাত নয় ওর পরিবারের সবাই প্রচন্ড মিথ্যা কথা বলে।

ইভা আপা আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করতে গিয়ে বললো, ভাইয়া এটা শুধু হায় হ্যালো করেছে, প্রেম করেনি। 

আমি বললাম এটা যদি হায় হ্যালো হয় , .............................

আমি অমানবিক নির্যাতন ও যন্ত্রনা সহ্য করছি শুধু আমার মেয়েটার মুখের পানে চেয়ে। আমি যদি কোন বড় সিদ্ধান্ত নিতে যাই । মেয়ের মুখটা চোখের সামনে ভাসে।ভাবি মেয়েটার ভবিষ্যত অন্ধকার হযে যাবে।আমার ত্যাগ তিতিক্ষা দুর্ভোগ,কোন কিছুই মেযেটা জানবে না। আমাকে ভূল বুজবে সারা জীবন। এক কথায় মেযেটাকে অনিশ্চিত ভবিষ্যেতের দিকে ঠেলে দেয়ার কথা আমি ভাবতে পারিনা। তাই নিরবে একা একা চোখের জল ফেলা চলেছি। .............................................................................................

জান্নাতের পরিবার যে কিছু জানেনা তা নয় , ওরা সবাই জানে যে উনাদের মেয়ে এমন বাজে ব্যবহার করে। কিন্তু কখনো তারা তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়নি। জান্নাতের বাবাকে যদি ওনার মেয়ের ব্যাপারে বলা হয় তাহলে উনি বলে আমি মেয়ের ত্যাজ্য করে দিয়েছি, আমার মেয়ে আমার কাছে মরে গেছে। তোমার যা ভালো লাগে করো। আমি যখন বলি আপনি ঢাকায় আসেন দেখে যান কি করে , কি করছে। তখন উনি বলে আমার দাতে ব্যাথা  ,আমি খুব অসুস্থ। কালকে ডাক্তার দেখিয়ে এসেছি  ইত্যাদি ইত্যাদি। কোন সমস্যা হলেই উনি প্রতিবারই একই রকম কথা বলেন। অথচ কিছু দিন আগের উনার মেয়ের পক্ষ নিয়ে আমাকে আমার পরিবারকে যানা তাই বলেছেন।


Monday, June 28, 2021

অতি জরুরী কিছু পুরানো কথা।

 

১৫ই আগষ্ট ২০১৭ আমাদের কাবিন হয়ে যাবার পর আমি ঢাকায় চলে আসি। অফিসের কাজের ফাকে দিনে ৬/৭ বার জান্নাতে সাথে ফোনে কথা বলতে হয় । কথা না বললে বিভিন্ন ভাবে অশান্তি শুরু করে। মানসিকভাবে এতটাই বিপযস্ত করে ফেলে যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।এভাবেই চলে যাচ্ছে দিন। কিন্তু মানসিক ভাবে আমি ধুকে ধুকে মরছি। 

আমি দুপুরে লাঞ্চ করতে গিয়েও ওর সাথে কথা বলি। যতবার ফোন করি আধঘন্টা একঘন্টার আগে ফোন রাখা যাবে না।তাহলেই শুরু হয়ে যাবে, বিশ্রি ভাষা। আমি কাজের ব্যস্ততায় ফোন করতে সময় কম পাই। জান্নাতই আমাকে ফোন করে। আমি কল ব্যাক করি। 

প্রতিদিন দুপুরে লাঞ্চে , আমার খাওয়া শেষ হতে না হতেই কল দিবে। কলিগদের সামনে  প্রতিদিন কেমন যেন হাসির পাত্র হয়ে গেছি। সামনে কিছু না বললেও পিছনে হাসাহাসি করে। 

হঠাৎ একদিন আমাকে জান্নাত লাঞ্চটাইমে ফোন করলো। যথারিতি আমি কল ব্যাক করলাম। জান্নাত ফোন রিসিভ করেই আমাকে বললো - আমার বাপ-মাকে তুই ফোন দিস না কেন? 

আমি আকাশ থেকে পড়লাম একি ব্যবহার । ঘন্টা খানেক আগেও কতো সুন্দর কথা হলো। আমি বুঝিয়ে বললাম তুমি তো, ওখানেই থাকো। আমি প্রতিদিন ৬/৭ বার তোমার সাথে কথা বলছি। তোমর কাছথেকেই তো আমি তাদের খবর নিচ্ছি তার পর আবার বিনা প্রয়োজনে আবার তাদের কেন ফোন দিবো। কোন কথায় কাজ হবে না। তার বাবা মাকে আমার ফোন করে খোজ খবর নিতে হবে।

এভাবেই সপ্তাহে দুটো দিন ভালো কাটলে ৪টা দিন আমার কাটাতে হয় নির্ঘুম, মানসিক যন্ত্রনার মধ্যে  দিয়ে। কাজে কর্মেও তেমন মন বসে না। দিন দিন আমি যেন পাগল হয়ে যা্চ্ছি। জান্নাতের বাড়ির সবাইকে ঘটনার আদ্যপান্ত জানালাম কিন্তু কোন কাজ হলো না। এ যেন কুকুরের লেজ। আমার নানী শ্বাশুড়ি মামী শ্বাশুড়ী বললো একটা বাচ্চা নাও আর ওকে ঢাকায় নিয়ে যাও সব ঠিক হয়ে যাবে। 

আল্লাহর রহমতে তাই হলো। ঢাকায় নিয়ে এলাম । ঢাকায় এনে কিছুদিন পর আবিস্কার করলাম একটা হিন্দু ছেলের সাথে সম্পর্কের  কথা। রাগের বসে লাথি চড় দুচারটে মারলাম। তখন জান্নাত অন্তসত্যা।

যাই হোক সবকিছু মানিয়ে নেয়ার জন্য দাতে দাত লগিয়ে চুপ থাকার চেষ্টা করি। কিন্তু মানুষতো কতোক্ষন পারি......

সম্বভত ৬/৭ মাসের অন্তসত্তা অবস্থায় আমি জান্নাতকে ওদের বাড়িতে রেখে আসি। জান্নাতের ইচ্ছাতেই আমি ওকে ওখানে রেখে আসি। আমি প্রতি মাসে খরচ পাঠাই এবং দিনে ৫/৬ বার খোজ খবর নেই। থাকে বাপের বাড়ি অথচ জান্নাতের যাবতীয় খরচ আমি পাঠাচ্ছি। এর মধ্যে ঘটে গেছে আরো অনেক কাহিনী।  গভীর ষড়যন্ত্র । আমার বাপ মা নিয়ে নানান মিথ্যা ঘটনা- রটনা। ওরা কেন এমন করছে জানিনা। জান্নাত তো কখনোই আমার বাড়িতে থাকেনি। তাহলে আমার বাবা মা তাকে কিভাবে নির্যাতন করলো।  প্রতিটা দিন ফোন করলেই আমার বাপ-মা সম্পর্কে একটা না একটা মিথ্যা রটনা রটাতেই হবে। 

জান্নাতের বাপ-মা শুধু বড় বড় কথা আর অশান্তি সৃষ্টি করা ছাড়া আর কিছুই না। আমি আর না পেরে জান্নাতের ফোনে অটো কল রেকর্ড সেট করলাম।তার পর ধরা পড়লো ওদের ষড়যন্ত্র। এবার আব্বা আম্মার সাথে ফোনে যে কথা হয় তার উল্টো সাজিয়ে সবাই মিলে রটনা ঘটনা শুরু করে। কল রেকডিং থেকে শুনতে পারলাম কিভাবে ওরা মিথ্যা সাজায় আর সেটা নিয়ে ঝগড়া ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে। 

এভাবে ৪ জুলাই ২০১৯ আনজুমার জন্ম হয়। এখানেও আছে অনেক বড় ষড়যন্ত্র। হাসপাতালে নেওয়ার আগেও সে কি গড়িমসি। মেয়ে মারা যাচ্ছে তারপরও তাদের তেমন কোন দৌড় ঝাপ নাই। দুদিন ধরে বাচ্চা নড়ছেনা। তারপরও ঘরে বসে আছে। আমি ঢাকা থেকে ফোন করে বার বার বলছি দ্রুত হাসপাতালে নিতে । আমার শ্বাশুড়ি বলে একটু জ্বর আসছে সেরে যাবে। হাসপাতালে নেয়া লাগবেনা। ওর গায়ে জ্বর তো তাই বাচ্ছা নড়ছে না। 

অনেক জোরাজুরির পরে হাসপাতালে নিলো, কাজদিয়া উপজেলা হাসপাতালে , সেখান থেকে ডাক্তার বললো আমরা এই রোগী রাখতে পারবোনা । আপনার খুব দ্রুত খুলনায় নিয়ে যান। সেখানেও অলসতা এম্বুলেন্সে রোগী তুলে অপেক্ষা নানীর জন্য। নানী না আসলে এম্বুলেন্স ছাড়া যাবেনা। এ যেন বিয়ে বাড়ি দাওয়াত খেতে যাওয়া্ । আমি অলরেডি চিল্রাচিল্লি বকাঝকা করেই যাচ্ছি। অবশেষে অনেক রাত্রে খুলনায় নেয়া হলো। ডাক্তার অক্সিজেন দিয়ে বাচ্চা সুস্থ করলো এবং জান্নাতের ডায়াবেটিস ধরা পড়লো ২৮। সেখানেও তারা মিথ্যার আশ্রয় নিতে ততপর। আমাকে ফোন করে বিভিন্ন ডাক্তারের রেফারেন্স দিয়ে বলতে লাগলো। অমুক নার্স বলেছে, অমুক বড় ডাক্তার বলেছে এই ডায়বিটিকসে কিছু হয় না- ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমি পরিস্কার বুঝতে পারিছ যে, এরা সবাই আমাকে অনরগল মিথ্যা বলে যাচ্ছে। আমি শুধু আমার শ্বশুরকে বলেছিলাম যে, আমি কি ডায়সেটিকসের কথা কিছু বলেছি আপনাদের ?

শ্বশুর না- তাহলে আপনারা এতো প্যাচঘোচ দিচ্ছেন কেন? 

আমার বাপ-মাকে জানালাম তার ক্লিনিকে আসলো । তাদের সাথে তেমন ভালো ব্যবহার তারা করলো না। বরঞ্চ খোচা মেরে মেরে কথা বলতে লাগলো।

ডেলিভারীর ব্যবস্থা করতে হবে। সেটাও আমার করতে হবে । তারা কোন দায় ভার নিতে পারবে না।  আমি ফোন করে রুপসা ইনসাফ ক্লিনিকে ব্যবস্থা করলাম। আমার শ্বশুর বাড়ির লোকদেরও এটাই পছন্দ কম খরচ। ডাক্তার ভালো যাইহোক সবার মতামতে এখানে ডেলিভারীর ব্যবস্থা করা হলো। আমার শ্বাশুড়িকে দেখে মনেই হয়না যে, তিনি মেয়ের মা। দায়ছাড়া গোছের, হাসপাতালে এসেছে অথচ মেয়ের জন্য বাড়তি একটা কাপড়ও আনেননি।

তবে হ্যা আমার মেঝ ফুফু শ্বাশুড়ি ওনি যা করেছেন তা ভোলার নয়। আমার অবর্তমানে ফুফুই পুরো দায়িত্ব পালন করেছেন। ফুফুর কথা বলে শেষ করা যাবেনা। যাবতীয় সব উনিই করেছেন। আমি ফোন করে বাকি দোকান ঠিক করে দিয়েছ। ফুফু সেখান থেকে যাবতীয় ওষুধ আনা, বাচ্চা নিয়ে শিশু হাসপাতারে যাওয়া , জান্নাতের কাপড় বদলানো, গোসল করানো থেকে যাবতীয় সব ফুফুেই করেছেন। এমনকি মেয়ের অভ্যন্তরিন যা করার কথা ছিলো আমার শ্বাশুড়ির তাই করেছে ফুফু্। ফুফু অনেক ভালো মানুষ , তবে একটু কথা বেশি বলে তাই একজনের কথা আরেক জনের কাছে মাঝে মাঝে বলে ফেলে। 

আমি অফিসের কাজে এতোটাই ব্যস্ত ছিলাম যে, আমার মেয়ে হবার সময় আমি জান্নাতের পাশে থাকতে পারিনি। অফিসের সবাই ঢাকার বাইরে ছিলো। আমিই শুধু ঢাকাতে ছিলাম। তাই পুরো অফিসের দায়িত্ব ছিলো আমার কাধের উপর। এনিয়ে শ্বশুর বাড়ির লোকজনসহ বউয়ের কাছে অনেক বেশিকম শুনতে হয়েছে। 

তিনদিন পরে যখন আমার শ্বশুর হঠাৎ একটি এম্বুলেন্স ঠিক করে মেয়ে-নাতীতে বাড়িতে নিয়ে যায়। তখন আমার আব্বাকে আমার শ্বশুর ফোন করে বলেছিল- বিয়াই আমরা ক্লিনিক থেকে বাড়ি চলে যাচ্ছি। আপনার আর এখন আসবেন কি করতে ? সময় করে কাজদিয়ায় আসবেন পুতনী দেখতে।

আমি চুপচাপ ওনাদের কার্যকলাপ শুধু দেখছি আর শুনছি। ওখানে যা ঘনটা ঘনে সব কিছু ফুফু আমাকে টাইম টু টাইম জানাচ্ছে। আমি ফুফুকে বললাম ফুফু ক্লিনিক থেকে যাবার আগে আমার আব্বা আম্মাকে একটু খবর দিলে ভালো হতো না। ফুফু বললো আমিই তো জানিনা , তোমার শ্বশুর হঠাৎ এম্বুলেন্স নিয়ে হাজির ।

আমার বাপ-মা, আত্মিয় স্বজন আমার মেয়ে দেখতে কেন আমার শ্বশুর বাড়িতে কেউ এলোনা, আমার কি কেউ নাই ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রশ্নে আমি প্রতিদিন জর্জরিত্  মর্মাহত্ ।  একটা সন্তান হয়েছে , একটা তৃপ্তির হাসি হাসবো সেই উপায় টুকু্ও নাই। 

কখনো আমার শ্বশুর, কখনো নানী শ্বাশুড়ি,  আর বউ সেতো প্রতিনিয়ত কিভাবে ছোট করা যাবে, কিভাবে অপমান করা যাবে সেই নিয়ে ব্যস্ত। 

আমি আমার মেয়েকে এখন দেখতে পেলাম না। ওর বয়স ৪দিন হয়ে গেছে। এটা আমার জন্য কষ্টদায়ক না। আমার কি এখানে পড়ে থাকতে ভালো লাগছে। বসের অনুমতি ছাড়া চলে আসলে আমার চাকরি থাকবেনা। তারপর কি হবে। আমার সন্তানকে আমি ২দিন ৪দিন পরে হলেও দেখতে পাবো। কিন্তু চাকরী চলেগেলে। তখনতো কেউ পাশে দাড়াবে না। আমার কষ্টটা কেউ বোঝে না। আমার বউ তার কথা আর কি বলবো সেতো .................................

আমার মেয়ের বয়স যখন ৬ দিন তখন আমি আমার শ্বশুর বাড়ি গেলাম। তখন ভোর ৬ টা। মেয়ের সকল অশোভন আচরন তুলে ধরলাম আমার শ্বশুর বাড়ীর সকলের কাছে। সেদিন প্রচুর চেচামেচি করলাম। তিন বছরের মধ্যে এই প্রথম আমি আমার শ্বশুর বাড়ির মুরব্বিদের সাথে উচ্ছস্বরে কথা বললাম। তারপরও তারা বুঝলো না যে, এই পরিস্থিতি কেন তৈরি হলো। আমার শ্বশুর সব শুনে আমাকে বললো -তোমার মেয়ে  তুমি নিয়ে যাও , আমার মেয়ে আমার কাছে থাকুক। এটা মাছে কোচ দাবড়ানো ছাড়া আর কি ?

আমি রাগ করে সকাল ৭টার দিকে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম। আমার বউ বারান্দায় চেয়ার পেতে বসে আছে। আমার দিকে ফিরেও তাকালো না। এক ঘন্টার মধ্যেই সব ঘটল। আমি একটু পানিও খেলাম না ওখানে। বাড়িতে এসে আমার আব্বাকে পাঠালাম। তখন আমার শ্বশুর বাড়ির মানুষগুলো অবুঝরে মতো , কিছু বোঝেনা।

আমি যখন চলে আসি তখন আমার শ্বশুর বললো , রাগ করে তো চলে গেলো কিন্তু ক্লিনিকের বিল তো দিল না। 

আমার শ্বশুরের গল্পে মানুষ টিকা কঠিন। তিনি নাতীর জন্য এটা করবেন ওটা করবেন ইত্যাদি। অথচ আমার শ্বশুর বাড়ি এলাকায় মিষ্টি খাওয়ানোর জন্য আমার টাকা পাঠাতে হয়েছে। তারপর ক্লিনিকের বিলটা হাতে ধরিয়ে দিলাম। উনার মেয়ের মাধ্যমে। সাাক্ষী রাখলাম নানী শ্বাশুরীকে। আমার মেয়ে ওখানে যতদিন ছিলো , আমার বউ বাচ্চার একটা টিস্যু পর্যন্ত কিনার জন্য আমি ঢাকা পাঠিয়েছি। শ্বশুর বাড়িতে শুধু ঘরভাড়াটা দেয়া হয়নি।

Sunday, June 27, 2021

28.06.2021

 আজ ২৮ জুন ২০২১,

গতরাতের কথা। আমি অফিসে শেষ করে বাসায় ফিরি রাত সাড়ে ১১টায়। রাস্তায় যারার সময় রিক্সায় বসে কথা বলেছি জান্নাতে সাথে বাড়ির সামনে গিয়ে ফোন কেটেছি। আমার কাছে ৫ লিটারের পানির বোতল এবং কাদামাটি ভর্তি একটি ৮ লিটারের ফুলের টব। তাই ফোন কেটে দিতে বাধ্য হয়েছি। এগুলো হাতে নিয়ে সিড়ি বেয়ে ছয় তলায় উঠতে হবে। ছয় তলায় আমার ভাড়া বাসা। যাইহোক সিড়িবেয়ে উঠে, মাত্র ফ্যানের সামনে দাড়িয়েছি। আবার জান্নাতের ফোন। আমি রিসিভ করে বললাম যে, কেবল মাত্র ঘরে ঢুকেছে এখনো জামা-িপ্যান্ট খুলে পারিনি। আমি কাপড় খূলে হাতমুখ ধুয়ে তোমাকে ফোন করছি।

জান্নাত বলল- আমার ভালো লাগছে না তাই তোমাকে ফোন দিলাম। 

এখন করোনার পরিস্থিতিও খুব খারাপ। তাই যতদ্রুত সম্ভব সাবান দিয়ে হাতমুখ ধুতে হবে। সবই জান্নাত জানে তারপরও আমাকে কেন এতো নির্যাতন বুঝতে পারিনা।

আমি বললাম- আচ্ছা ঠিক আছে। আমি হাতমুখ ধুয়ে তোমাকে ফোন করছি। 

জান্নাত উত্তরে বললো- থাক আর কল দিতে হবেনা। তুমি তোমার বাপ-মা নিয়ে থাকো।

প্রচন্ড রাগে কান্না চলে আসছিলো এটা ভেবে যে, কোন পাপের শাস্তি স্বরুপ আল্লাহ আমাকে এমন একটি অমানুষের সাথে জুড়ি মিলালো । আমি তো কোনদিন কারো পাকা ধানে মই, বা বাড়া ভাতে ছাই দিতে যাইনি। তাহলে আমার জীবনটা কেন েএমন হলো।

কিছু না বলে ফোন কেটে দিলাম। 

বাথরুমে হাতমুখ ধুতে ঢুকলাম। শব্দ শুনছি ফোন বাজছে। হাতমুখ ধুয়ে এসে দেখি আমার বস বিটু ভাই তিনটা কল দিয়েছে। আমি সাথে সাথে বিটু ভাইকে কল করলাম। বিটু ভাই বললো -আমার মিটারে টাকা নাই, ( বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার টাকা রিচার্জ করতে হয় ) যে কোন সময় বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যেতে পারে কিছু করো। আমি সাথে সাথে বেশ কয়েক জায়গায়ে ফোন করে বিকাশে টাকা আনার চেষ্টা করতে লাগলাম। এর মধ্যে জান্নাত বারবার ফোন করেই যাচ্ছে। ফোন রিসিভ করে আমি জান্নাতকে বললাম একটু পরে কল দিচ্ছি। অপেক্ষা করো কাজটা শেষ করি। জান্নাত কোন উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করলো- এত রাতে কার সাথে কথা বলছো ? ফোন বিজি পাচ্ছি কেন ?

আমি কোন কিছু বলার আগেই নিজের ইচ্ছা মতো যা খুশি বলা শুরু করলো। আমি কোন উত্তর না দিয়ে কল কেটে দিলাম। মানুষ কখনো এতোটা অবুঝ হয়। প্রতিনিয়ত অশান্তি করা ছাড়া ভালো কোন কথা মুখ থেকে বের হয়না। তারপর আমি আর ফোন করিনি। এর মধ্যে আমি খাওয়া দাওয়া ও করতে পারিনি। সে খবর কে নেয়। শুধু ..............

আধঘন্টা পর রাত ১টার দিকে তখন সকর কাজকর্ম শেষ করে খেতে বসেছি। তখন আবার জান্নাত ফোন দিলো ফোন রিসিভ করতেই আমি হ্যালো হ্যালো করছি কোন উত্তর না শুধু আমার মেয়ে আনজুমার চিৎকার করে কান্নার শব্দ শুনতে পা্চ্ছি। আমার বুঝতে বাকি রইরো না যে, আমার উপর রাগ করে নিশ্পাপ শিশুটিকে মারছে। আমাকে কিছুক্ষন মেয়ের কান্না শুনিয়ে ফোনটা কেটে দিলো। ঘন্টা দেড়েক আগে রিক্সায় বসে কতো সুন্দর কথা হলো জান্নাতে সাথে কিন্তু হঠাৎ কি এমন ঘটল যে , অমার উপর এমন মানিসিক টর্চার করছে বুঝতে কষ্ট হয়। তার পর যে মেসেজটা জান্নাত আমাকে পাঠালো সেটা ইমেজ আকারে তুলে ধরলাম।




আজ থেকে দেরমাস আগে আমি ওকে ওদের বাড়িরেখে এসেছি। এর মধ্যে ওর সাথে মেলামেশার সম্পর্ক কি । আমার জানা মতে আমি কোন দিকে থেকে ওকে অসুখি রাখিনাই। ঢাকায় আমার সাথে থাকাকালীন সপ্তাহে ২/৩  দিন আমরা মেলামেশা করি। আমরা আধঘন্টা থেকে ৪০ মিনিট সময় অতিবাহিত করি তারপরও এমন কথা শুনলে কষ্ট লাগে।

Saturday, March 27, 2021

The story began of lose - 5

 The story began of losing - 5




The inside of my chest began to twist. That's what I'm feeling.

I told Jannat about the problem with Jannat. Whatever happens in nature, he is reluctant to pay attention to any word. I said you have some physical problems, you talk to your grandmother.

After I moved to Dhaka. I am busy with office work so I can't talk on the phone. Jannat thinks I'm avoiding him. Jannat called me and started saying those words again. He started saying things that I could not stay without answering.

 I said look you are an adult girl you know very well what a virgin girl is like. No matter how much you say you don't know any of this, it's not believable. Find a girl around you who is like you. Exclude the condition of your body today. If I were you, you wouldn't think like me, you wouldn't hear any excuses. He would kick me out. Try to understand yourself. Don't try to hide the truth. How do you hide what you see?

Besides, your mother has said that she has never heard or seen such an incident in her forty years of life. And your grandmother said it was the first such incident in her 40-year family life.

I am excited to say these things, but it is also true that there is no sign of virginity in Paradise. The unmarried girl is such that no man in the world would believe it. Even if the mosque is said to be standing in the temple, it will be hard to believe.

Jannat cried and told her father. I called him a liar.

This started when my father-in-law called me without checking anything and told me not to call my daughter anymore. You have so much courage that you called my daughter a liar last night.

I tried to convince him but he refused to listen to me. He told me that if you know so much then you are not a good boy. What do you do if you know so much?

I failed to convince him.

He hung up the phone.

I called Jannat. Jannat is not receiving phone calls. The next time I saw the phone off. When Jannat's phone was switched off, I called my grandmother's mother-in-law, he said. Called me I'm going to their house. You said what happened. I told my grandmother everything. Grandmother said well I am going to the house of paradise. I'm calling you after hearing all.

I kept calling and no one was receiving my phone. Ghatak Khaleda has joined in this. Or the father of paradise called him. He came and snatched Jannat's mobile phone. We don't need such a husband, we will marry you again. Etc. etc. Eketo Nachuniburi, the house of drums on it. Khaleda and her husband called me and told me different things. They also said that Jannat's father went to Stoke after hearing such words from you. I can't tell everyone what's inside. Just shut your mouth and listen and endure.

Since I will not make Jannat small, I have told her before coming to Dhaka that you should tell everything to your grandmother. No need to tell anyone else. If more people know, the problem will increase. So don't go telling anyone else.

But they are the ones who understand more and make people aware of the question of dignity.

No one else contacted me all day. I repeatedly tried to talk to Jannat on the phone but no one let me talk. Feeling we have 'Run out of gas' emotionally.

After trying all day, Jannat's father picked up the phone in the evening. Jannat's father said in a soft tone over the phone, "I have nothing to say, father."

I said what happened?

I can't even believe in my daughter's condition.

I said that's what happened. Why did you go to call people? If you feel bad about me, check yourself first. Then another thought.

This time my mother-in-law took the phone call from my father-in-law and she started saying - my father has no notoriety for my daughter. No one can say any infamy of my daughter through Kazdia Fakirhat. But that's what happened. I'm forty years old but this is the first time I've heard or seen anything like that.

Then the grandmother-in-law spoke in the same manner and said at the end- will you make a family with him.

I said Grandma asked Jannat what she would do. I respect his opinion. Well, it's okay, don't talk to Jannat, he told Jannat.

Jannat started talking as if nothing had happened like before.

But what did these rabbis need to do to make us bitter?

Their daughter is now my wife. My family and I have a lot of respect for him. I think Jannat's father's mother needs to think many times before making some decisions. And I forgot to mention that my father called my mother to tell me that I had slandered their daughter. My mother also talked to me a lot while sitting in their house. I am no longer ashamed of this, I have to tell my wife's physical problems in this way. These are the parents of Paradise. And paradise.

.................................................................................................................................................

আমার বুকের ভিতরটা দুমরে মুচড়ে যেতে লাগলো । একি আমি কি অনুভব করছি। 

জান্নাতের সমস্যার কথা জান্নাতকে খুলে বললাম। স্বভাবতেই যা হয়, সে তো কোন কথায় পাত্তা দিতে নারাজ। আমি বললাম তোমার কিছু শারিরীক সমস্যা আছে তুমি তোমার নানীর সাথে আলোচনা করো। 

আমি ঢাকায় চলে আসার পর। অফিসের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি তাই ফোনে তেমন কথা বলতে পারছি না। জান্নাত মনে করছে আমি ওকে এড়িয়ে চলছি। জান্নাত আমাকে ফোন করে আবার সেই কথাগুলো তুলতে লাগলো।এমন এমন কথা বলতে লাগলো যার প্রতিউত্তর না দিয়ে আমি থাকতে পারলাম না। 

 আমি বললাম দেখো তুমি একজন প্রাপ্তবয়স্কা মেয়ে মানুষ তুমি ভালো করেই জানো একজন কুমারী মেয়ে কেমন থাকে । তুমি যতই বলো এসব কিছুই তুমি জানোনা, সেকথা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তোমার আশপাশে থেকে একটি মেয়ে খুুজে বের করো যে তোমার মতো অবস্থা। এসব কথা বাদ দাও আজ তোমার শরীরের যে অবস্থা । তোমার জায়গায় যদি আমি হতাম তাহলে তোমরা আমার মতো একটু্ও ভাবতে না, কোন প্রকার ওজর আপত্তি শুনতে না। লাথি মেরে বের করে দিতা। নিজেকে নিজে বোঝার চেষ্ঠা করো। সত্যটাকে লুকানোর চেষ্টা কোরোনা। যা দেখা যাচ্ছে সেটা তুমি কিভাবে লুকাতে চাও। 

এছাড়া তোমার মা বলেছে যে, তার চল্লিশ বছরের জীবনে এমন ঘটনা কোন দিন শোনেনি বা দেখিনি।  এবং তোমার নানী বলেছে তার ৪০ বছরের সংসার জীবনে এমন ঘটনা প্রথম।

আমি উত্তেজিতভাবে কথা গুলো বলেছি সত্য তবে একথা ও সত্য যে, জান্নাতের কাছে কুমারীত্বর কোন ছাপই নাই। অবিবাহিত মেয়ে এমন হয় এটা পৃথিবীর কোন মানুষ বিশ্বাস করবে না। যদি মসজিদ মন্দিরে দাড়িয়েও বলা হয় তবুও বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে। 

জান্নাত কাদতে কাদতে তার আব্বাকে বললো । আমি তাকে অসতি বলেছি। 

এই শুরু হয়েগেলো আমার শ্বশুর কোন কিছু যাচাই বাছাই না করে আমাকে ফোন করে বললো তুমি আর আমার মেয়েকে ফোন করবা না। তোমার এতবড় সাহস তুমি আমার মেয়েকে বাসর রাতে অসতি বলেছো। 

আমি তাকে বোঝাতে চেষ্টা করলাম কিন্তু তিনি আমার কোন কথা শুনতে নারাজ। তিনি আমাকে বললো তুমি এতো কিছু জানো তাহলে তুমি ছেলে তো ভালো না। তুমি ভালো হলে এতো কিছু জানলে কি করে। 

আমি তাকে বোঝাতে ব্যর্থ হলাম।

তিনি ফোন কেটে দিলেন। 

আমি জান্নাতকে ফোন দিলাম। জান্নাত ফোন রিসিভ করছে না। পরেরবার দেখলাম ফোন বন্ধ। জান্নাতের ফোন বন্ধ পেয়ে আমি নানী শাশুড়ীকে ফোন দিলাম তিনি বললেন । আমাকে ফোন করেছিল আমি ওদের বাসায় যাচ্ছি। তুমি বলোতো কি হয়েছে। আমি নানীকে সব খুলে বললাম। নানী বললো আচ্ছা আমি জান্নাতদের বাসায় যাচ্ছি । সব শুনে পরে তোমাকে ফোন দিচ্ছি। 

আমি বারবার ফোন দিতে লাগলাম আমার ফোন কেউ রিসিভ করছে না। এর মধ্যে এসে জুটেছে ঘটক খালেদা। উনাকে নাকি জান্নাতের বাবা ডেকে এনেছে । উনি এসেই নাকি জান্নাতের মোবাইল কেড়ে নিয়ে বলেছে । এমন স্বামীর দরকারন নাই তোকে আমরা আবার বিয়ে দেবো। ইত্যাদি ইত্যাদি। একেতো নাচুনিবুুড়ি, তার উপর ঢোলের বাড়ি। আমাকেও খালেদা ও তার স্বামী ফোন করে বিভিন্ন কথা বললো।তারা আরো বললো জান্নাতের বাবা তোমার এমন কথা শুনে স্টোক করতে গেছিলে যদি কিছু হয়ে যেতো তাহলে কি কিছু করতে পারতে।  আমি তো ভীতরের কথা সবাইকে বলতে পারছিনা। মুখ বন্ধ করে শুধু শুনে যাওয়া আর সহ্য করা। 

আমি জান্নাতকে ছোট করবোনা বিধায় ঢাকায় আসার আগে ওকে বলে এসেছি যে, তুমি তোমার নানীর কাছে সব খুলে বলো। আর কাউকে কিছু বলার দরকার নাই। বেশি মানুষ জানলে সমস্য বাড়বে। তাই অন্য কাউকে জানাতে যেওনা।

অথচ ওরাই বেশি বুঝে লোক জানাজানি করে মানসম্মানের প্রশ্নে উসে উপনিহ হয়েছে।

সারাদিন আমার সাথে আর কেউ যোগাযোগ করলো না। আমি বারবার ফোন দিয়ে জান্নাতের সাথ কথা বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু কেউ কথা বলতে দেয়নি। এমন ভাব যেন আমি প্রেম করতে যেয়ে ধরা পড়েছি এখন মেয়ের সাথে আর কোন যোগাযোগ করতে দেয়া হবেনা। 

সারাদিন চেষ্টার পর সন্ধ্যার সময় জান্নাতের বাবা ফোন ধরলেন। ফোন ধরে জান্নাতের বাবা নরমা সুরে বললো আমার কিছু বলার নাই বাবা।

আমি বললাম কি হয়েছে সেটা বলেন ?

আমার মেয়ের এমন অবস্থা আমি স্বপ্নেও বিশ্বাস করতে পারছি না। 

আমি বললাম যা হবার হয়েছে। আপনারা লোক ডাকতে গেলেন কেন ? আমার কথা যদি আপনাদের খারাপ লাগে তবে আগে নিজেরা যাচা্ই করেন। তারপর অন্য চিন্তা করেন । 

আমার শ্বশুরের কাছ থেকে এবার ফোন নিল আমার শ্বাশুড়ি তিনি বলতে শুরু করলেন -বাবারে আমার মেয়ের কোন বদনাম নাই। কাজদিয়া ফকিরহাট দিয়ে কেউ বলতে পারবেনা আমার মেয়ের কোন বদনাম । কিন্তু এটা যে কি হলো আমার বয়স চল্লিশ বছর কিন্তু আমি এই প্রথম এমন কিছু শুনলাম, দেখলাম। 

তারপর নানী শাশুড়ী একই ভঙ্গিমায় নানান কথা বলে শেষে বললো- তুমি কি ওকে নিয়ে সংসার করবা। 

আমি বললাম নানী জান্নাতকে জিজ্ঞাসা করেন ও কি করবে। ওর মতকেই আমি সম্মান জানাই। আচ্ছা ঠিক আছে নাও জান্নাতের সাথে কথা বলো বলে জান্নাতকে দিলেন। 

জান্নাত কথা বলতে শুরু করলো সেই আগের মতো যেন কিছুই হয়নি। 

কিন্তু বিনা করনে আমাদের সম্পকে তিক্ততা সৃষ্টি করার কি দরকার ছিলো এই মুরব্বিদের ?

তাদের মেয়ে এখন আমার স্ত্রী। ওর সাথে আমার এবং আমার পরিবারের মানসম্মান জড়িয়ে আছে। জান্নাতের বাবার মার কিছু ডিশিসন নেবার আগে অনেকবার ভাবা দরকার বলে আমি মনে করি। ও আরেকটি কথা বলতে তো ভূলেই গেছি যে, আমার আব্বা আম্মাকে ডেকে এনেছিলো এই কথা শোনানোর জন্য যে, আমি তাদের মেয়েকে অপবাদ দিয়েছি। আমার আম্মাও ওদের বাড়িতে বসেই আমাকে অনেক বেশি বেশি কথা বলেছে। আমি লজ্জায় আর নাই এই কথা , আমার বউয়ের শারিরীক সমস্যার কথা এভাবে জনে জনে জানাতে হবে। এই হলো  জান্নাতের বাবা-মা। এবং জান্নাত।

ধারাবহিক-৫

 ধারাবাহিক -৫

My father called at 8 in the morning. He said that my father-in-law called him and said different things. For example, it has been two or three months since Elona saw the baby. How can a man have so long without a wife and children? Let's sit down and decide whether you will keep my daughter or not.

I will come to you, but not to your house. Will live in the house of the big bride. Some people will come with me. I will be accompanied by Tuku of Dolkhola and Babul Mollah of Mollabari. What is the problem of Jahedi, what is the problem you need to discuss? If you don't like the discussion, divorce my daughter.

The father replied, "That is what your daughter said three days ago." That is what you are saying today but for no reason. That is why your daughter is now annoyingly using your pampering. Dad also said listen, we will put the girl where we have officially brought her.

When I heard these words from my father, I felt very bad that no quarrel had taken place. Suddenly, my father-in-law said such a thing.

I felt worse at the thought of how my wife was listening or accepting. Seto knows my usage. Then why so much unrest.

So I told these words to my grandmother, uncle and aunt. I told them that you had handed over the girl to me. Today you all need to know from the present. What a crime. If I am guilty, I will accept your punishment. And if your daughter's crime, you will understand. And one more thing, if I have to say in my arbitration about the wife of the house without any reason - then I will not take that wife home anymore. That is my decision.

I made it clear to all the guardians of Paradise that I left it in your hands how tolerable your daughter's conduct was.

২১.১০.১৯.


সকাল ৭টার সময় আমার আব্বা ফোন করলেন। তিনি জানালেন আমার শ্বশুর তাকে ফোন করে বিভিন্ন কথা বলেছে। যেমন- দুই তিন মাস হয়ে গেলো এখনো কেনো একবারও বাচ্চাটাকে দেখতে এলোনা। বউ বাচ্চা রেখে কিভাবে এতোদিন একটা মানুষ থাকতে পারে। আসেন আমরা বসাবসি করে একটা ফয়সালা করি, আমার মেয়ে আপনারা রাখবেন কিনা। 

আমি আপনাদের ওখানে আসবো, কিন্তু আপনাদের বাসায় নয়। বড় বিয়াইয়ের বাসায় বসাবসি হবে। আমার সাথে কিছু লোকজন আসবে। আমার সাথে দোলখোলার টুকু এবং মোল্লাবাড়ির বাবুল মোল্লা থাকবে। জাহেদীর কি সমস্য, আপনাদের কি সমস্যা আলোচনা করা দরকার। আলোচনা যদি আপনাদের ভালো না লাগে তাহলে আমার মেয়েকে তালাক দিয়ে দেন। 

আব্বা উত্তরে বললো- তিনদিন আগে আপনার মেয়ে যে কথা বলেছে । আজকে সেই কথাই আপনি বলছেন কিন্তু কোন কারন ছাড়াই। তারমানে আপনাদের প্রশ্রয়েই এখন আপনাদের মেযে বিরক্তিকর ব্যবহার করছে। আব্বা আরো বললো শোনেন আমরা যেখান থেকে মেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়ে এসেছি সেখানেই বসাবো।

আব্বার কাছে এসব কথা শুনে আমার খুব খারাপ লাগলো যে, কোন ঝগড়া ফ্যাসাদ কিছুই না হঠাৎ আমার শ্বশুর এমন কথা কিভাবে বললো। 

আমার আরো খারাপ লাগলো এটা ভেবে যে, আমার বউ এগুলো কিভাবে শুনছো বা মেনে নিচ্ছে। সেতো আমার আচার ব্যবহার সবই জানে। তারপরও কেন এতো অশান্তি। 

তাই নানী ফুফু মামা সকলকে আমি এই কথাগুলো জানালাম। তাদের বললাম যে, আপনারা সবাই থেকে আমার হাতে মেয়ে তুলে দিয়েছিলেন। আজ আপনাদের সকলের উপস্থিত থেকে জানতে হবে । কার কতটুকু অপরাধ। আমার যদি অপরাধ হয় , আপনাদের শাস্তি মেনে নেবো। আর আপনাদের মেয়ের অপরাধ হলে আপনারাই বুঝে নেবেন। আর একটা কথা বিনাকারনে ঘরের বউকে নিয়ে যদি আমার শালিসে বলা লাগে -তবে সেই বউ আমি আর ঘরে তুলবো না। এটাই আমার সিদ্ধান্ত।

জান্নাতের সকল অবিভাববকদের সুষ্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলাম যে, আপনাদের মেয়ের আচার ব্যবহার কতটুকু সহনীয় তা আপনাদের হাতেই ছেড়ে দিলাম। 

.............................................................................................................................................


Tuesday, March 23, 2021

ধারাবাহিক-৪

ধারাবাহিক-৪ 



16.10.19

আমি প্রতিদিনের ন্যায় যথারিতি অফিসে। আজ সকালে আর ফোন করে খোজ নেয়নি হয়তো ভূলে গেছে  অথবা নতুন কোন ফন্দি মনের মধ্যে পুশে চলেছে। আমি অফিসের কাজে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় ফোন করতে পারিনি।

দুপুরে মহারানীর ফোন। তখন আমি খাচ্ছি। ও জেনেবুঝেই লাঞ্চ টাইমে ফোন করবে। 

আমি বললাম খাচ্ছি , একটু পরে ফোন দিবো তোমাকে। 

খাওয়া শেষ হতেই আবার ফোন । আমি হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেস হতে পারিনি। ভিজা হাতে ফোন রিসিভ করে প্রায় ৭/৮ মিনিট কথা বললাম। আধঘন্টা পরে আবার ফোন করলো।আমি তখন একটা মিটিং এ আছি। আমি বার বার কেটে দিচ্ছি , অথচ জান্নাত একের পর এক ফোন দিযেই যাচ্ছে। ৭টা কল কেটে দেয়ার পর ৮ম তম কল রিসিভ করে আমি বললাম তুমি কি বোকা নাকি খোকা। বুঝতে পারচো না আমি ব্যস্ত । বার বার তোমার কল কেটে দিচিছ তারপরও ফোন দিচ্ছো। আমি মিটিং এ পরে কল দিচ্ছি । বলে কল কেটে দিলাম।

আধঘন্টা পর আবার ফোন করলো। আমি রিসিভ না করায় । এসএমএস দিলো -তোমার মিটিং শেষ হয়েছে ? আমি কোন উত্তর দিলাম না। খুব রাগ হচ্ছে। ওর এমন উল্টাপাল্টা কাজে। আমার এসএমএস দিলো আমি কি তোমাকে বিরক্ত করছি ?

তখন আমি উত্তর দিলাম হ্যা তুমি বিরক্ত করছো। 

রাতে সাড়ে ১০ টার দিকে বাসায় ফেরার সময় ১০০০ টাকা বিকাশ করে পাঠালাম। টাকা পাঠিয়ে ২/৩ বার ফোন করলাম কিন্তু ফোন রিসিভ করলো না। 

আমি বাসায় ফেরার পর ও আমাকে ফোন করলো । তখন রাত ১১টা বাজে। ফোন রিসিভ করার সাথে সাথে তুমি আমাকে বিশ্বাস করোনা ? আমার সব ইচ্ছা পূরন করতে না পারলে বিয়ে করেছো কেন ?

আমি বলল কি হয়েছে এমন করছো কেন ?  

জান্নাত -১০০০টাকা পাঠিয়েছো কেন ? আমি কি তোমার মতো ছোট লোক নাকি ? বিকাশের দোকান থেকে ১০০০ টাকা তুলতে আমার মানসম্মানে বাধে, আমার লজ্জা লাগে। 

আমি বললাম কি বলো তুমি হাস্যকর কথা । ১০০০ টাকা কি টাকা না। আর এতে লজ্জার কি আছে ? 

তখন জান্নাত বললো- কি দেখে যে, তোমায় বিয়ে করেছিলাম। আমার পছন্দ যে, এত জগন্য হবে এটা আমি ভাবতেই পারছিনা। আমার নিজেকে বিশ্বাস হচ্ছে না।


আমি শুধু বললাম আমার সাথে তুমি এমন ব্যবহার করতে পারোনা। এটা তোমাকে মানায় না। বলে ফোন কেটে দিলাম। তখন জান্নাত আমাকে আবার একটি এসএমএস দিলো যেটা হুবহু তুলে ধরছি - “ এই কাজটি করে তুমি ছোট লোকের পরিচয় ‍দিলে”।

১৭.১০.১৯

প্রতিদিনের ন্যায় অফিসে যাচ্ছি গাড়িতে থাকাকালীন দুবার ফোন করলো। ঢাকার শহরে লোকাল বাসে ঝুলে যাওয়া অভ্যাস যাদের আছে তারাই বলতে পারবে । তখন ফোন রিসিভ করা কতোটা  ঝামেলা।

আমি গাড়ি থেকে নেমে কল ব্যক করলাম । ফোন রিসিভ করেই বললো- কোথায় ?

আমি বললাম রাস্তায় অফিসে যাচ্ছি ।

ও আচ্ছা, গুড খাইছো ? 

হমম খেয়েছি।

আচ্ছা যাও বলে ফোন কেটে দিলো।

আমি অফিসের একটা জরুরী মিটিং এ মতিঝিল। 

আনুমানিক ১২টার দিকে আবার ফোন করলো। কল ব্যক করলাম কি বলো ?

জান্নাত- জরুরী কথা আছে । 

আমি বাইরে মিটিং এ আছি। পারলে সংক্ষেপে বলো।

জান্নাত -আমার এখানে থাকার মতো পরিবেশ নাই। আমি এখানে থাকতে পারছি না।আমাকে নিয়ে যাও। 

এই তোমার জরুরী কথা। তাও আবার এই মিটিং এর সময় বলতেই হলো। আচ্ছা এখন রাখো পরে ফোন দিচ্ছি। বলে ফোন কেটে দিলাম।

ঘন্টাখানিক পরে আমি ফোন করলাম- বলো কি হয়েছে ?

জান্নাত - আমি এখানে থাকবো না। আমাকে নিয়ে যাও ।

তোমার এখানে সমস্যা হলে তুমি খূলনায় যাও। আমি সময় করে ছুটি নিয়ে তোমাকে নিয়ে আসবো।

জান্নাত- হবে না। আমি ছোট মামাকে নিয়ে ঢাকায় আসছি।আমি টুটুপাড়া (খুলনা) যেতে পারবো না। 

আমি বললাম -শোনো ক্লিনিক থেকে আসার সময় মেয়েটাকে ওর দাদীকে না দেখিয়ে নিয়ে চলে আসছো । এখন যদি ঢাকায় চলে আসো সেটা খুব খারাপ দেখায়। জান্নাত ফোনটা কেটে দিলো।

ঘন্টাখানিক পর আবার ফোন করে বললো- আমি তোমাকে বিয়ে করেছি তোমার বাপ-মাকে না। আমাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে এখান থেকে নিয়ে যাবা না হলে আমি তোমাকে তালাক দিবো।

আমি বললাম কি বলো তুমি? তোমার মাথা ঠিক আছে ? এটা কেমন ব্যবহার ?

জান্নাত- আমি ঠিকই বলছি। আমি তোমার নিরযাতনে জজরিত। 

আমি তোমাকে কিভাবে ? কি? নিরযাতন করলাম ?

জান্নাত- আমি যা বলছি তাই। আমি ডিসিশন নিয়ে নিয়েছি। তোমার সময় মাত্র ২৪ ঘন্টা। বলেই ফোনটা কেটে দিলো ।

আমি আমার নানী শ্বাশুড়িকে ফোন করে সব কথা জানালাম। 

ঘন্টাখানিক পর আমার আব্বা ফোন করে বললো- আমি রাস্তার ওপারের বাড়িতে কাজ করছিলাম । বাসায় এসে দেখি তোমার শ্বশুর ২/৩বার ফোন দিয়েছে। ওরা তো সমস্যা ছাড়া ফোন করেনা। আবার কি কোন সমস্যা হয়েছে। আমি আমার আব্বাকে সব ঘটনা খুলে বললাম । 

১৮ তারিখে কোন কথা হয়নি।

১৯.১০.১৯ তারিখে একটি এসএমএস পাঠালো- খুলনা থেকে ডাক্তার দেখিয়ে এলাম । টাকা নাই ১০০০ টাকা পাঠাও।আমি রাত ১০টার দিকে টাকা পাঠিয়ে দিলাম। 

আর কোন ফোন করলাম না।


Monday, March 22, 2021

ধারাবাহিক - ৩

 ধারাবাহিক - ৩


 ১৪.১০.১৯

একের পর এক ফোন দিয়েই যাচ্ছে আর আমি কেটে দিচ্ছি। তারপরও বুঝতে চাচ্ছে না যে, আমি অফিসের কাজে খুব ব্যস্ত েএবং আমার সাথে কলিগরা আছে। একদুজন না অনেক মানুষ কথা বলা যাবে না। এমনিকি কাজ রেখে একটু দুরেও সবে যাওয়া যাবে না। অফিসের বড় বড় কর্তারা সবাই সামনে। 

১৫.১০.১৯ তারিখ সকালে প্রতিনিদের ন্যায়  ফোনে কথা হয়েছে। দুপুরে খাবার সময় আবার জান্নাত ফোন করলো । একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে খেতে খেতে কথা বললাম। সাথে কলিগরাও ছিলো। খাওয়া ‍শেষ হতে না হতেই আবার ফোন। 

আমি বললাম কি হয়েছে বলো ?

জান্নাত -আমার সাথে একটু ভালো মন্দ কথা বলো।১৫ থেকে ২০ মিনিট নানন বিষয়ে কথা বললাম । তবু ওর মন ভরলো না। 

আমি বললাম এখন রাখো কাজ আছে। 

হবে না আরো কথা বলতে হবে। মানুষ এতোটা অবুঝ হলে কিভাবে হবে। কষ্টে বুকটা ফেটে যেতে লাগলো। যেখানে জান্নাত নিজেই বলবে যে, যাও এখন অফিসের কাজ করো তানা হলে চাকরি থাকবে না। 

সেখানে আমি বারবার এই কথা বোঝেতে বোঝাতে হাফিয়ে উঠেছি। তবু উনার মগজে এই একটি কথা ঢুকছে না যে আমি পরের চাকরি করি।

অফিসের একটা ঝমেলার জন্য আমরা ৬ জন রাতে  অফিসেই থাকলাম। ঘটনার অদ্যপান্ত সব জান্নাতকে খুলে বললাম তারপরও রাতে বারবার ফোনদিতে লাগলো। কথা বলে রেখে দেয়ার ২ মিনিট যেতে না যেতেই আবার ফোন করছে।আমি বুঝাতে চেষ্টা করলাম যে, আমি বাসার বাইরে অফিসের কলিগদের সাথে। কোনো বুঝে কাজ হচ্ছে না । তখন রাত দেড়টা বাজে। তারপর ফোন কেটে দিয়ে আমাকে যে, এসএমএস গুলো দিলো সেগুলো হুবহু তুলে ধরছি- “যারা নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে তারা কখনো অন্যের মন বোঝেনা। আমার কাছে টাকা নাই যদি পারো দুই , আড়াই হাজার টাকা পাঠিয়ে দিও”। 

এসএমএস-২ তুমিতো আমাকে ফোনই দাওনা। যদি আমি ফোন দেই তবে করুনা করে তুমি একটু কল ব্যক করো।যাই হোক আজকের পর থেকে আর তোমাকে কল দিবো না।

আমি জান্নাতের এসএমএস এর কোন উত্তর দিলাম না । কারন ওর ভালো থাকার মেয়াদ শেষ এখন আমি যা বলবো তার উল্টো বলে অশান্তি করবে। যেমটি আগে করে এসেছে। 

Sunday, March 21, 2021

ধারাবাহিক -২

 ধারাবাহিক -২

০৪.১০.১৯

সন্ধ্যা ৭টার দিকে ১০০০ টাকা পাঠিয়ে ফোন করলাম। ফোর রিসিভ হলো না। আধ ঘন্টা পর SMS এলো “১০০০ টাকা পেয়েছি”।

আমি আর ফোন না করেই রিপ্লাই দিলাম “ওকে”

০৭.১০.১৯

দুইদিন পর হঠাৎ মহারানীর মিস কল এলো। আমি কল ব্যাক করলাম এবং ভালো ভাবেই কথা বললাম। কেমন আছো ?

ভালো।

খাওয়া দাওয়া করেছো ?

হমম করেছি। 

কি যে, আহ্বালাদের কথা শুরু করলো । বুঝে উঠতে কষ্ট হচ্ছিলো।দুইদিন আগের মানুষটা হঠাৎ গদগদ হয়ে উঠলো কি মতলবে।

আমার প্রতি ওর ভালোবাসা যেন একটু বেশি বেশি উতলিয়ে উঠতে লাগলো। আহারে সে কি মিষ্টি মিষ্টি কথা। সকালে দুপুরে, রাতে  এবং সকালে ফোন দিয়ে খোজ নেয় । কি খেয়েছো্ ? কি করছো ? অফিস থেকে কখন ফিরেছো ? ইত্যাদি ইত্যাদি ।

কিন্তু আমার মনের ভিতর শান্তি নাই। এটা বড় ঝড়ের কোন আলামত ?

ধুর কি যাতা ভাবছি যা হবার হবে।

এভাবে চলছে দিন ।

10.10.19

রাতে ফোন করে আবার শুরু হলো গদগদ ভালোবাসা। 

আমি তখন নিজেকে সামলে রাখতে না পেরে বলেই দিলাম।  হঠাৎ এতো ভালোবাসা দেখাচ্ছো এটার মেয়াদ কয়দিন থাকবে ?

জান্নাত তখন তেমন কিছুই বলল না। তবে কিছুক্ষন পরে একটা এসএমএস পাঠালো । যেটা হুবহু তুরে ধরছি।

“ আমাকে আঘাত দিয়ে কথা বোলোনা, সবার শরীর এক রকম নয়। সবাইকে আল্রাহ একভাবে তৈরি করেনি। আমি খুশি আমি যে রকম, হয়তো পারিনি শুধু তোমাকে খুশি করতে। তবে আমি চেষ্টা করছি ’’। 

আমি  SMS এর কোন উত্তর দিলাম না। কারন কি উত্তর দিবো। কি বলেছি আর তার পরিপেক্ষিতে এতোক্ষন পর কি বলছে।এর যতই ভালো উত্তর দিবো না কেন তার নেগেটিভ দিক বের করে ঝগড়া শুরু করবে তাই চুপচাপ থাকলাম। এই হলো উনার মূল সমস্যা ।

১১.১০.১৯

সকালে ফোন করেই বললো আমাকে নিয়ে যাও। আমি এখানে আর থাকবোনা। 

অথচ কয়েকদিন আগেই বললো সামনে পরীক্ষা । পরীক্ষা শেষ করে ঢাকায় আসবে।

আমি বললামা পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে ?

জান্নাত -পরীক্ষা শুরুই হয়নি , তো শেষ হবে কি করে ?

আমি বললাম তাহলে ঢাকায় আসার কথা বলছো কেন ?


 


Tuesday, March 16, 2021

ব্লেন্ডার



At night I got some money from a friend. As soon as I got the money, I thought I would have to buy a blender. Saying for a few days. He is in a lot of trouble.

Most of the shops were closed at around 10 pm. I showed up at a time when Singer would close a showroom.

I said brother I will take a blender. Can you give me ten minutes?

The gentleman in the showroom said yes sir there is no problem you see.

I bought a blender for four and a half thousand rupees and returned home feeling very happy. I thought Jannat would be very happy to see it.

When I opened the door and saw the blender, Jannat's face turned black like the bottom of a pot. I said what happened.

Why not buy with me?

I said if you have something you like, tell me and I will bring it back.

He raised his hand and looked at me with big eyes and said - shut up and don't say another word.

I was very upset but could not say anything.

He didn't talk to me all night. Leaving the food in the kitchen, he says to the one-and-a-half-year-old girl, let's go to sleep. I went to the kitchen and brought food and went to bed. The girl really came to me at night and told the girl to come here. Come here.

I started to have a hard time using it but I didn't say anything. I looked silently at how.

In the morning I wake up and see. Rice on a plate and tomatoes on a plate are cooked on the veranda table. Must be eaten mashed. Anyway, I quietly started eating stuffed tomatoes. The girl came to me and said, "Daddy, Daddy, I'm trying to put rice in her mouth." And Jannat is taking the girl home from me again and again. The girl is coming to me again and again and taking me to paradise again and again. Ayan is used as the enemy of birth. Then don't say anything.

I'm sitting on the floor eating. Suddenly I saw a boiled egg fall on the side of my plate and fell on the side of the soap. I looked up and saw Jannat standing 3 hands away from me.

I said what happened?

He said what should I do?

I have no other language to write

................................................................................................................................................

 রাতে একবন্ধুর কাছথেকে কিছু টাকা পেলাম। টাকা পাওয়ার সাথে সাথে মনে হলো একটা ব্লেন্ডার কিনতে হবে। কয়েকদিন ধরে বলছে। ওর খুব কষ্ট হয়। 

রাত তখন দশটা প্রায় অধিকাংশ দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। সিঙ্গারের একটা শোরুম বন্ধ করবে এমন সময় আমি হাজির হলাম। 

বললাম ভাই একটা ব্লেন্ডার নিবো । দশ মিনিট সময় দেয়া যাবে ?

শোরুমের ভদ্রলোক বলল িজ্বী স্যার কোন সমস্যা নাই আপনি দেখেন।

সাড়ে চার হাজার টাকা দিয়ে একটা ব্লেন্ডার কিনে খুব খুশি মনে বাসায় ফিরলাম। ভাবলাম জান্নাত  এটা দেখে খুব খুশি হবে।

দরজা খুলে ব্লেন্ডার দেখে জান্নাতের মুখখানা হাড়ির তলাম মতো কালো হয়ে গেলো। আমি বললাম কি হয়েছে। 

আমাকে সাথে না নিয়ে কিনলে কেনো ?

আমি বললাম কেনো তোমার পছন্দের কিছু থাকলে বলো ফেরত দিয়ে সেইটা নিয়ে আসবো। 

ও হাত উচু করে আমার দিকে বড় বড় চোাখ করে বললো -চুপ আর একটা কথাও বলবা না।

আমি খুব কষ্ট পেলাম কিন্তু কিছু বলতে পারলাম না।

সারারাত আমার সাথে আর কোন কথা বলেনি। খাবার কিচেনে রেখে দেড় বছরের মেয়েকে বলছে চল আমারা ঘুমিয়ে পড়ি। আমি কিচেনে গিযে খাবার এনে খেয়ে শুয়ে পড়রাম। রাতে মেয়ে আমার কাছে আসলেই ও মেয়েকে বলে এদিকে আসো। এদিকে আসো। 

ওর ব্যবহারে খুব কষ্ট পেতে লাগলাম কিন্তু কিছু বললাম না। চুপচাপ দেখতে লাগলাম কি করে। 

সকালে আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি। বারান্দায় মেজেতে  একটা প্লেটে ভাত আর একটা প্লেটে টমেটো সিদ্ধ । ভর্তা করে খেতে হবে। যাই হোক আমি চুপচাপ টমোটো ভর্তা করে খেতে শুরু করলাম। মেয়ে আমার কাছে এসে আব্বু আব্বু করছে আমি ওর মুখে ভাত দেবার চেষ্টা করছি। আর জান্নাত বার বার মেয়েকে আমার কাছ থেকে ঘরে নিয়ে যাচ্ছে। মেয়ে বার বার আমার কাছে আসছে আর জান্নাত বারবার নিয়ে যাচ্ছে।  এযেন জনম জনমের শত্রুর মতো ব্যাবহার । তারপর কিছু বলছি না। 

আমি মেঝেতে বসে খাচ্ছি । হঠাৎ দেখলাম একটা সিদ্ধ ডিম আমার প্লেটের পাশে পড়ে ছিটকে চলে গেলো সোপার পাশে। আমি মাথা উচু করে তাকিয়ে দেখি জান্নাত আমার থেকে ৩হাত দুরে দাড়ানো। 

আমি বললাম এটা কি হলো ? 

ও বলল কি করবো প্রেটে দিতে গিয়েছি , প্রেটে পড়েনি, ঐদিকে ছিটকে গেছে। 

আমার আর কিছু লেখার ভাষা নাই।

ধারাবাহিক-১


02.10.19



Receive a phone call at 11:30 pm and send 1500 rupees.


I said I don't have it yet, I will send it to Sakare tomorrow inshaAllah. Tonight you are talking about money, what to do with money.


He said you have to apologize. It will take a lot of money to pay.


Why don't I know what to do with the money?


People do not know how to make money.


Why are you talking like that?


You will find yourself answering the question.


I said look what you are doing is not doing well. Suddenly you started calling me nonsense and telling me to ask myself a question. You are an inhuman. I hung up the phone to keep it.


I haven't received a phone call for several days like this. I don't even call myself. Why should I do it. If you call me, you will talk nonsense and quarrel. Makes the head worse.


01.10.19

Twelve o'clock at night. I was cooking back from the office. Anwar's brother called about the work of the bank. We talked for about half an hour. At that time Uni also called. Naturally the phone is BG. Jannat called again after 1 am. Suddenly he started saying that he doesn't need to inquire about his wife and child, or have you found someone new? Did you need to get married?

What do you say? You know what time it will be to cook and eat this time and when to go to bed. As soon as I woke up, I looked at my watch and ran to the office without eating. Lunch is sometimes 3 o'clock, 4 o'clock or even 6 o'clock. And then if you keep burning like this. I'm going crazy. Who listens to whom.

He began to speak like himself again. And no one works, you just work alone.

When you have to listen to such words after so much suffering, there is no limit to the sorrow. It is forbidden to sleep a little at night by working hard all day. It's not the wife, it's the pain box.


03.10.19

It was about 12 o'clock when I reached home after finishing my office work. Jannat's phone as soon as he enters the house.

After receiving the phone at once - reached home, did you eat?

I just started to hmmm.

Without giving me a chance to speak, Jannat called him and hung up.

I realized that the devil was running in his mind. Now it will be a problem if I call. So I did not call.

Half an hour later he called again. He started talking at once. What was the need to get married? Don't feel the need to keep track of your wife and child. Etc. etc.

I said listen you know how much pressure I have in the office. Even then, I'm talking to you once or twice a day. Even after that if you say something like-

Jannat said what do you do now?

Eating

What are you eating

Panda rice last night. Now I am eating with kachajhal. Understand what I'm under pressure.

I don't know what Jannat understood - I won't talk to you anymore. Do what you want

I said what is your problem? What am I saying and what are you saying? The manner of speaking, the tone of speech cannot be good.

He started the old record - I'm not good, I don't like talking. I like to hear who.

I said listen, I'm angry. You speak the way I speak to you. And if you can't, put down the phone. And you go your way.

He has become a habit.

What do you mean? I do not understand the meaning of the habit?

Why didn't your brother get married, do you?

I said you need to be beaten for what you are using.

You are arrogant, you are extremely bad, you do not know how to respect the rabbis.

Listening to him, I became very angry - I said where did the rabbi come from again. And which mentor have I disrespected?

He said, "My parents told you to come. You didn't come."

How can I come if I don't get leave?

And no one's husband works anymore. Only you do.

I said - tell your father to cover you. I'm not on vacation. Bring your parents. They will travel to Dhaka. You too will come to Dhaka


My parents are responsible for the purchase?

Then I said - then I can not bring you. I don't like what you say. Put down the phone.

Jannat said, "You are torturing me mentally." You are torturing me. Now my need is not over. He said the words at once

After hearing this, my brain started to explode in anger. Even then I controlled myself and said look what kind of thing it is, I am not in love with you. I am your husband. I need to know how to end. And torture, torture, what do you say these?

He said ask yourself

I hung up without saying a word. I understood that this caste is not a caste of understanding.

Two minutes after I hung up, my father-in-law called and told me what happened to you.

I just saluted and said nothing happened to me. He hung up.

I couldn't sleep all night. Office in the morning. Who will understand me.

.........................................................................................................................................

 ০২.১০.১৯

রাত সাড়ে এগারোটা ফোন রিসিভ করেই বলর ১৫০০ টাকা পাঠাও। 

আমি বললাম এখনতো আমার কাছে নাই, দেখি কালকে সকারে ইনশাআল্লাহ পাঠাবো। এতরাতে টাকার কথা বলতেছো টাকা দিয়ে কি করবা। 

ও বলল কইফিয়াত দিতে হবে তোমাকে। টাকা দিবা তাতেও আবার কইফিয়াত লাগবে।

কেনো আমি কি জানতে পারিনা যে, টাকা দিয়ে তুমি কি করবা ?

টাকা কি করে মানুষ জানোনা।

তুমি এমনভাবে কথা বলছো কেনো তোমার কি হয়েছে। 

তুমি নিজেকে প্রশ্নকর উত্তর পেয়ে যাবে। 

আমি বললাম দেখো তুমি যা করছো ভালো করছো না। হঠাৎ ফোন করে তুমি আজেবাজে বলা শুরু করলা আমাকে বলছো নিজেকে প্রশ্ন করতে। তুমি একটা অমানুষ। রাখো বলে ফোন কেটে ‍দিলাম।

এভাবে বেশ কযেকদিন কাটলো আমি ফোন রিসিভও করিনা। নিজে থেকে ফোনও করিনা্। কেনো করবো।ফোন করলেই আজেবাজে কথা বলে ঝগড়া করবে। মাথাটা খারাপ করে দেয়। 

01.10.19

রাত বারোটা । অফিস থেকে ফিরে রান্না করছিলাম। ব্যাংকের কাজের ব্যাপারে আনোয়ার ভাই ফোন করলো। প্রায় আধঘন্টা কথা হলো। এমন সময় উনিও ফোন করলেন। স্বভাবতই ফোন বিজি। রাত ১ টার পরে জান্নাত আবার ফোন করলো। একদমে বলতে লাগলো বৌ-বাচ্চার খোজখবর নেওয়া লাগে না্,  নাকি নতুন কাউকে পেয়েছো্ ? বিয়ে করার কি দরকার ছিলো তোমার ?

এগুলা কি বলো তুমি ? তুমি জানো যে,  এই এখন রান্না করে খেতে খেতে ঘড়িতে কয়টা বাজবে আর কখন ঘুমাবো। ঘুম ভাঙ্গতেই ঘড়ির দিকে তাকিয়ে ,না খেয়ে অফিসের দিকে ছুটতে থাকি।  দুপুরের খাবার কখনো ৩টা, ৪টা এমনকি ৬টাও বেজে যায় মাঝে মাঝে। আর তারপর তুমি যদি এভাবে জ্বালাতে থাকো। আমি তো পাগল হয়ে যাচ্ছি। কে শোনে কার কথা। 

নিজের মতো অবার বলতে শুরু করলো। আর কেউ তো চাকরী বাকরি করেনা তুমি শুধু একাই চাকরি করো। 

এতো কষ্টের পরে যখন এমন কথা শুনতে হয় তখন দুঃখের আর সীমা থাকেনা। সারাদিন কষ্ট করে রাতে একটু ঘুমাবো সেই ঘুমটাও হারাম করে দেয়। এটা বউ না, যন্ত্রনার ডিব্বা।

03.10.19

অফিসের কাজ শেষ করে বাসায় পৌছাতে পৌছাতে প্রায় ১২টা। বাসায় ঢুকতেই জান্নাতের ফোন।

ফোন রিসিভ করেই একদমে -বাসায় পৌছেচো, খেয়েছো ? 

আমি শুধু হমমম করতে লাগলাম।

আমাকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়েই জান্নাত ওকে বলে ফোন কেটে দিলো। 

আমি বুঝতে পারলাম যে, ওর মনের মধ্যে শয়তার দৌড়াদৌড়ি করছ। এখন আমি ফোন করলেই ঝামেলা করবে। তাই আর ফোন করলাম না।

আধঘন্টা পরে আবার ফোন করলো। সেই একদমে বলা কথা বলতে শুরু করলো। বিয়ে করার কি দরকার ছিলো ? বৌ-বাচ্চার খোজ খবর রাখার দরকার মনে করো না। ইত্যাদি ইত্যাদি।

আমি বললাম শোনো তুমি কি জানো আমি অফিসে কতটা চাপে থাকি। তারপরও প্রতিদিন তোমার সাথে দু’একবার কথা হচ্ছে। এর পরও যদি তুমি এমন এমন কথা বলো-

জান্নাত বললো  এখন কি করো?

খাচ্ছি

কি খাচ্ছো

গতরাতের পানিদেয়া ভাত । এখন কাচাঝাল দিয়ে খাচ্ছি। বুঝতে পারো কি চাপে আছি।

জান্নাত কি বুঝলো জানিনা বলতে শুরু করলো-আমি তোমার সাথে আর কথা বলবো না। তোমার যা ইচ্ছা তাই করো।

আমি বললাম সমস্যা কি তোমার ? আমি কি বলছি আর তুমি কি বলছো ? কথা বলার ভঙ্গি, কথা বলার টোন ভালো করতে পারোনা।

শুরু করে দিলো পুরানো রেকড-আমি তো ভালো না, আমি কথা তো ভালো লাগবে না। কার কথা ভালো লাগে শুনি। 

আমি বললাম শোন আমার কিন্তু রাগ হচ্ছে। আমি তোমার সাথে যেভাবে কথা বলছি তুমিও সেইভাবে বলো। আর যদি না পারো তাহলে ফোন রাখো।আর তোমার পথে তুমি চলো।

ও অভ্যাস হয়ে গেছে।

মানে কি? অভ্যাস হয়ে গেছে মানে বুঝলাম না ? 

কেনো তোমার ভাই দুই বিয়ে করেছেনা , তুমিও তাই চাচ্ছো ?

আমি বললাম তুমি যে ব্যবহার করছো তাতে তোমাকে ঝাটা পেটা করা দরকার।বেয়াদপ।

তুমি বেয়াদপ, তুমি চরম খারাপ, তুমি মুরব্বিদের সম্মান দিতে জানোনা।

ওর কথা শুনে আমার প্রচন্ড রাগ হতে লাগলো- আমি বললাম আবার মুরব্বি আসলো কোথা থেকে । আর আমি কোন মুরব্বিকে অসম্মান করেছি? 

ও বলল- আমার আব্বা-মা তোমাকে আসতে বলেছে তুমি আসোনি।

আমি ছুটি না পেলে আসবো কি করে ?

আর কারো স্বামীতো আর চাকরী করে না। শুধু তুমি করো।

আমি বললাম -তোমার আব্বাকে বলো তোমাকে ঢাকয় দিয়ে যাক। আমি তো ছুটি পাচ্ছিনা। তোমার আব্বা-মাকে নিয়ে আসো্। ওনাদের ঢাকা বেড়ানো হবে। তোমারও ঢাকায় আসা হব্

কেনা আমার আব্বা-মা দায় ঠেকছে?

তখন আমি বললাম -তাহলে আমি ও পারবো না তোমাকে নিয়ে আসতে। তোমার কথা ভালো লাগছে না ফোন রাখো।

জান্নাত বললো-তুমি আমার উপর মানষিক নির্যাত করছো। আমার উপর অত্যাচার করতেছো। এখন আমার প্রয়োজন শেষ হয়ে গেছে তাই না। একদমে কথাগুলো বললো

ওর এই কথা শোনার পর রাগে আমার মগজ টগবগ করে ফুটতে লাগলো। তারপরও নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম দেখো এটা কোন ধরনের কথা, আমি তো তোমার সাথে প্রেম করছি না। আমি তোমার স্বামী । আমার কাছে প্রয়োজন কিভাবে শেষ হবে। আর অত্যাচার , নির্যাতন কি বলো এগুলো ?

ও বললো নিজেকে প্রশ্ন করো্ 

আমি কোন কথা না বাড়িয়ে ফোনটা কেটে দিলাম। বুঝলাম  এই জাত বুঝের জাত না। 

আমি ফোন কেটে দেয়ার ২ মিনিট পরে আমার শ্বশুর ফোন করে আমাকে বলে তোমার কি হয়েছে ?

আমি সালাম দিয়ে শুধু বলেছি আমার কিছু হয়নি । উনি ফোন কেটে দিলেন।

সারারাত আর ঘুম হলোনা। সকালে অফিস। আমাকে কে বুঝবে।

Wednesday, January 20, 2021

হারানোর গল্প-২

আমার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সব ঝড় তুফান ও স্ট্রিম রোলারের ধাক্কা সহে উঠে দাড়ানোর চেষ্ট করে যাচ্ছি নিরন্তর।

মনে পড়ে যায় বাচ্চুর সেই গান- হাসতে দেখো গাইতে দেখো, অনেক কথায় মুখর আমায় দেখো.......

শুধু আমি জানি কোথায় কি হচ্ছে।

প্রতিদিন অন্তত ৫ থেকে ৬ ঘন্টা ফোনে কথা হয় ওর সাথে।

Monday, January 18, 2021

হারানোর গল্প ১

 


আমি জীবনে যা আশা করেছি তার কিছুই পেলাম না। বুক বয়স্ক মহিলাদের মতো শুকিয়ে কিসমিম হয়ে গেছে। মনে হয় দুই সন্তানের জননী। আমি সেই কথাটাই বুঝতে চেষ্টা করলাম । 

আমি বললাম তোমার কি  কোন শারিরিক সমস্য আছে ? 

ও বলল না

আমি বললাম তাহলে এমন কেন?

কোন কোন জটিল রোগব্যধি হয়েছিলো নাকি?

ও বলল না তাও হয়নি।

আমার জীবনের সবস্বপ্ন  দঃখের আকাশে উড়ে গেলো নিমিশে। বুকের ভিতরটা দুমড়ে মুচড়ে যেতে চাইলো। মনে মনে ভাবতে লালাম কুমারীর বিন্দুমাত্র চিহ্ন নেই।নিজের অজান্তেই চোখদিয়ে পানি গড়িয়ে পড়তে লাগলো।তারপর নিজেকে শান্তনা দিলাম এটা ভেবে যে আমার কপালে যা নাই তা আমি কি করে পাবো। আমার কপালে এটাই আছে। তা না হলে আল্লাহ আমাকে এমন পরীক্ষা কেন নেবেন। আরো ভাবলাম যে,  অন্য কোন ছেলের সাথে যদি এই মেয়ের বিয়ে হতো তাহলে আজই এভাবে ফেলে চলে যেতো। মেয়েটির কপালে ঘোর অনামিশা নেমে আসতো তাই হয়েতো আল্লাহ আমাকে এখানে পাঠিয়েছে। ইত্যাদি ইত্যাদি ভেবে নিজেকে শান্তনা দিলাম।

ওর সমস্যার কথা ওকে সব খুরে বললাম। 

ও বলল আমি তো এমনই।

আমি বললাম তুমি কি তোমার পার্থক্যটা বোঝো না , নাকি না বোঝার ভান করো ঠিক বুঝতে পারছি না।আমি কোনভাবেই বোঝাতে পারলাম না যে, ওর শারিরিক সমস্যা।আমি বললাম তোমার ২০বছর বয়স তুমি অনেক মেয়ের সাথে মিশিছ যারা তোমার বান্ধবী।মেয়েদের ভীতর অনেক খোলামেলা কথা হয় । তাতেও তুমি বুঝতে পারনি যে তোমার শারিরিক কিছু সমস্যা আছে। 

যাইহোক, কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে আমি আমার নিজের কষ্ট নিজের বুকে চাপা দিয়ে। ঢাকায় ফিরে এলাম। দুই তিন দিন পর আমার শ্বশুর ফোন করে আমাকে বলে তুমি আর আমার মেয়েকে ফোন করবা না। তুমি ওকে অসতি বলেছো।তুমি  এতো কিছু জানো কি করে নিশ্চই তোমার সমস্যা আছে। আমি তাকে বোঝাতে চেষ্ট করলাম যে, আমি তাকে অসতি বলিনি আমি বলেছি, তোমার যে সমস্যা সেটা কখনো ওমনি ওমনি হয় না। এটা কেউ বিশ্বাস করবে না। কে কার কথা বিশ্বাস করে। শুরু হলো তুলকালাম কান্ড।

আমার শ্বশুর সবাইকে ডেকে বাড়িতে জড়ো করলেন। আমি দফায় দফায় একেক জনকে ফোন করতে লালগাম। আর একেক জন আমাকে একেক ভাবে ভয়ভীত দিতে লাগলো। আমার বাবা মাকে ও ডাকা হলো।

আমি শুধু বলেছিলাম আপনারা যখন সব জেনেছেন তখন বাইরে  জানাজানি না করে আগে নিজেরা যাচাই করেন । আমি যদি ভূল বলে থাকি তবে আপনারা যে শাস্তি দিবেন আমি তাই মানবো।

কোন কথায় কাজ হচ্ছে না। আমার নানী শাশুড়ী বললো ডাক্তার ডাকা হয়েছে চেক করা হচেছ । আমার সাথে আমার বউকে একটিবার ও কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। তারা তাদের মতে আমার বউকে চালাচ্ছে। 

সবশেষে আমার শ্বশুর শাশুড়ি বলল এই সমস্যা কি করে হলো আমরা বুঝতে পারছি না। আমাদের সংসার জীবনে এমন সমস্যা কারো হয় তা জানতাম না।

আমার নানী শাশুড়ি বলল আমার ৪০ বছরের সংসার জীবনে কোনদিন এমন সমস্যার কথা শুনিনি।

আমি শুধু বলেছেলাম যে, আমি যদি মেয়ে হতাম আর এই সমস্যা যদি আমার হতো তাহলে আমার কোন কথা আপনারা শুনতেন না । ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতেন। আমি তো আপনাদের কথা শুনছি সবসমস্যা মেনেনিয়েছি। 

পরে শুনেছি আমার বউ বলেছে কোন ডাক্তার ডাকা হয়নি। এটা মিথ্যা কথা ছিল। ফোন কেড়ে নিয়ে গেছে আমার সাথে কথা বলতে দেয়া হয়নি। 

দুই দিন পর আমি আমার বিয়ে করা বউযের সাথে কথা বলেছি। এই দুই দিন আমাকে সবাই মিলে প্রচন্ড মানষিক যন্ত্রনায় রেখেছিলো।এটা আমার পাওনা বা কাম্য ছিলো না।

শুধু সন্তানের জন্য

 আমি চরম অসহায়। জীবন যুদ্ধে যার সাথে মাঠে নেমেছি  সেই আমার প্রতিদ্বন্দি। সে আর কেউ নয় আমার স্ত্রী। কেন বলছি কারন, আমার আয় করা টাকা থেকে বছরে...